This Article is From Jun 13, 2019

ওমান উপসাগরে দু’টি তেলের ট্যাঙ্কারের ‘হামলা’, প্রাণ বাঁচাতে জলে ঝাঁপ দিল নাবিকরা

দু’টি তেলের ট্যাঙ্কারের উপরে আক্রমণ করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে ওমান উপসাগরে। নাবিকদের ট্যাঙ্কার থেকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ওমান উপসাগরে দু’টি তেলের ট্যাঙ্কারের ‘হামলা’, প্রাণ বাঁচাতে জলে ঝাঁপ দিল নাবিকরা

অভিযোগের আঙুল উঠেছে ইরানের দিকে। (প্রতীকী চিত্র)

হাইলাইটস

  • The mystery incident comes amid spiralling tension between US, Iran
  • Iran said its navy rescued 44 crew after two vessels caught fire
  • 3 explosions were reported on board Norwegian-owned Front Altair
দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি:

দু'টি তেলের ট্যাঙ্কারের (Oil tanker) উপরে আক্রমণ করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে ওমান উপসাগরে (Gulf of Oman)। ওই দুই ট্যাঙ্কারে উপস্থিত নাবিকদের ট্যাঙ্কার থেকে নিরাপদে বৃহস্পতিবার ইরানের উপকূলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই দুর্ঘটনার জেরে বিশ্ববাজারে তেলের দাম গগনচুম্বী হয়ে গেল। গত সপ্তাহ কয়েকের মধ্যে এই ধরনের দু'টি ঘটনা ঘটল। যার ফলে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ল। মে মাসের ট্যাঙ্কার দুর্ঘটনার জন্য অভিযোগের আঙুল উঠেছে ইরানের দিকে। ইরান জানিয়েছে, আগুন লাগার পরে দুই জাহাজ থেকে ৪৪ জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে। আগুন লাগাকে ‘আক্রমণ' বলে দাবি করা হয়েছে। নরওয়ের উপকূলবর্তী কর্তৃপক্ষের তরফে থেকে জানানো হয়েছে, নরওয়ের ট্যাঙ্কার ফ্রন্ট অলটেয়ারে তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে, যাকে ‘আক্রমণ' আখ্যা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় আক্রান্ত জাহাজটি হল সিঙ্গাপুরের কোকুকা কারেজিয়াস।

হাসপাতাল পরিষেবা চালু রাখতে সিনিয়র চিকিৎসকদের চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

ইরানের রাজ্য সংবাদমাধ্যমের তরফে জানানো হয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৮.৫০-এ হামলার সময় ফ্রন্ট অলটেয়ার দক্ষিণ ইরানের বন্দর-ই জসকের থেকে ২৫ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল। তাদের সরকারি সংবাদ সংস্থা IRNA জানিয়েছে, ওই জাহাজ ইথানল নিয়ে কাতার থেকে তাইওয়ানের দিকে যাচ্ছিল।  সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘জাহাজে আগুন লাগার পর থেকে ২৩ জন নাবিক জলে ঝাঁপ দেন। পার্শ্ববর্তী একটি জাহাজ তাঁদের উদ্ধার করে ইরানের উদ্ধারকারী দলের হাতে তুলে দেয়।''

মমতার বিরুদ্ধে তোপ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী থেকে পদত্যাগের দাবি বিরোধীদের

ওই বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ‘‘প্রথম দুর্ঘটনার পরে দ্বিতীয় আগুন লাগার ঘটনাটি ঘটে বন্দর থেকে ২৮ নটিক্যাল মাইল দূরত্বে সকাল ৯.৫০-এ।''

পানামার পতাকা লাগানো কোকুকা কারেজিয়াস সৌদি আরব থেকে সিঙ্গাপুর যাচ্ছিল মেথানল নিয়ে। ওই জাহাজ থেকেও ২১ জন নাবিক জলে লাফ দেন। পরে তাঁদের উদ্ধার করা হয় বলে IRNA-র তরফ থেকে জানানো হয়।

‘নিরাপত্তা প্রসঙ্গ'

সিঙ্গাপুরের BSM Ship Management যাদের জাহাজ কোকুকা কারেজিয়াস, তারা জানিয়েছে, ‘‘নিরাপত্তা প্রসঙ্গে পূর্ণ মাত্রার সুরক্ষা চাওয়া হয়েছে।'' পাশাপাশি জানানো হয়, ‘‘দুর্ঘটনায় ওই ২১ জন নাবিককে উদ্ধার করা হলেও পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা জাহাজটির ক্ষতি হয়েছে।''

