দীর্ঘ রোগ ভোগের পর এইমসে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন অরুণ জেটলি।
নয়াদিল্লি: অরুণ জেটলি (Arun Jaitley)। বৃহৎ ও বর্ণময় রাজনৈতিক জীবন। ছাত্র রাজনীতি থেকে অটল বিহারী বাজপেয়ী (Atal Bihari Bajpayee) সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী। পরে প্রথম মোদি সরকারেও (Modi Govt) সামলেছেন অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব। শেষেরদিকে শারীরিক অসুস্থতার কারণে সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেন জেটলি। তবে, সচেতন নাগরিক হিসাবে বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিদিন ট্যুইট ও ব্লগ লিখতেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাতেই ধরা দিত তাঁর রাজনীতি না করতে পারার যন্ত্রণা। অরুণ জেটলি শেষ ট্যুইট করেছিলেন চলতি মাসের ৭ তারিখ। তুলসীদাস জয়ন্তীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। তার আগে ট্যুইটে জানান প্রাক্তন সহকর্মী সুষমা স্বরাজের (Sushma swaraj) মৃত্যুতে তিনি কতটা শোকস্তব্ধ। ৬ই অগস্ট মৃত্যু হয় প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের।
I Share Your Pain: জেটলির স্ত্রীর যন্ত্রণা ভাগ করে নিলেন সনিয়া
Shashi Tharoor's Tribute To Jaitley: শশী থারুরের স্মৃতিচারণায় অরুণ জেটলির সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ
জম্মু-কাশ্মীর (Jammu Kashmir) নিয়ে কেন্দ্রীয় পদক্ষেপের পরে গত ৬ই অগস্ট বেশ কয়েকটি ট্যুইট করেছিলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। উপত্যকা থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপের জন্য শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। ট্যুইটে তিনি লেখেন, ‘জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন মোদি ও অমিত শাহ। আমি ব্লগে বিশ্লেষণ করেছি এই পদক্ষেপের প্রভাব এবং জম্মু-কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের ব্যর্থ ইতিহাস।' তাঁর সংযোজন, ‘গত সাত দশকে এই ধারা উপত্যকাকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল মূল ভারত থেকে। বিচ্ছিন্ন মানসিকতার জন্ম দিয়েছিল। পাকিস্তান যা প্রবল উৎসাহের সঙ্গে কাজে লাগায়।
জেটলি লেখেন, ‘১৯৮৯-৯০ সালে কাশ্মীর সমস্যা হাতের বাইরে চলে যায়। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে যোগ হয় সন্ত্রাসবাদীরা। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের অত্যাচারশুরু হয়। নিজেদের জায়গা ছাড়তে বাধ্য হন স্থানীয় অদিবাসীরা।'
ট্যুইটে তিনি লেখেন, কিভাবে ৩৭০ দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।কাশ্মীর নিয়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ভাবনা কতটা সঠিক ছিল তা বিশ্লেষণ করেন জেটলি। সমালোচনা করেন পন্ডিতজীর কপ্লিত সমাধানের পথকে।
তিনি দেখানোর চেষ্টা করেন কাশ্মীরে কিভাবে পরিবর্তন হচ্ছে। উপত্যাকার বিভিন্ন অংশে মোদি সরকারের আমলে গত দশ মাসে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়নি। সেকানকার পরিস্থিতির জন্যদায়ী করেন নেহেরুকে। রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব ছিল বলে মনে করেন জেটলি।
কাশ্মীরে হিংসার জন্য কংগ্রেসকে বিঁধতে ছাড়েননি দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। কংগ্রেস সহ বেশ কয়েকটি বিরোধী দল ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর উপত্যাকায় যাওযার চেষ্টা করে। যা সেই দলের অতীত ধারা বলে মনে করিযে দেন অরুণ জেটলি।
কংগ্রেসকে ‘headless chicken' বলেও সমালোচনা করেন জেটলি। নতুন ভারত বদলে গিয়েছে। দেশের প্রাচীন দলটি তা বুঝতে পারছে না বলে মনে করেন তিনি।
২০১৩ সালের নভেম্বরে ট্যুইটারে যোগ দেন অরুণ জেটলি। সেখানে তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা ছিল ১৫.৩ লক্ষ। গত ছ'বছরে বিভিন্ন গুরুত্বুপূর্ণ বিষয়ে তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে তুলে ধরে আলোচনা করতেন, নিজের মতামত জানাতেন। ট্যুইটার খোলার এক ঘন্টার মধ্যেই তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৩,০০০।
সেই বছর ডিসেম্বরের ৫ তারিখ প্রথম ট্যুইট করে এই সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রহণযোগ্যতাকে তুলে ধরেন অরুণ জেটলি। পরেই তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী নাওযাজ শরিফকে কটাক্ষ করেছিলেন কাশ্মীরে যুদ্ধ নিয়ে মন্তব্যের প্রেক্ষিতে।
প্রয়াত অরুণ জেটলি। ট্যুইটারে তাঁর অনুগামীরা নানা বষিষয়ে জেটলির প্রাজ্ঞ মতামতের অবাব বোধ করবেন।