মনে করা হচ্ছে এখনও পর্যন্ত গত অক্টোবরেই শেষ খুনটি করেছেন Andhra Cyanide Killer
হায়দরাবাদ: ভগবানের প্রসাদ বলে লোকজনকে কিছু একটু খাইয়ে দিয়ে এখনও পর্যন্ত তিন মহিলা সহ দশজনকে খুন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে অন্ধ্রপ্রদেশে (Andhra Pradesh) নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কাজ করা এক ব্যক্তির (V Simhadri) বিরুদ্ধে । মনে করা হচ্ছে যে ভগবানের প্রসাদ বলে আসলে খাবারের মধ্যে সায়ানাইড বিষ মিশিয়ে মানুষ খুন করতেন ওই সিরিয়াল কিলার (Andhra Cyanide Killer)। পুলিশ জানিয়েছে, সিরিয়াল কিলার ভি সিমাহাদ্রির সর্বশেষ শিকার পশ্চিম গোদাবরী জেলার এক ব্যক্তি, অক্টোবরেই খুন হন ওই ব্যক্তি। মনে করা হচ্ছে সায়ানাইড যুক্ত প্রসাদ খাইয়ে ওই ব্যক্তিকে খুন করে তাঁর বাড়ি থেকে সোনা এবং নগদ টাকা-পয়সা নিয়ে চম্পট দেন ওই ঠাণ্ডা মাথার খুনি। পরে যখন খুন হওয়া ব্যক্তির আশেপাশের লোক ঘটনার বিষয়ে জানতে পারেন ততক্ষণে নাগালের বাইরে চলে গেছেন ভি সিমাহাদ্রি, যাঁকে অনেকে সায়ানাইড কিলার হিসাবেও ডাকছেন আজকাল।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে ভেবেছিল যে মৃত ব্যক্তির হয় ব্রেন স্ট্রোক হয়েছিল, নয়তো বা হৃদরোগে মারা গেছিলেন তিনি। কেননা তাঁর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। প্রবীণ পুলিশ অফিসার নবদীপ সিং এনডিটিভিকে জানান, ময়না তদন্তে এখনও সায়ানাইডের বিষ থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
৫ মহিলাকে সাইকেলের চেন, লোহার রড দিয়ে মেরে ধৃত বাংলার সিরিয়াল কিলার: পুলিশ
কল রেকর্ডগুলি খতিয়ে দেখে বোঝা গেছে যে মৃত্যুর আগে তিনি ফোনে বেশ কিছুক্ষণ ভি সিমাহাদ্রির সঙ্গে কথাবার্তা বলেছিলেন।
পুলিশ প্রায় ২২০ টি ফোনকলের তথ্য পরীক্ষা করে দেখে নিশ্চিত হয়েছে, যে আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে সিমাহাদ্রি কাজ করতেন সেখানে ১০ টি সন্দেহজনক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সিমাহাদ্রি এলুরুতে একটি অ্যাপার্টমেন্টে নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কাজ করতেন।
এলুরু ও রাজমন্দ্রিতে চারটি অস্বাভাবিক খুনের ঘটনার কথা নথিভুক্ত হয়েছে. যদিও অন্য ছয়জনের মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পুলিশে কোনও অভিযোগ করা হয়নি।
সিমাহাদ্রি নিজেকে একজন অতিপ্রাকৃত শক্তির অধিকারী মানুষ বলে দেখানোর চেষ্টা করতেন সবাইকে।
সিমাহাদ্রি ও অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে যে ওই সিরিয়াল কিলার প্রথমে তাঁর শিকারকে বোকা বানাতেন এই বলে যে তাঁর কাছে এমন একটি মুদ্রা আছে যা কোনও ব্য়ক্তির ঘরে থাকলে সমৃদ্ধির জোয়ার আসবে। তবে ওই মুদ্রা পেতে হলে তাঁকে সোনাদানা ও টাকা দিতে হবে। লোকজনকে বোকা বানিয়ে তাঁদের কাছ থেকে ওই টাকা ও গয়না হাতিয়ে নিয়ে তিনি তাঁদের একটি মুদ্রা সহ প্রসাদ দিতেন যাতে সায়ানাইড মেশানো থাকতো। আর ওই বিষ মেশানো প্রসাদ খাওয়ার পরেই মৃত্য়ুর কোলে ঢলে পড়তো তাঁর শিকার।
প্রেমিকের সঙ্গে মিলে মা'কে খুন করে তিন দিন বাড়িতেই রেখে দিল মেয়ে
এক পুলিশ অফিসার বলেন, "তাঁর শিকারের মধ্যে নিজেরই এক ঠাকুমা ও খুড়তুতো ভাইও ছিল। তিনি বিজয়ওয়াড়ায় তাঁর এক বন্ধুর নিকেলের কারখানা থেকে সায়ানাইড সংগ্রহ করেছিলেন, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে গত অক্টোবর পর্যন্ত এখনও ওই সায়ানাইড কিলারের দেওয়া প্রসাদ খেয়ে দশজনের মৃত্যু হয়েছে"।
ওই সিরিয়াল কিলারের কাছ থেকে প্রায় ১.৬ লক্ষ টাকা নগদ এবং ২৬ টি সোনার মুদ্রা পাওয়া গেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে এর আগে খুন হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৩ থেকে ৪ জনের মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়, এবার ওই মৃতদেহগুলি মাটি খুঁড়ে বের করে সেগুলির ময়নাতদন্ত করতে চায় পুলিশ, যাতে সায়ানাইডের অস্তিত্ব আছে কিনা খতিয়ে দেখা হবে।