Galwan Valley: সোমবার ভারত-চিন সীমান্তে ফের উত্তেজনা তৈরি হয়
হাইলাইটস
- গালওয়ান উপত্যকায় সোমবার ওই সংঘর্ষ ঘটে
- সংঘর্ষে ভারত ও চিন দুই তরফে বেশ কিছু ক্ষতি হয়েছে
- এখনও পর্যন্ত চিনা সেনার হামলায় মারা গেছেন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান
নয়া দিল্লি: লাদাখে (Ladakh) চিনা সেনার (India-China Border Dispute) হামলার ঘটনায় আরও ৪ ভারতীয় সেনার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। সোমবারের ওই হামলায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২০ জন ভারতীয় (India) সেনার। গালওয়ান উপত্যকায় (Galwan Valley) ভারতীয় সেনার সঙ্গে চিনা (China) সেনার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে সীমান্ত এলাকায়। বুধবার সকালে সেনাবাহিনীর একটি বিবৃতিতে প্রথমে একজন কর্নেল ও দুই ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয় এবং "উভয় পক্ষেই বেশ কিছু সেনা হতাহত" হয়েছে একথা বলা হয়। পরে আবার নতুন এক বিবৃতিতে জানানো হয় যে, আশঙ্কাজনক আরও ১৭ জনেরও মৃত্যু হয়েছে।
Updates: লাদাখে ভারত-চিন সংঘর্ষে হতাহত ভারতের ২০ জন, চিনের ৪৩ জন: এএনআই
এদিকে সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে যে, ক্ষতি এড়াতে পারেনি চিনও। ওই সংঘর্ষে সেদেশে হতাহত কমপক্ষে ৪৩ জন জওয়ান। যদিও চিনের সেনা সূত্র থেকে এব্যাপারে কোনও নিশ্চিত বিবৃতি মেলেনি।
ভারতের তরফ থেকে এই সংঘর্ষের জন্যে চিনকেই দায়ী করা হয়েছে। "চিনা সেনারা একতরফাভাবে স্থিতাবস্থা নষ্ট করার চেষ্টা করেছে", বলা হয় এদেশের তরফে। ওদিকে চিন আবার ভারতের এই দাবি খণ্ডন করে পাল্টা দাবি করেছে যে ভারতীয় সেনারাই নাকি সীমান্ত অতিক্রম করে ওই দেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে।
চিন সীমান্তে নিহত সেনা জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
একটি ভারতীয় সেনা সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, এই ঘটনায় কোনও গুলি চালাচালি হয়নি। বরং সেনাদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারিতেই ওই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। দুই দেশের সেনাই একে অপরকে লক্ষ্য করে ঘুষি মারে ও পাথর ছোঁড়ে। সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত চলা ওই লড়াইয়ে চিনা সেনারা রড দিয়েও মারপিট করে বলে জানা গেছে।
ভারত এবং চিনের মধ্যে প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা রয়েছে। ইদানিং সেই সীমান্ত এলাকাতেই দুই দেশের সেনার মধ্যে চাপানউতোর তৈরি হয়। সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, গত প্রায় ৪৫ বছর পর চিন সীমান্তের এই ঘটনায় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানরা নিহত হয়েছেন। এর আগে ১৯৭৫ সালে অরুণাচল প্রদেশের তুলুং লাতে এমন একটি সংঘর্ষে ৪ ভারতীয় সেনা জওয়ান প্রাণ হারিয়েছিলেন।
গত ৯ মে, একটি ভারতীয় টহলদারী দলের কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জন কর্মীর সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে চিনা সেনারা। ভারতের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, ভারত-চিন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা করে চিনের সেনাবাহিনী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে তখনই জানানো হয় যে মোটরচালিত নৌকাগুলির সাহায্যে নাকি পানগং হ্রদে ঘোরাফেরা করছে তাঁরা।
তারপরেই দুই দেশের পক্ষ থেকে সমাধানের লক্ষ্যে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের পর একটি সরকারি সূত্র থেকে জানা যায় যে, পূর্ব ও লাদাখের কিছু অংশে ভারত ও চিনা সেনারা পারস্পরিক নিস্পত্তির পথে হেঁটেছে। ওই সূত্র জানায়, একটি "উল্লেখযোগ্য" সমাধানের লক্ষ্যে চিনা সেনা ৩ কিলোমিটার পিছু হেঁটেছে। প্রত্যুত্তরে ভারতের তরফ থেকে কিছু সেনাকে ফেরানো হয়েছে।
উত্তেজনা প্রশমিত করার লক্ষ্যে ভারত-চিনের যে বৈঠক হয় তাঁর একদিন পরেই ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক জানায় যে, বৈঠকটি "সৌহার্দ্যপূর্ণ ও ইতিবাচক পরিবেশে" হয়েছে এবং উভয় পক্ষই একমত হয়েছে যে "প্রাথমিক সমাধান" করার লক্ষ্যে দুই দেশই আরও চেষ্টা করবে।
চিনের বিদেশমন্ত্রকও এক বিবৃতিতে জানায়, দু'দেশই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ (এলএসি) রেখা ধরে শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে আলোচনা করেছে এবং সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু তারপরেই নতুন করে এই অশান্তি দানা বেঁধেছে, যা ধীরে ধীরে আরও গুরুতর আকার নিচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে।