গত মাসেই থমকে যায় জেট এয়ারওয়েজের সব উড়ান
নয়াদিল্লি: দিন দু'য়েক আগে জেট এয়ারওয়েজের (Jet Airways) সভাপতি নরেশ গয়াল ও তাঁর স্ত্রী অনিতা গয়ালকে নাটকীয় ভাবে দেশের বাইরে যাওয়া থেকে আটকানো হয় বিমান থামিয়ে। NDTV জানতে পেরেছে দু'টি পৃথক তদন্ত শুরু হয়েছে সঙ্কটাপন্ন এয়ারলাইনের প্রাক্তন অগ্রণীদের নিয়ে— এই দম্পতি তাঁদের অন্যতম। কোনও রকম আর্থিক বেনিয়ম সংস্থা বন্ধ হওয়ার বছর কয়েকের মধ্যে হয়েছে কি না সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। কর্পোরেট বিনিয়োগ মন্ত্রকের অধীনস্থ সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন (SFIO) ও অর্থ মন্ত্রকের অধীনস্থ ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ED) এই নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। এসএইআইও খতিয়ে দেখছে জেট এয়ারওয়েজের প্রাক্তন অগ্রণীরা কেউ তহবিল পাচারের সঙ্গে যুক্ত কিনা। এদিকে সূত্র অনুসারে জানা যাচ্ছে, ইডি প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেছে আবু ধাবির এতিহাদ এয়ারওয়েজ ১৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে জেট প্রিভিলেজ প্রাইভেট লিমিটেডের ৫০.১ শতাংশ স্টেক ক্রয় করতে— এই অভিযোগের উপরে। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে স্থাপিত এই সংস্থা জেট এয়ারওয়েজের এক সম্পূরক সংস্থা। সূত্র অনুসারে, দু'টি ক্ষেত্রেই প্রাথমিক ভাবে নরেশ গয়ালের ভূমিকা অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে।
ইডি-র এক সিনিয়র আধিকারিক NDTV-কে জানাচ্ছেন, ‘‘এখনও ECIR (এনফোর্সমেন্ট কেস ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট, যা ফৌজদারি মামলায় এফআইআর করার সমতুল) দায়ের করা হয়নি এই বিষয়ে। কেবল প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।''
‘‘অন্য ইস্যুর মতো, FDI (ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট) বিধিভঙ্গের সঙ্গে সম্পর্কিত কেসে ইডির আসল অধিকার রয়েছে এবং স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত শুরু করার অধিকার রয়েছে। অন্য সংস্থায় দায়ের করা এফআইআর-এর প্রয়োজন নেই।'' তিনি আৱও বলেন।
গত শনিবার নরেশ গয়াল ও তাঁর স্ত্রী অনিতা গয়ালকে দেশ ছাড়ার সময়ে আটকানো হয় মুম্বই বিমানবন্দরে। দুবাই হয়ে লন্ডন অভিমুখে যাত্রা করা বিমানটিতে ততক্ষণে তাঁরা উঠেও পড়েছিলেন।
সূত্র অনুসারে জানা যাচ্ছে, ইমিগ্রেশনের সময় গয়াল দম্পতিকে আটকানো হয়নি, তার কারণ এসএফআইও-র জারি করা লুক আউট সার্কুলার নোটিশে সমস্ত বন্দর ও বিমান বন্দরগুলিকে বলা হয়েছিল তাঁদের সে ব্যাপারে কেবল অবহিত করতে। সংস্থার কাছে ব্যুরো অফ ইমিগ্রেশন খবর দিতেই দ্রুত এসএফআইও সেই নোটিশে বদল আনে। বলা হয় ‘দেশ ছাড়া থেকে আটকানো হোক অভিযুক্তকে।'
কিন্তু ততক্ষণে গয়ালদের বিমান ট্যাক্সিওয়েতে পৌঁছে গিয়েছে। এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রকরা কোনও মতে বিমানটিকে থামিয়ে খবর দেয়, যাত্রী ওই দম্পতির বিরুদ্ধে নোটিশ জারি হয়েছে।
ভারতের অন্যতম বড় বিমান সংস্থা জেট এয়ারওয়েজ গত মাসেই সমস্ত ফ্লাইট বন্ধ করতে বাধ্য হয় অর্থের জোগান না থাকায় এবং তহবিল খালি হয়ে যাওয়ায়। কম খরচের প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে প্রভূত ক্ষতির ফলে বিকল হয়ে পড়ে সংস্থাটি। ১.২ বিলিয়ন ডলার বা ১২০ কোটি টাকার দেনার দায়ে জর্জরিত সংস্থাটি থেকে মার্চ মাসে বেরিয়ে আসেন গয়াল দম্পতি।
সম্পূর্ণ আর্থিক ভাঙনের হিসেব দিতে গিয়ে জেট এয়ারওয়েজ জানায় সমস্ত কিছুই নিয়ম মেনে করা হয়েছে। নরেশ ও অনিতা গয়াল সেই রিপোর্ট নিয়ে কোনও কথা তখন বলেননি।