দেশজুড়ে বন্যা পরিস্তিতি সামলাতে দু’শোরও বেশি বিপর্যয় মোকাবিলা দল কাজ করছে। (ফাইল)
হাইলাইটস
- গত এক সপ্তাহে বন্যায় শতাধির মানুষের মৃত্যু হয়েছে
- মহারাষ্ট্র, কেরল ও কর্নাটকে বিপুল সংখ্যক মানুষ ঘরছাড়া
- অমিত শাহ বৃষ্টিতে জলমগ্ন কর্নাটকের বেলাগাভি জেলার পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান
নয়াদিল্লি:
সারা দেশে বন্যায় এখনও পর্যন্ত ১০০-র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়া লক্ষ লক্ষ মানুষ। মহারাষ্ট্র, কেরল ও কর্নাটকের বন্যা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। কেরল সরকার সেনা দলকে নির্দেশ দিয়েছে উদ্ধারকারী দল তৈরি করতে এবং আকাশপথে জলমগ্ন গ্রামগুলিতে খাবার পৌঁছে দিতে। এদিকে কর্নাটকে দু’লক্ষেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া। অন্তত ৩০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। শনিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা একথা জানিয়েছেন। দু’সপ্তাহ আগে বিএস ইয়েদুরাপ্পা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেও এখনও রাজ্যে কোনও মন্ত্রিসভা গঠিত হয়নি। মহারাষ্ট্রে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ছ’দিন ধরে উদ্ধারকার্য চালানোর পরেও এখনও বিপুল সংখ্যক মানুষ ঘরছাড়া কোলাপুর জেলায়। রাজ্যের মধ্যে এই জেলাটি অন্যতম বন্যাবিধ্বস্ত জেলা।
রইল এবিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১০ তথ্য:
শনিবার কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা জানিয়েছেন, রাজ্যের ১৭টি জেলার ১,০০০টি গ্রাম বন্যাবিধ্বস্ত। উত্তর কর্নাটকের কয়েকটি জেলা মিলিয়ে ৬,০০০ কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন কর্নাটকের বেলাগাভি জেলার পরিস্থিতি আকাশপথে খতিয়ে দেখেন।
১৫ আগস্ট পর্যন্ত বন্যাবিধ্বস্ত জেলাগুলির সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল বন্ধ থাকবে। প্রবল বৃষ্টিতে ট্রেন চলাচলও ব্যাহত হয়েছে। শনিবার সমস্ত কোঙ্কন রেলওয়ে ট্রেন বাতিল হয়েছে কারওয়ার অঞ্চলে ধস নামার পরে।
কেরলে গত তিন দিনে ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত বছর এই জেলায় বৃষ্টিতে মৃত্যুর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছিল। ১.৬৬ লক্ষ মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। রবিবার দুপুর বারোটায় কোচি বিমানবন্দর থেকে বিমান চলাচল শুরু হবে।
ওয়ানাদ, কান্নুর ও কাসারগদ এই তিন জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সেখানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ছ'টি জেলায় জারি হয়েছে অরেঞ্জ অ্যালার্ট।
রবিবার নিজের লোকসভা কেন্দ্র ওয়ানাদ পরিদর্শনে যাবেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। দু'দিন আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আর্জি জানান এলাকার বন্যাবিধ্বস্ত মানুষদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করতে। ওয়ানাদ ও মালাপ্পুরমে গত তিন দিন ধরে ধসের খবর মিলেছে। বহু মানুষ সেখানে আটক হয়ে আতঙ্কিত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
মহারাষ্ট্রে বন্যার প্রকোপে চার লক্ষেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া। তবে পশ্চিম মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে এটা আশা করা হচ্ছে, কেননা কর্নাটকের কৃষ্ণা নদীর উপরে আলমাট্টি বাঁধ থেকে পাঁচ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হবে।
শনিবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ জানিয়েছেন, ২০০৫ সালের ভয়ঙ্কর বন্যার সময় যা বৃষ্টি হয়েছিল তার দ্বিগুণেরও বেশি বৃষ্টি এবার হয়েছে। রাজ্যের ভয়াবহ বন্যার জন্য তিনি ‘নজিরবিহীন' বৃষ্টিকেই দায়ী করেন।
তিনি বলেন, ‘‘২০০৫ সালের বন্যার সময় সাঙ্গলিতে এক মাসে ২১৭ শতাংশ বৃষ্টি হয়েছিল একমাসে। এবার ন'দিনে বৃষ্টি হয়েছে ৭৫৮ শতাংশ। কোলাপুরে ২০০৫ সালে যেখানে ১৫৯ শতাংশ বৃষ্টি হয়েছিল, এবার সেখানে ৪৮০ শতাংশ বৃষ্টি হয়েছে গত ন'দিনে।''
মুম্বই ও বেঙ্গালুরুর মধ্যবর্তী ৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এখনও বন্ধ। কর্নাটকের গাড়িগুলিকে মুম্বই আসতে বলা হয়েছে সোলাপুর রুট দিয়ে।
Post a comment