কোকুকা কারেজিয়াসের একজন নাবিক সামান্য আহত হয়েছেন। তাঁকে দ্রুত প্রাথমিক শুশ্রুষা দেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ওই জাহাজ সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে ৭০ নটিক্যাল মাইল ও ইরানের উপকূল থেকে ১৪ নটিক্যাল মাইল দূরে রয়েছে। তেহরান জানিয়েছে, পরবর্তী তদন্তের জন্য তারা একটি হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে বন্দর-ই-জসক থেকে।

US Fifth Fleet জানিয়েছে, ‘‘আমরা ওমান উপসাগরে ট্যাঙ্কারগুলির উপরে হওয়া হামলার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। মার্কিন নৌসেনা ওই এলাকায় দু'টি বিপদবার্তা পেয়েছে। একটি স্থানীয় সময় ৬.১২-তে। অন্যটি ৭.০০টার সময়।''

‘তেলের মূল্যবৃদ্ধি'

ওমান উপসাগরে ওই হামলার ঘটনার কথা ব্রিটেনের রয়্যাল নেভি পরিচালিত এক বাণিজ্যপোত তথ্য সরবরাহকারী সংস্থার পক্ষ থেকে জানানোর পরে তেলের দাম বেড়ে যায়।

United Kingdom Marine Trade Operations (UKMTO) তাদের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে কোনও বিস্তারিক তথ্য না দিয়ে কেবল জানিয়েছে, ‘‘ব্রিটেন‌ ও তার সহযোগীরা এই মুহূর্তে তদন্ত করছেন।''

বিশ্বব্যাপী তেলের দাম ওই হামলার খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই চার শতাংশ বেড়ে যায়। এক ব্যারেল প্রমাণ ব্রেন্ট তেলের দাম তিন শতাংশ বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৬১.৭৪ ডলার।

ওমান উপসাগর strategic Strait of Hormuz-এর বিপরীত প্রান্তে অবস্থিত। এখান দিয়ে ১৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেল ও তেল ছাড়াও বহু শত মিলিয়ন ডলার মূল্যের সামগ্রী রপ্তানি করা হয়।

১২ মে চারটি তেলের ট্যাঙ্কার— দু'টি সৌদি, একটি নরওয়ে ও একটি এমিরাতি— ওমান উপসাগরে এক হাম‌লার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন জানিয়েছেন, ইরানের নৌসেনা এই সমস্ত হামলার পিছনে রয়েছে। কিন্তু তেহরানের যুক্ত থাকার সঠিক প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।

সংযুক্ত আরব আমিরশাহি জানিয়েছে, পাঁচ দেশের সম্মি‌লিত তদন্তের পরে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছনো গিয়েছে যে এসবের পিছনে একটি দেশ রয়েছে। কিন্তু ইরানই যে সেই দেশ, সেটা প্রমাণ করার মতো কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবারের হামলার ঠিক আগেই বুধবার ইরানের হুথি দস্যুরা দাবি করে, তারা একটি মিসাইল ছুড়েছে সৌদি আরবের এক বিমানবন্দরে। আহবা বিমানবন্দরে ওই হামলায় ২৬ জন আহত হয়েছেন।

ইরান অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু সৌদি আরব এই দাবিতে অটল, যে আসল অপরাধী ইরানই।

সৌদি রাজা সলমন এ মাসের গোড়ায় Organisation of Islamic Cooperation-এর এক বৈঠকে সকলকে সতর্ক করে বলেন, উপসাগরীয় এলাকায় জঙ্গি হানা হলে তেল পরিবহন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রফতানিকারী দেশের সঙ্গে ইরানের সঙ্গে কটূ সম্পর্ক আজকের নয়। সৌদির তেলের পাইপলাইনে ইয়েমেনের হুথি দস্যুরা আক্রমণ করলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বৃহস্পতিবার তেহরানের নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই-এর সঙ্গে আলোচনায় বসেন। মার্কিন-ইরান দ্বন্দ্ব কী করে কমানো যায়, সেকথা তাঁরা আলোচনা করেন, যা নিয়ে বিশ্ব চিন্তিত।

.