Hate Speeches: দিল্লি হাইকোর্টে প্রথমে আবেদন করা হলেও মামলার শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন মামলাকারীরা
হাইলাইটস
- বুধবার সুপ্রিম কোর্টে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানি
- তাঁদের বিদ্বেষমূলক প্রচারে দিল্লিতে হিংসা ছড়িয়েছে, এই অভিযোগেই মামলা
- ওই বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন আদালতে
নয়া দিল্লি: আজ (বুধবার) সুপ্রিম কোর্টে বিজেপি নেতাদের (BJP Leaders) বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক (Hate Speeches) প্রচার করার অভিযোগে করা মামলার শুনানির দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। গত সপ্তাহে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রথমে সংঘর্ষ বাঁধে, পরে সেই সংঘর্ষ ভয়ঙ্কর হিংসা পরিস্থিতির রূপ নেয়। দিল্লির ওই অশান্তির জেরে এখনও পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহতের সংখ্যা শতাধিক। চরম আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে দিল্লির সাধারণ মানুষ। বিজেপি নেতাদের বিদ্বেষমূলক প্ররোচনার জেরেই দিল্লিতে হিংসা (Delhi violence) ছড়িয়েছে, তাই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক, এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতের (Supreme Court) দ্বারস্থ হন দিল্লি হিংসার বলি মানুষজনের পরিবার। জরুরি ভিত্তিতে এই মামলার শুনানি হোক, আবেদন করেন আইনজীবী। সোমবার মামলাটি গ্রহণ করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে বলেন, সুপ্রিম কোর্ট শান্তি কামনা করে তবে শক্তিরও একটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে, এভাবে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না আদালত।
এর আগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (CAA) বিরুদ্ধে প্রতিবাদরত বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্ররোচনা দেওয়ায় অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে পুলিশকে ৪ সপ্তাহ সময় দেয় দিল্লি হাইকোর্ট। পিটিশনে বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র, পরবেশ ভার্মা, অনুরাগ ঠাকুর এবং অভয় ভার্মার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের আবেদন করা হয়।
দিল্লি হিংসায় পুলিশের দিকে বন্দুক তাক করা ব্যক্তিকে বরেলি থেকে গ্রেফতার
আইনজীবী কলিন গনজালভেস বলেন, প্রথমে ৫ জন নিহত ব্যক্তির পরিবার দিল্লি আদালতেও মামলা দায়ের করে। তবে সেই মামলার বিচারপতি এস মুরলিধরকে ওই আদালত থেকে অন্য আদালতে বদলি করে দেওয়ায় আপাতত হাইকোর্ট এক মাসের জন্যে মামলার শুনানি স্থগিত করে দেয়। কিন্তু বিদ্বেষমূলক বক্তব্য যাঁরা ছড়িয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক এমনটাই চায় ভুক্তভোগীদের পরিবার, তাই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। তিনি বলেন, "আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি নোটিসও জারি করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আবার ওই আদালতের বিচারপতিকে বদলি করা হয়। আর তারপরেই দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ওই মামলাটি ৬ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দেন।" তিনি আরও বলেন, "এই আবেদন করা জরুরি ছিল। কেননা এখানে প্রতিদিন ১০ জন করে মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে।"
সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি গেলে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে বলেন: "রায় না বেরোলে এক্ষেত্রে আমরা কী করতে পারি? " তিনি আরও বলেন: "আমরা শান্তি কামনা করছি। তবে আপনারা জানেন যে আমাদের শক্তিরও একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমাদের থেকে এমন কিছু প্রত্যাশা থাকে, কিন্তু আমরা তা করতে পারি না। আসুন দেখা যাক আমরা কী করতে পারি।"
"উন্নয়নই আমাদের মন্ত্র, এর জন্য শান্তি, সম্প্রীতি, ঐক্য বজায় রাখতে হবে", বিজেপির সংসদীয় বৈঠকে মোদি
"আমরা এই ধরণের ঘটনা আটকাতে সক্ষম নই। আমরা শুধু এই ধরণের ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার চেষ্টা করতে পারি। এটা আমাদের উপর এক ধরণের চাপ সৃষ্টি করে। আমরা এত চাপ সামাল দিতে পারি না", বলেন প্রধান বিচারপতি বোবদে। তিনি আরও যোগ করেন, "আমরা খবরের কাগজে যে ধরণের মন্তব্য করা হয় তাও পড়ি"।
গত সপ্তাহে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন অঞ্চলে হিংসা ছড়িয়ে পড়ায় সেই পরিস্থিতির বলি হন ৪৬ জন মানুষ, আহত আরও বহু ব্যক্তি। ওই সময় দেখা যায় প্রকাশ্য দিবালোকে লোহার রড, লাঠি ও বন্দুক নিয়ে কিছু লোকজন রাস্তায় ঘোরাঘুরি করছে এবং সাধারণ মানুষজন, দোকান, গাড়ি ও বাড়িগুলিকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করছে।