Chandrayaan 2: ফলের দোকান থেকে ইসরো প্রধান কে শিভান
কে শিভান (Dr K Sivan) বা ইসরো (ISRO) প্রধান বিজ্ঞানী শিভান। এক ডাকে বিশ্ব চেনে। তাঁরই নেতৃত্বেই চন্দ্র অভিযানে গেছিল চন্দ্রযান ২। সফল অবতরণ ঘটলে আজ তিনি দেশের ইতিহাস নতুন করে লিখতেন। ইতিহাসের পাতায় তাঁর নাম লেখা থাকত সোনার অক্ষরে। সেই বিজ্ঞানীর ব্যক্তি জীবন কেমন? অতীত বলছে, এক প্রান্তিক কৃষক পরিবারে জন্ম শিভানের। এতটাই হতদরিত্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন যে, কলেজে যাওয়ার আগে পর্যন্ত চটি-জুতো পর্যন্ত ছিল না তাঁর। খালি পায়ে, আধপেটা খেয়ে স্কুল করতেন।
“কম,কৃতিত্ব নয়, দেশ আপনাদের জন্য গর্বিত”, বললেন প্রধানমন্ত্রী
এখানেই শেষ নয়। জুতোর পাশাপাশি স্কুল-কলেজে পরে যাওয়ার ট্রাউজার্সও ছিল না। তাই বেশির ভাগ সময় তাঁকে ধুতি পরতে হত। কিন্তু এসবই তাঁর কাছে তুচ্ছ ছিল। পোশাকের দৈন্যতা, ভরপেট খাবারের অভাব, কিছুই তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। কারণ, তাঁর মনে ছিল অসম সাহস। স্বপ্ন দেখতেন জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার।
NDTV-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শিভানের অমূল্য মন্তব্য, 'কোনোদিন কী পেলাম তাই নিয়ে মাথা ঘামাইনি। কী পেতে পারি আগামীদিনে? সব সময় এই চিন্তাই তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াত। তাই স্কুলের পড়ে বাবার সঙ্গে ক্ষেতে চাষের কাজে হাত লাগাতে কোনোদিন লজ্জা করেনি। বিরক্তও হইনি। কৃষিকাজের পাশাপাশি সংসার চালাতে বাবার ফলের দোকান ছিল। সেখানেও বসতাম আমের মরশুমে। বাবাকে সাহায্য করতে। আমি গেলে পয়সা খরচ করে বাবাকে আর আলাদা কাজের লোক রাখতে হত না। যিনি বাবাকে ব্যবসায়ে সাহায্য করবেন।'
চন্দ্রায়ণ-২-এর ল্যান্ডার সম্পর্কে কী বললেন ইসরো প্রধান
কলেজে পড়ার সময়েও শিভানের এই রুটিনের কোনও বদল ঘটেনি।
নিজের ফেলে আসা দিনের কথা বলতে গিয়ে শিভান আরও জানান, 'সবাই ভালো কলেজ দেখে ভর্তি হয়। আমার প্রথম এবং একমাত্র শর্ত ছিল, যে কলেজ বাড়ির কাছে হবে সেটায় ভর্তি হব। যাতে কলেজ থেকে ফিরে বাবার দোকানে বসতে পারি। প্রথম জুতো পায়ে দিই মাদ্রাজ ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে ভর্তি হওয়ার পর। তার আগে খালি পায়েই স্কুলে, বাবার দোকানে যাতায়াত করতাম। তবে মা-বাবা তারই মধ্যে তিনবেলা ভরপেট খেতে দেওয়ার চেষ্টা করতেন।'
ISRO এর জন্য গর্বিত হোন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাল্টা নির্মলা সীতারামনের
এটা যদি ডা. শিভানের জীবনযুদ্ধের গৌরচন্দ্রিকা হয় তাহলে বাকিটুকু শুনে নিন। বিজ্ঞানীর বরাবরের স্বপ্ন ছিল, তিনি ইঞ্জিনিয়ার হবেন। কিন্তু বাবার তো এত পয়সা নেই! তাই বাবার কথায় ভর্তি হতে হল সায়েন্স কলেজে। বাবার মন ফেরাতে একসপ্তাহ অভিমান করে খাওয়াদাওয়া বন্ধ রেখেছিলেন। শেষে বদলে গেল তাঁর মন। তিনি হাসিমুখে পড়া শুরু করলেন বিএসসি অঙ্ক নিয়ে। যে বাবা ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে দেননি পয়সার অভাবে, ছেলে স্নাতক হওয়ার পর সেই বাবা-ই জমি বিক্রি করে ডা, শিভানকে ভর্তি করে দেন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে।
শেষ পর্যন্ত আর আবেগ ধরে রাখা গেল না, আলিঙ্গনের সাথে সাথে চোখে এল জল
এদিকে এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পরেও ন্যাল আর হ্যাল ছাড়া কোথাও চাকরি নেই! সেখানেও প্রচণ্ড প্রতিযোগিতা। শেষএ আইআইএসসি পাশের পর চাকরি পান ইসরো-তে। যদিও ডা, শিভানের ইচ্ছে ছিল, কোনও স্যাটেলাইট সেন্টারে কাজ করবেন। চন্দ্রযান ২-এর ব্যর্থতার পর সেই বিজ্ঞানীর ভেজা চোখ মুতে মুছতে আপশোস, যতবারই জীবনের থেকে কিছু চেয়েছেন, জীবন তাঁকে খালি হাতেই ফিরিয়েছে!