UP Child Death: ২০১৭ সালের অগাস্টে ডঃ কাফিল খানকে বিআরডি মেডিকেল কলেজের শিশু বিশেষজ্ঞ হিসাবে নিয়োগ করা হয়
লখনউ: ৬০-এরও বেশি শিশুমৃত্যুর কারণে অভিযুক্ত চিকিৎসককে রীতিমতো ক্লিনচিট দিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) গোরক্ষপুরের একটি সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে ওই শিশুদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়। সেই সময় অভিযোগ ওঠে হাসপাতালেরই এক চিকিৎসক ডঃ কাফিল খানের কর্তব্যে গাফিলতির ফলেই ওই সাংঘাতিক ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে শিশুমৃত্যুর (UP Child Death) অভিযোগে তাঁর গাফিলতির জন্য ওই চিকিৎসককে (Kafeel Khan) সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং পরে তিনি গ্রেফতার হয়ে জেলও খাটেন। গঙ্গা দিয়ে এত জল গড়ানোর পর যোগী সরকারের একটি রিপোর্টে ওই চিকিৎসককে সমস্ত বড় অভিযোগ থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছে।
ডঃ কাফিল আহমেদ খান বিআরডি মেডিকেল কলেজের শিশু বিশেষজ্ঞ হিসাবে ২০১৭ সালে কাজ শুরু করেন। এরপরেই সেই বছরের ১০ থেকে ১১ অগাস্টের মধ্যে ওই হাসপাতালে ৬৩ জন শিশু মারা যায়। সেই সময় অভিযোগ ওঠে যে হাসপাতালের শিশুদের ওয়ার্ডে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ থাকার করার কারণেই ওই শিশুদের মৃত্যু হয়েছে। কাঠগড়ায় তোলা হয় চিকিৎসক কাফিল খানকে।
নিপাহ-আক্রান্ত কেরলকে সাহায্যের ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন কাফিল খান, মেনে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী
এই শিশুমৃত্যুর ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ সহ গোটা দেশেই বিক্ষোভ দানা বাঁধে। ঘরে বাইরে চাপের মুখে পড়ে সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নিজ শহরের হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ কাফিল খানকে তাঁর পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। ওই চিকিৎসককে সাময়িক বরখাস্ত করার সময়, উত্তরপ্রদেশ সরকার বলেছিল যে অক্সিজেনের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার পরেও কাফিল খান তাৎক্ষণিক ভাবে পদক্ষেপ নিতে বা হাসপাতালের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের অক্সিজেন সংক্রান্ত আসন্ন সঙ্কট সম্পর্কে সতর্ক করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।
গোরক্ষপুরের বিআরডি মেডিকেল কলেজে ২০১৭ সালের ১০ থেকে ১১ অগাস্টের মধ্যে মাত্র দু'দিনে ৬৩ জন শিশু মারা যায়।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে ক্লিনচিট দেওয়ার পর ডঃ কাফিল খান বলেন, "যদিও সরকার এখনও আসল অপরাধীকে শনাক্ত করতে পারেনি, তবুও আমাকে বলির পাঠা বানানো হয়। এই সমস্ত মাসে রিপোর্টটি আমার কাছে পাঠানোও হয়নি। এখন, বেসরকারি অনুশীলনের বিষয়ে মামলায় মেডিকেল শিক্ষা বিভাগ আমাকে উপস্থিত হতে বলেছে , যা ওই ট্র্যাজেডির সঙ্গেও সম্পর্কিত নয়"।
লিচু নয়, এনকেফেলাইটিসে ১৫০ শিশুর মৃত্যুর কারণ দারিদ্র্য আর অপুষ্টি!
"সরকারের উচিত ক্ষমা চাওয়া, ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা এবং ঘটনাটি সিবিআইয়ের তদন্ত করা উচিত," তিনি আরও যোগ করেন।
সরকারি রিপোর্টে বলা হয়, ডঃ কাফিল খান চিকিৎসা জনিত কোনও অবহেলার জন্য দোষী নন, তিনি হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহের টেন্ডারিং প্রক্রিয়া বা তার সঙ্গে যুক্ত কোনও দুর্নীতিতেও জড়িত নন। ওই রিপোর্টে একথাও বলা হয়েছে, ডঃ খান তাঁর সিনিয়রদের অক্সিজেনের ঘাটতি সম্পর্কে অবহিত করেছিলেন এবং এ বিষয়ে প্রমাণও মিলেছে। এমনকি ওই ট্র্যাজেডির রাতে তিনি ব্যক্তিগতভাবে সাতটি অক্সিজেন সিলিন্ডার হাসপাতালে সরবরাহ করেছিলেন।
"আমি সবসময় জানতাম যে আমি কোনও ভুল করি নি। সেই দুর্ভাগ্যজনক দিনে, একজন চিকিৎসক, পিতা এবং একজন সাধারণ ভারতীয় হিসাবে আমার যা যা করণীয় থাকতে পারে তাই করেছিলাম। কিন্তু তারপরেও শিশুমৃত্যুর অভিযোগে আমাকে জেলে আটকানো হয়েছিল", সংবাদমাধ্য়মের সামনে এক বিবৃতিতে ডঃ কাফিল খান আরও বলেন যে, "আমার পরিবারকে পর্যন্ত ব্যাপক হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল এবং আমাকে আমার চাকরি থেকে বরখাস্তও করা হয়"।
যদিও কাফিল খানের ক্লিনচিট পাওয়ার ব্যাপারে উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
দেখে নিন সেরা খবর: