আটক করা হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লাকে. (ফাইল)
হাইলাইটস
- জন নিরাপত্তা আইনে বিচার ছাড়াই দুবছর আটকে রাখা যায়
- ফারুক আব্দুল্লার মুক্তির আবেদন করেছেন মামলাকারী ভাইকো
- এই রাজনীতিবিদ "বেসরকারিভাবে" গৃহবন্দি ছিলেন
নয়াদিল্লি: জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লাকে (Farooq Abdullah) “বেআইনিভাবে আটক” করার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছে সুপ্রিম কোর্ট, ঠিক তার একদিন পরেই, জন নিরাপত্তা আইনে (Public Safety Act) আটক করা হল তাঁকে..এই আইনে অনুযায়ী, কোনও বিচার ছাড়াই কাউকে দুবছর পর্যন্ত আটক করে রাখা যায়। আইন অনুযায়ী, এই প্রবীণ নেতার বিরুদ্ধে “সরকারি নির্দেশ বিঘ্নিত” করার অভিযোগ আনা হয়েছে, এই অভিযোগে, তাঁকে তিনমাস আটক করে রাখা হবে। এখনও পর্যন্ত শ্রীনগরে বেসরকারিভাবে গৃহবন্দিই ছিলেন ফারুক আব্দুল্লা। গতমাসে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বা সেরাজ্যের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারকে কেন্দ্র করে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লা, মেহবুবা মুফতিসহ শতাধিক রাজনৈতিক নেতাকে গৃহবন্দি করা হয়। প্রায় একমাসেরও বেশী সময় পরে, ফারুক আব্দু্লার আটক করা সরকারিভাবে দেখানো হয়।
৬ অগস্ট লোকসভায় ফারুক আবদুল্লার অনুপস্থিতির বিষয়টি তুলে ধরেন এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, “তাঁকে আটকও করা হয়নি বা গ্রেফতারও করা হয়নি। তাঁর নিজের ইচ্ছেয় তিনি বাড়িতে রয়েছেন”।
এই প্রথমবার জননিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করা হল মূলস্বোতের কোনও রাজনৈতিক নেতার ওপর, বিশেষ করে একজন সাংসদ তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ওপর, বিশেষ করে জঙ্গি, বিচ্ছিন্নতাবাদী বা পাথর-ছোঁড়ার ঘটনায় জড়ালে এই আইন জারি করা হয়।
পদক্ষেপের সময় নিয়ে প্রশ্নে, সূত্রের খবর, সমালোচনা করে, বারবার সংবাদমাধ্যমে যাচ্ছেন ফারুক আবদুল্লা, ফলে তা নিয়ে চিন্তা থাকতে পারে, আগামী মাসে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভা, ফলে তার আগে বিষয়টি সরকারের কাছে নেতিবাচক হতে পারে।
জম্মু ও কাশ্মীর এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিশ পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট, চেন্নাইয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি যাতে পারেন, তারজন্য মুক্তির আর্জি জানিয়ে দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে নোটিশ পাঠায় শীর্ষ আদালত।
জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় এখনও নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে
তামিলনাড়ুর প্রথম মুখ্যমন্ত্রী সিএম আন্নাদুরাইয়ের জন্মবার্ষিকিতে এমডিএমকে-এর একটি অনুষ্ঠানে ফারুক আব্দুল্লা যাতে যোগ দিতে পারেন, তারজন্য তাঁকে মুক্তি দেওয়া আবশ্যক বলে মন্তব্য করেন ভাইকো। মামলার আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, “তাঁর সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করে কোনও আইনের অনুমতি ছাড়াই, তাঁকে বেআইনিভাবে আটক করা হয়েছে”।
ভাইকো আরওও বলেন, “দায়িত্বশীলদের (সরকার)পদক্ষেপ পুরোপুরিই বেআইনি এবং ইচ্ছাধীন, এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা, জীবনের সুরক্ষার বিরোধী, গ্রেফতারি ও আটক হওয়া থেকে সুরক্ষার অধিকার, বক্তব্য এবং মত প্রকাশের অধিকার, যা গণতান্ত্রিক দেশের ভিত্তি, তার বিরোধী”।
ভাইকোর আবেদনের বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় সরকার বলে, ভাইকো “ফারুক আব্দুল্লার আত্মীয় নন”, এবং জম্মু ও কাশ্মীরের এই নেতার মুক্তির আবেদন “আইনি পদ্ধতিক অপমান”।
কেন্দ্রীয় সরকার ও জম্মু ও কাশ্মীর সরকারকে নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এবং বিচারপতি এসএ বোবদে, ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতিরা।
ফারুক আব্দুল্লার বিরুদ্ধে জন নিরাপত্তা আইন জারি করার তীব্র নিন্দা করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ।