৭৪ বছর আগে তলিয়ে যাওয়া নৌকার অবশিষ্টাংশ সম্পর্কে কিছুটা পরিষ্কার ছবি পেতে একটি জটিল লেজার স্ক্যান আয়োজিত হয়
১৯৪২ সালে উত্তর ক্যারোলিনায় সমুদ্রের ৭০০ ফুট গভীরে পড়ে রয়েছে ভুতুড়ে এক জাহাজ। ভেতরে সলিল সমাধিতে শুয়ে হেইনিক এবং ৪৪ জন নাবিক। আর ঠিক কী কী রয়েছে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ওই জাহাজে? জাতীয় মহাসাগরীয় ও বায়ুমণ্ডলীয় (এনওএএ) লেজার সার্ভে এখন হাই-রেজোলিউশনে ডুবে যাওয়া ওই নৌকাটির ছবি প্রকাশ করেছে।
এনওএএ' র এক প্রত্নতত্ত্ববিদ জো হয়েট বলেন, "এটা আমার দেখা সমুদ্রের তলায় থাকা কোনও ইউ-নৌকার সেরা এবং বিশদ ছবি। এটি একটি চমত্কার অত্যাশ্চর্য ছবি.. আমার কাছে এটি সম্ভবত একটি নতুন যুগের শুরু।"
তিনি আরও বলেন, "এখন আমরা সামুদ্রিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাথে এমন এক পর্যায়ে রয়েছি যেখানে আমরা এমন কিছু উপায়ে সেই জিনিস দেখতে পারি যা আমরা আগে পারিনি। আমাদের লক্ষ্য এই অজানা গল্পগুলিকে সমুদ্রের তলা থেকে তুলে ভূপৃষ্ঠে আনা”।
সার্ভেটি দুই গ্রীষ্মকাল আগে শুরু হয়। এনওএএ এবং অন্যান্য সংস্থাগুলির প্রযুক্তিবিদ ও সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকরা ওক্রাকোক, এন.সি. থেকে ৩৫ মাইল দূরে এই ডুবে যাওয়া নৌকার ধ্বংসাবশেষের পরিষ্কার ছবি পাওয়ার জন্য কাজ করছিলেন।
অন্যান্য আরও বিষয়ের মধ্যে ৭৪ বছর আগে তলিয়ে যাওয়া নৌকার অবশিষ্টাংশ সম্পর্কে কিছুটা পরিষ্কার ছবি পেতে এবং বেশ কিছু জড়িত প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য একটি জটিল লেজার স্ক্যানও আয়োজিত হয়।
স্ক্যানে ধরা পড়েছে যে ৭৪ বছর পরেও রহস্যজনকভাবে অক্ষত রয়েছে একটি সাবমেরিন। হয়েট বলেন, কোনও যুদ্ধের যে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে জাহাজটি বা নীচে কিছুর ধাক্কা খেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। এটা একেবারেই অনিয়ন্ত্রিত একটি ডুবে যাওয়ার ঘটনা।
কিন্তু জাহাজের ক্রু দের বেরিয়ে যাওয়ারও কোন ইঙ্গিত নেই ছবিতে। হয়েট বলেন, ইউ-নৌকায় কিছু অব্যাহতি যন্ত্রপাতি আছে। "আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে যে সব হ্যাচ সিল করা হয়েছে। সুতরাং সমগ্র ক্রু সদস্যরা জাহাজেই ছিল," বলেন তিনি।
ছবিটির জন্য উজ্জ্বল সবুজ এবং নীল রং বেছে নেওয়া হয়েছে যাতে রঙের বৈপরীত্য এবং স্বচ্ছতা দেখানো যায়, জানিয়েছেন এনওএএ'র অফশোর মনিটর ন্যাশনাল মেরিন স্যানচুয়ারির সুপারভাইজার ডেভিড ডব্লিউ অ্যালবার্গ।
ইউ -৫৭৬ এক প্রকার VIIC জার্মান সাববেরিন। ইউ -৫৭৬ জার্মানির সম্পত্তি হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে বলে এনওএএ জানিয়েছে। এই সাবমেরিনটি ২০১৪ সালে প্রথম ওই স্থানে দেখা গেলেও ২০১৬ সালের আগে পর্যন্ত তা নিয়ে কাজ হয়নি। সাবমেরিনটি ১৯৪২ সালের ১৫ জুলাই তলিয়ে যায়।
সেই দিনে বিকেলে, ক্যাপিটেনলুট্যান্ট হেইনিকে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি এমন এক দুর্বল, দুর্ভাগ্যজনক নৌকায় ছিলেন যা প্রায় এক বা দু'দিন আগে বিমানের আক্রমণে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এই আক্রমণে একটি ব্যালাস্ট ট্যাঙ্ক নষ্ট হয়ে যায় এবং নৌকোর ভেসে থাকা বা ডুবে থাকার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।
হেইনিক (২৯), প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত হন এমন একজন জার্মান নৌবাহিনী অফিসারের ছেলে। তিনি একজন অভিজ্ঞ, পর্যবেক্ষণকারী কমান্ডার যিনি প্রায় এক দশক ধরে নৌবাহিনীতে কাজ করছিলেন। ১৯৪২ সালের ১৬ জুন ফ্রান্সের সেন্ট নাজাইরে থেকে বিশাল কংক্রিট ইউ-নৌকায় ২৯ দিনের জন্য সমুদ্রে ছিলেন।
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)