ফেসবুক জানাচ্ছে, তদন্তে দেখা গেছে যে এই কার্যকলাপটি ভারতীয় আইটি ফার্ম, সিলভার টাচের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাই পরিচালনা করত।
নিউ দিল্লি: জাতীয় নির্বাচনের আগে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক উচ্ছেদ অভিযান (clean-up drive by Facebook) শুরু করেছে। নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভুয়ো পেজ, গ্রুপ ও অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দিয়েছে ফেসবুক। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ৭০০! তবে মজার বিষয় হল, বিজেপি নয়, কংগ্রেসেরই ভুয়ো পেজ বা অ্যাকাউন্ট বেশি। ৭০০-র মধ্যে ৬৮৭ টি পেজ এবং অ্যাকাউন্ট তৈরির নেপথ্যে ছিলেন কংগ্রেসের আইটি সেলের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা। ১৫ টি পেজ, গ্রুপ এবং অ্যাকাউন্ট বিজেপি-র প্রচারের জন্য ব্যবহার হত বলে ফেসবুক একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ‘অনুপ্রেরণায়' কি হুগলি নদীতে প্রচারে বিজেপির রাহুল সিনহা!
কিন্তু আরও মজারও বিষয় হল, কংগ্রেসের ভুয়ো পেজের সংখ্যা বেশি হলেও সেই পেজে ফলোয়ার ছিল মাত্র ২ লাখ। কিন্তু বিজেপি সমর্থিত (pro BJP pages) ১ টি পেক, ১২ টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ১ টি গ্রুপ এবং ১ টি জালি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে অনুসারীর সংখ্যা ছিল ২৬ লাখ!
এছাড়াও, বিজেপির প্রচার করা ওই প্রোফাইলগুলিতে অর্থ ব্যয়ও হয়েছে সবথেকে বেশি! ২০১৪ সালের আগস্ট মাস থেকে ফেসবুক বিজ্ঞাপন দিতে কংগ্রেসের পেজ ব্যয় করেছে ৩৯,০০০ মার্কিন ডলার (২৭ লাখ টাকা)। বিজেপির এই খাতে খরচ ৭০,০০০ ডলার (প্রায় ৫০ লাখ টাকা)।
স্মার্ট সিটি গড়তে সরাসরি মেয়র নির্বাচন করবে কংগ্রেস; প্রতিশ্রুতি রাহুলের
ফেসবুক জানাচ্ছে, “যদিও এই কার্যকলাপের পিছনে থাকা ব্যক্তিরা তাদের পরিচয় গোপন করার চেষ্টা করেছিল, তবে আমাদের তদন্তে দেখা গেছে যে এই কার্যকলাপটি ভারতীয় আইটি ফার্ম, সিলভার টাচের (Indian IT firm, Silver Touch) সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাই পরিচালনা করত।” স্থানীয় সংবাদ এবং রাজনৈতিক অনুষ্ঠান সম্পর্কে প্রচার করার জন্য সঠিক এবং ভুয়ো অ্যাকাউন্ট উভয়ই ব্যবহার করতেন তাঁরা। সরকারি কর্মকাণ্ড নিয়ে, আসন্ন নির্বাচন, বিজেপি এবং কংগ্রেস সহ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের নানা তথ্য তুলে ধরা হত ওই পেজের মাধ্যমে।”
যদিও ২০১৭ সালে, এনডিটিভিকে করা একটি ইমেলে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য (Amit Malviya, the chief of the BJP's IT cell) সিলভার টাচের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগের তথ্য অস্বীকার করেছিলেন। কিন্তু এনডিটিভি তদন্ত করে দেখেছে গুজরাট সরকারের ১৭ টি বিভাগ এই সিলভার টাচের ক্লায়েন্ট, সরকারি ৪৬ টি ওয়েবসাইটও তাঁরাই দেখেন। সিলভার টাচ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ভারতের রাষ্ট্রপতির জন্য অ্যাপ্লিকেশনও বানিয়েছে।
ফেসবুক অবশ্য এই সব অ্যাকাউন্ট রাজনৈতিক বিষয়ের জন্য সরানো হয়নি বলেই জানিয়েছে। তাঁদের কথায় ‘অযথাযোগ্য আচরণ' (coordinated inauthentic behaviour) করে এই জাল অ্যাকাউন্টগুলি ভুল পথে মানুষকে চালিত করত। এই পদক্ষেপটি বিশেষ করে নির্বাচনের আগে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া (stop the spread of misinformation) থেকে সতর্ক করার ফেসবুকের প্রচেষ্টার অংশ ছিল।