গত ৭ সেপ্টেম্বর চাঁদের পৃষ্ঠের নরম জমিতে অবতরণের চেষ্টা করার সময় গ্রাউন্ড স্টেশনটির সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে Lander Vikram।
নয়া দিল্লি: ভারতীয় স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ISRO) চন্দ্রযান ২ (Chandrayaan 2)-এর ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা এখন মূলত সময়ের সঙ্গে লড়াইয়ে এসে দাঁড়িয়েছে। ইসরোকে ২১ সেপ্টেম্বরের আগে ল্যান্ডারের (Lander Vikram) সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে কারণ এর পরে চাঁদের এই অঞ্চলটি চন্দ্র রাত্রিতে প্রবেশ করবে, যার ফলে ল্যান্ডারের পক্ষে কাজের জন্য সূর্যের আলো পাওয়া সম্ভব হবে না। গত ৭ সেপ্টেম্বর চাঁদের পৃষ্ঠের নরম জমিতে অবতরণের চেষ্টা করার সময় গ্রাউন্ড স্টেশনটির সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে ল্যান্ডার বিক্রম। জানা গেছে, ২১ সেপ্টেম্বরের পরেই চাঁদের এই অঞ্চলটি চন্দ্র রাত্রিতে প্রবেশ করবে, যার ফলে বিক্রম ল্যান্ডারের পক্ষে কাজ করার জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। কেননা সেই সময় চাঁদে কোনও সূর্যের আলো পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে।
"আপনি কল্পনা করতে পারবেন না যে এই পরিস্থিতি ক্রমশই কতটা জটিল হয়ে উঠেছে, প্রতিটি সময় পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাটারির চার্জ কমে যাচ্ছে, এবং এরপর বিদ্যুৎ ও ল্যান্ডারটি পরিচালনার জন্য একটুও চার্জ অবশিষ্ট থাকবে না", সম্প্রতি ইসরোর এক আধিকারিকের বক্তব্য়ই তুলে ধরেছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
জেনে নিন নাসা কীভাবে চন্দ্রযানের ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে
রোভার প্রজ্ঞাকে নিয়ে বিক্রম ল্যান্ডার চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ২.১ কিলোমিটার উপরে চূড়ান্ত অবতরণকালে গত ৭ সেপ্টেম্বর গ্রাউন্ড স্টেশনটির সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে। সেই থেকে, বেঙ্গালুরুতে ইসরো টেলিমেট্রি, ট্র্যাকিং এবং কমান্ড নেটওয়ার্কের একটি দল মরিয়া হয়ে বিক্রম ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছে। কেননা এই ল্যান্ডারটির আয়ু হল একটি চন্দ্র দিবস, মানে পৃথিবীর ১৪ দিনের সমান।
বৃহস্পতিবার ইসরো জানায়, শিক্ষাবিদ ও ইসরো বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি জাতীয় পর্যায়ের কমিটি চন্দ্রযান ২-এর ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারার কারণ বিশ্লেষণ করছে।
ইসরো এর আগে চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে কিছু থার্মাল ইমেজ বা তাপীয় চিত্রের ভিত্তিতে ল্যান্ডারটি সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিল, তবে এর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় বারবার। "ল্যান্ডারটি সেখানে আস্তই রয়েছে, সেটি টুকরো টুকরো হয়ে যায়নি, কিন্তু এর যথেষ্ট ঝুঁকি আছে," সম্প্রতি এ কথা জানান ইসরোর এক আধিকারিক।
এর মধ্যেই আবার নাসার চান্দ্র অর্বিটার এলআরও বা লুনার রিকনাসান্স অর্বিটার গত ১৭ সেপ্টেম্বর চন্দ্রপৃষ্ঠের ছবি তুলতে সক্ষম হয়। চন্দ্রযান-২-এর ল্যান্ডার বিক্রমের যেখানে নামার কথা ছিল সেখানকার ছবি ওই অর্বিটার তুলেছে বলে জানায় নাসা। কিন্তু যে সময় অর্বিটার চন্দ্রপৃষ্ঠের ওই অঞ্চল দিয়ে যাচ্ছিল, তখন সেখানে সন্ধ্যা নামছিল। সেই কারণে বেশির ভাগ অঞ্চল ছায়ায় ঢাকা ছিল।ফলে ভাল করে সেই ছবিতে কিছু বোঝা যাচ্ছে না।
নাসার তোলা চাঁদের দক্ষিণ মেরুর ছবি থেকে খোঁজা হচ্ছে বিক্রমকে
১,০০০ কোটি টাকার চন্দ্রযান-২ মিশল সফল করে ইতিহাসের পাতায় নাম তোলার আশা ছিল ভারতের। ধীরে ধীরে চাঁদেরপৃষ্ঠে অবতরণ সফল হলে, আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিনের পরেই চতুর্থ দেশ হত ভারত। পাশাপাশি প্রথমবারের চেষ্টাতেই, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে প্রথম দেশ হত ভারত।