This Article is From Jun 09, 2019

বিজেপি না তৃণমূল, কোন কূল সামলাবেন? জানাবেন প্রশান্ত-ই: নীতিশ

বিজেপিকে ধরাশায়ী করতে প্রশান্ত কিশোরের সাহায্য নিতে পারেন মমতা, গতকাল বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের মুখপাত্র একথা জানান

গতবছর প্রশান্ত কুমার জেডিইউ-এ যোগ দিয়েছিলেন

হাইলাইটস

  • প্রশান্ত কুমার নিজে কথা বলবে বলে জানিয়েছেন নীতিশ কুমার
  • প্রশান্ত কার হয়ে কাজ করবেন এটাও ওঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার, নীতিশ
  • এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগাযোগ নেই, জানান তিনি
Patna:

লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র (BJP) কাছে ধরাশায়ী তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। খবর, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে যাতে সেই ফলাফলের প্রভাব না পড়ে এবং একই সঙ্গে রাজ্যে বিজেপির প্রভাব রুখতে প্রশান্ত কিশোরের (Prashant kishor) শরণ নিচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বিষয়টি নিয়ে গতকাল মুখ খুলেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। তিনি জানান, তাঁর দল জেডিইউ-য়ের সহ সভাপতি প্রশান্ত আদৌ মমতাকে সাহায্য করবেন কিনা সেব্যাপারে কিছুই জানেন না তিনি। একই সঙ্গে তিনি এও বলেন, আগামী দিনে কার হয়ে কাজ করবেন সেকথা জানাবেন প্রশান্ত নিজে।

প্রসঙ্গত, বিজেপি জোটের অন্যতম এই নেতা বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পরেই দলের কার্যনির্বাহী সহ সভাপতি হিসেবে শ্রী কিশোরের কাঁধে দায়িত্ব তুলে দেন নীতিশ কুমার (Nitish Kumar)। স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপির ছত্রছায়ায় থেকে মমতার সঙ্গে কিশোরের গাটছড়া বাঁধাকে একেবারেই ভালো চোখে দেখছে না গেরুয়া শিবির। উল্টে দলের তীব্র আপত্তি, এক ব্যক্তি ভিন্ন দুই দলের হয়ে কাজ করলে ভবিষ্যতে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে।

নীতিশ আরও জানান, "আজ দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক। প্রশান্ত কিশোর নিজে সেখানে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন। কারণ, গত বছর দলে যোগ দেওয়ার সময় আমরা তাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছিলাম।"

প্রশান্তের (Prashant Kishor) ভূমিকা নিয়ে নীতিশের ব্যাখ্যা, "রাজনৈতিক দায়িত্ব সামলানোর জন্য প্রশান্তের নিজস্ব একটি সংস্থা রয়েছে। ফলে, সংস্থার কোনও ব্যক্তি যদি অন্য কারোর হয়ে কাজ করে সেটা একমাত্র প্রশান্তই জানবেন। আর কারোর পক্ষে সেটা জানা সম্ভব নয়। তাই আমি এটা পরিষ্কার করে দিতে চাই, যে বিজেপি বা জোট দল জেডিইউ (JDU) কোনও ভাবেই বিষয়টির সঙ্গে জড়িত নয়।"

প্রসঙ্গত, গত মাসে জাতীয় নির্বাচনে বিজেপির সার্বিক জয়ের পরেও অন্ধ্রপ্রদেশে জগন মোহন রেড্ডির (Jagmohan Reddy) সাফল্য রাজনৈতিক মহলের কাছে ছিল অত্যাশ্চর্য বিষয়। এদিকে রাজ্যেও ভালো ফল করেছে বিজেপি। ৪২টি আসনের বদলে শাসকদলের দখলে মাত্র ২২টি আসন। অন্যদিকে মাত্র ৩টি আসনে পিছিয়ে থাকা বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে। এরপরেই প্রশান্তের সঙ্গে দেখা করেন মমতা।এবং গত বৃহস্পতিবার কলকাতায় দু-ঘণ্টা বৈঠকের পর তিনি শ্রী কিশোরকে বিধানসভা নির্বাচনের পরামর্শদাতা হিসেবে নাকি স্বাক্ষরও করান, এমনটাই খবরে প্রকাশ।

এদিকে, লোকসভায় ১৯টি আসন দখলে আনা বিজেপি ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে রাজ্য থেকে নির্মূল করেই ছাড়বে, এটি ভালো করেই বুঝে গেছেন শাসকদলের প্রধান।

প্রসঙ্গত, ৪২ বছরের শ্রী কিশোর বরাবরই রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। তাঁর দেখানো পথে চলেই কংগ্রেসের ভরাডুবির মধ্যেও অন্ধ্রপ্রদেশে ১৭৫ টি আসনের মধ্যে ১৫০টি আসন পেয়ে জিতেছেন জগন রেড্ডি। সেই জয়ের হাত ধরেই মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর দল ফের গত ক্ষমতায় এসেছেন। স্বয়ং, নীতিশ কুমার তাঁর এই দক্ষতার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, এই কারণেই দল তাঁর হাতে বিশেষ ক্ষমতা তুলে দিয়েছে।

গত বছর বিহারের ক্ষমতাসীন জনতা দল ইউনাইটেডের সহ সভাপতি হিসাবে রাজনীতিতে যোগ দেন প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু দলের প্রধান নিতিশ কুমারের ওপর বিজেপির প্রত্যক্ষ চাপ থাকায় কিশোরের পরামর্শ সবক্ষেত্রে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণ করতে পারেননি। এতে প্রশান্ত স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন।

কিশোরের পরামর্শ মেনেই ২০১৪-য় নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) এবং ২০১৫-য় নীতিশ কুমার সাফল্যের মুখ দেখেন। যদিও ২০১৭-য় উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের ভরাডুবির নেপথ্য নায়ক প্রশান্তই। এবছরের লোকসভা নির্বাচনে সমাজবাদি পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav) আর কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধির (Rahul Gandhi) মধ্যে জোট গড়েছিলেন তিনিই। যদিও এই জোট ব্যর্থ হয় বিজেপির কাছে।

.