নিউ দিল্লি: সৌন্দর্য্য সম্পূর্ণ হয় তবেই যদি সেখানে মিশে থাকে ব্যক্তিত্ব, সংবেদনশীলতা ও দৃপ্ততা। ‘বলিউডের মেরিলিন মনরো' অভিনেত্রী মধুবালা ছিলেন প্রকৃত সুন্দরী এবং তাঁর অভিনয় ক্ষমতা ছিল একেবারেই সহজাত। আজ, ভালোবাসার দিনেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই দেশের চিরকালীন হার্টথ্রব অভিনেত্রী মধুবালা। বহু প্রেমিক হৃদয়ের অন্তরে আজও মধুবালার মায়া অবিচল রয়ে গিয়েছে। আজ তাঁর জন্মদিনে গুগলের পক্ষ থেকেও বিশেষ সম্মান জানানো হয়েছে এই অভিনেত্রীকে। আজকের গুগল ডুডল (Google Doodle) মধুবালা স্মরণেই।
তৎকালীন বোম্বের বস্তি থেকে উঠে আসা শিশু তারকা থেকে শুরু করে বড় পর্দায় স্বল্প সময়ের মধ্যে যেভাবে ছাপ রেখে গিয়েছেন মধুবালা তা অবিস্মরণীয়। ১৯৩৩ সালে দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন মুমতাজ জাহান বেগম দেহলভি, পরে সিনেমায় আমরা যাকে চিনেছি মধুবালা হিসেবে। বোম্বে টকিজ ফিল্ম স্টুডিওর কাছে একটি শহরে বস্তিতে বড় হন তিনি।
মাত্র ৯ বছর বয়সে প্রথম বলিউডে পা রাখেন মধুবালা। বেবি মুমতাজ নামেই তিনি তাঁর প্রথম চলচ্চিত্রে কাজ করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি ১৪ বছর বয়সে ‘নীল কমল' সিনেমায় প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেন। এই সিনেমা থেকেই তিনি নাম বদলে হয়ে যান মধুবালা। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই তিনি ছিলেন তাঁর পরিবারের প্রধান অর্থ উপার্জনকারী। নিজে পরিশ্রম করে মা এবং চার বোনের অন্ন সংস্থান করেছিলেন মধুবালা। ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৯ সালের মধ্যে ৯ টা সিনেমায় অভিনয় করেন মধুবালা।
প্রেম দিবসে তার চিরকালীন ঘরটির জন্য অপেক্ষা করছে এক কুকুরছানা
মধুবালার স্বর্গীয় সৌন্দর্য, চোখের মায়া, নরম হাসি আর অভিনয়ের সহজাত ক্ষমতায় কমেডি থেকে শুরু করে রোম্যান্টিক সিনেমা সবেতেই তাঁকে অনিবার্য করে তুলেছিল। ১৯৫১ সালে তাঁর সিনেমা তারানার সহ অভিনেতা দিলীপ কুমারের প্রেমে পড়েন তিনি। কিন্তু মধুবালার বাবা এই সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করেন। মুঘল-এ-আজম সিনেমায় দিলীপ ও মধুবালার রোম্যান্টিক জুটি বলিউডের ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং অবিস্মরণীয়।
এমন মোহময়ী সৌন্দর্য, এমন অভিনয় প্রতিভা অকালেই ফুরিয়ে যায়। তবে, এই সংক্ষিপ্ত কর্মজীবনেও ৭০ টিরও বেশি চলচ্চিত্রে কাজ করেছিলেন মধুবালা। আজ বেঁচে থাকলে অভিনেত্রীর বয়স হত ৮৬। ১৯৫২ সালে থিয়েটার আর্টস পত্রিকা দ্বারা মধুবালাকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় তারকা' বলে সম্মানিত করে।
২০০৮ সালে এই অভিনেত্রীকে নিয়ে ভারতের স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়।
‘একবার বলো উত্তমকুমার' থেকে ‘আই লাভ ইউ'- জেনে নিন দেশে বিদেশে ভালোবাসার মানে
১৯৬৯ সালে ২৩ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৩৬ বছর বয়সে দীর্ঘ অসুস্থতার কারণে প্রয়াত হন তিনি। রাজ কাপুরের বিপরীতে তাঁর চলচ্চিত্র ‘ছলক' ১৯৬৬ সালে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। যদিও এটি একটি ছোট্ট অংশের শ্যুটিংয়ের প্রয়োজন ছিল। তবে মধুবালা এতখানিই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে শ্যুটিং শেষ করতে পারেননি এবং সেকারণে চলচ্চিত্রটি তাঁর মৃত্যুর সময়েও অসম্পূর্ণই থেকে যায়।