প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় মুসলিমদের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা এনআরসি নিয়ে ভিত হওয়ার কোনও কারণ নেই
নয়াদিল্লি: রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দান থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi) জানিয়ে দিয়েছেন, “ভারতের কোথাও ডিটেনশন সেন্টার (Detention Centres) হবে না”, তার কয়েকঘন্টা পরেই, কংগ্রেস জানিয়ে দিল, শুধুমাত্র ইন্টারনেট সার্চ করেই প্রধানমন্ত্রীর দাবির সত্যতা প্রমাণ হবে। তাদের ট্যুইটার হ্যান্ডেলে কংগ্রেস জানিয়েছে, “তাঁর মিথ্যাটি যাচাই করতে ভারতীয়রা কি গুগুল সার্চও করতে পারেন না বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন? ডিটেনশন সেন্টারের বিষয়টিই প্রচণ্ডভাবে সত্য এবং সরকারের ক্ষমতা যত বাড়বে, ততই ডিটেনশন ক্যাম্প বাড়বে”। ট্যুইটের সঙ্গে একটি খবরের কাগজের রিপোর্টও পোস্ট করেছে কংগ্রেস, যেখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বলেছেন, অসমে ডিটেনশন ক্যাম্পে ২৮জন অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর মৃত্যু হয়েছে।
রামলীলা ময়দানের সভা থেকে, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সংগঠিত করার অভিযোগ তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, তাঁর অভিযোগ, নয়া আইনটি, মুসলিমদের থেকে তাঁদের নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নিয়ে তাঁদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রথম পদক্ষেপ, এই “গুজব” ছড়াচ্ছে কংগ্রেস। তিনি বলেন, “কোনও মুসলিমকেই ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হবে না, ভারতে কোনও ডিটেনশন ক্যাম্পও নেই। আমি হতবাক হয়ে যাচ্ছি, কতদূর পর্যন্ত মানুষ মিথ্য ছড়াতে পারে”।
প্রধানমন্ত্রীর দাবি, “আরবান নকশাল এবং বিরোধীরা” পরপর দুবার তাঁর জয়ে ঈর্ষান্বিত হয়েই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়িয়ে প্রচার চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অসমে এনআরসি কার্যকর করা হয়েছে এবং ২০১৪-এ তিনি ক্ষমতায় আসার পর থেকে “বিষয়টি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি” বলে মন্তব্য করে পুরো দেশজুড়ে তা করার বিষয়টি অস্বীকার করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা পাল্টা বলেন, বিভিন্ন মঞ্চে সরকারে কৌশল নিয়ে বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কংগ্রেস নেতা বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদের উভয়কক্ষে বলেছেন, এটা সরকারের আওতায়। একটা ভীতি, নিরাপত্তাহীনতা, এবং অনিশ্চয়তার আবহ রয়েছে দেশজুড়ে, এবং তারজন্য মূলত দায়ী সরকার”।
এই ক্ষেত্রে, আনন্দ শর্মা কয়েকমাস আগে বনগাঁয় অমিত শাহের একটি বক্তব্যের ভিডিও তুলে ধরেন, যেখানে তাঁকে বলতে দেখা গিয়েছে, কেন্দ্রের প্রথম পদক্ষেপ হবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস করানো যাতে, প্রতিবেশী দেশের “যোগ্য” সব শরণার্থীই ভারতের নাগরিকত্ব পান, এবং তারপর ভারত থেকে সমস্ত “অনুপ্রবেশকারীদের” হঠাতে দেশজুড়ে এনআরসি করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যপাধ্যায়ও। তিনি ট্যুইট করেন, “যেটা আমি বলেছি সরকারি মঞ্চে, যেটা আপনি বলেছেন তা মানুষকে বিচার করার জন্য। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশজুড়ে এনআরসি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈপরিত্য হচ্ছে, ভারতের মৌলিক চিন্তাকে কারা ভাগ করছে? মানুষ অবশ্যই স্থির করবে, কে ভুল এবং কে ঠিক”।
অনেক সংবাদমাধ্যমেই খবর যে, অসমের গোয়ালপাড়া জেলায় একটি বিশাল ডিটেনশন সেন্টার তৈরি করছে সরকার, যেটি প্রায় ৭টি ফুটবল ময়দানের সমান এবং ৩,০০০ মানুষ থাকতে পারবে। এও খবর পাওয়া গিয়েছে যে, কর্নাটকের বেঙ্গালুরু গ্রামীণ জেলা এবং নভি মুম্বইয়েও ডিটেনশন সেন্টার তৈকি করা হবে।