জোর করে ‘জয় শ্রী রাম’ ও ‘জয় হনুমান’ বলানো হয় বলেও জানিয়েছে যুবকের পরিবার।
হাইলাইটস
- ২৪ বছরের যুবককে ‘চোর’ সন্দেহে পিটিয়ে মারল জনতা।
- মঙ্লবার গণপিটুনির পরে শনিবার মারা গেলেন ওই যুবক।
- তাঁকে দিয়ে জোর করে ‘জয় শ্রী রাম’ বলানোর অভিযোগ উঠেছে।
জামশেদপুর: মোটরসাইকেল (Motorcycle) চুরির দায়ে ধৃত এক ব্যক্তি গণপিটুনির (Mob lynching) ফলে শনিবার মারা গেলেন ঝাড়খণ্ডে (Jharkhand)। ২৪ বছরের শামস তবরেজকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আটক করে জনতা। তাঁকে একটি পোস্টে বেঁধে রেখে সাত ঘণ্টা ধরে প্রবল মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বুধবার সকালে তাঁকে পুলিশের কাছে তিনি সেখানেই অচৈতন্য হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। তাঁকে দিয়ে জোর করে ‘জয় শ্রী রাম' ও ‘জয় হনুমান' বলানো হয় বলেও জানিয়েছে তাঁর পরিবার। তাঁকে মারধরের ভিডিওটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। শামস তবরেজের আত্মীয়রা আরও অভিযোগ করেছেন, তবরেজের সঠিক চিকিৎসার পুলিশকে অনুরোধ করলেও লাভ হয়নি। ঝাড়খণ্ডের সেরাইকেলা-খারসাওন এবং পূর্ব সিংভূম জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ঘটা এই ঘটনায় মৃতের আত্মীয়রা দাবি জানিয়েছেন, পুলিশ ও গণপিটুনিতে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার।
সেতু ভেঙে খালের জলে চলন্ত ট্রেন; দুর্ঘটনায় মৃত ৪, আহত ১০০-রও বেশি
প্রাথমিক ভাবে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতাল থেকে সেরাইকেলা জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হতে থাকে। এরপর তাঁকে জেলার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তবরেজকে মৃত ঘোষণা করেন।
কলকাতার বুদ্ধিজীবিরা ভীতু আর সুবিধাবাদী: তোপ দিলীপ ঘোষের
তাঁর মৃত্যুর খবরে প্রাথমিক ভাবে বিশ্বাস করেনি তাঁর বাড়ির লোক। তাঁকে জামশেদপুরের বেসরকারি হাসাপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানেও জানিয়ে দেওয়া হয়, বেঁচে নেই তবরেজ।
পুলিশ জানিয়েছে, শামস তবরেজ অসুস্থ হওয়ার পরে তাঁকে টাটা মেইন হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনি সেখানেই মারা যান। এফআইআর দায়ের করেছে তবরেজের পরিবার। তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানাচ্ছে পুলিশ।
তবরেজের এক আত্মীয়ের দাবি, মঙ্গলবার বন্ধুদের সঙ্গে জামসেদপুর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তবরেজ। তখনই বাড়ি থেকে মাত্র ৫ কিমি দূরে থাকা অবস্থায় উন্মত্ত জনতার হাতে আক্রান্ত হন তিনি। ওই এলাকায় একটি মোটরসাইকেল চুরি হয়েছিল। এরপরই তবরেজকে ‘চোর' সন্দেহে মারধর করে এলাকার মানুষ, তেমনই দাবি তাঁর পরিবারের।
পরিবারের তরফ থেকে জেলে তাঁকে দেখতে গেলে লাঠি নিয়ে তাড়া করে পুলিশ। এমনকী, ওঁকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও কোনও খবর দেওয়া হয়নি।
হায়দরাবাদের রাজনীতিক তথা সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি এই ঘটনাকে নিয়ে টুইট করে জানান, ‘‘সব রকমের গণহত্যাই দেখা যাচ্ছে। প্রথমে এক মুসমিলকে গো-প্রেমীরা হত্যা করল। এরপর শুরু হল সবচেয়ে হাস্যকর অজুহাত, গোমাংস ভক্ষণ, চুরি, চোরাচালান ও লাভ জিহাদ। ‘সব কা বিকাশ'-এর জন্য আমরা ‘সন্দেহভাজন' হিসেবে খুন হয়ে যেতে পারি।''