পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন তাঁকে দেওয়া সিবিআইয়ের নোটিশ বাতিল করাতে। ওই নোটিশে সারদা চিট ফান্ড কাণ্ডের প্রমাণ লোপের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে তাঁকে। সিবিআই রাজীব কুমারকে তাদের সম্মুখীন হয়ে তদন্তে সাহায্য করতে বলেছে। প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার সিআইডিতে রয়েছেন। নির্বাচনের সময় তাঁকে সর্বোচ্চ পদ থেকে সরিয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন এবং নয়াদিল্লির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়। নির্বাচনের শেষে ওই বিধি শেষ হলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁরে আবার রাজ্যে ফিরিয়ে আনে।
গত সপ্তাহে গ্রেফতারি থেকে বাঁচতে তাঁর আইনি সুরক্ষা বাড়ানো নিয়ে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের আর্জি খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি অরুণ মিশ্রর বেঞ্চ তাঁকে বলে তিনি চাইলে কলকাতা হাইকোর্টের কাছে এ ব্যাপারে আবেদন করতে পারেন।
জানুয়ারিতে কেন্দ্র বনাম রাজ্য দ্বৈরথ শুরু হয়ে যায় যখন সিবিআই আধিকারিকদের একটি দল রাজীব কুমারের বাড়ি ঢুকতে গেলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। তাঁরা রাজীব কুমারকে ওই চিট ফান্ড কাণ্ডের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নিয়ে প্রশ্ন করতে গিয়েছিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শহরের কেন্দ্রে ধরনায় বসেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইকে রাজীব কুমারের উপরে কোনও কড়া পদক্ষেপ করায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পাশাপাশি রাজীবকেও সিবিআইয়ের সম্মুখীন হয়ে কোনও ‘নিরপেক্ষ কেন্দ্রে' তাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সহযোগিতা করতে বলা হয়। সিবিআই শিলংয়ে রাজীবকে জেরা করে পাঁচদিন ধরে।
২০১২ সালে পুলিশ কমিশনার নিযুক্ত হন রাজীব কুমার। সারদা কাণ্ডের তদন্তকারী দল সিট (স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম)-এর নেতৃত্ব দেন তিনি। গত মাসে সিবিআই সুপ্রিম কোর্টকরে বলে রাজীবকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি কারণ তিনি এই মামলায় কোনও সহযোগিতা করছেন না। বরং প্রশ্নের উত্তরে চতুরতা ও ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করছেন।
২৫০০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারির মূল কাণ্ডারী সারদা গ্রুপ লক্ষ গ্রাহককে বিরাট সুদের সঙ্গে বিনিয়োগের অর্থ ফেরত দেওয়ার ফাঁদে ফেলেছিল বলে জানায় সংস্থা।
একই অভিযোগে অভিযুক্ত সংস্থাগুলিকে নিয়েও তদন্ত শুরু হয়েছে। যেমন রোজ ভ্যালি, যাকে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি থেকে চালনা করা হত।