করোনা যোদ্ধাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বাংলায়। মেমোতে উল্লেখ করেছে কেন্দ্র। (ফাইল ছবি)
নয়া দিল্লি: দেশের মধ্যে করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর হার (Corona death rate) সবচেয়ে বেশি বাংলায়। এই মর্মে রাজ্য সরকারকে সতর্ক করে চিঠি পাঠাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (Ministry of Home Affairs) । সেই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কম নমুনা পরীক্ষা, করোনা যোদ্ধাদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বিগ্ন মন্ত্রক।নবান্নে পাঠানো চিঠিতে (Letter to Bengal) কেন্দ্র লিখেছে, "জনবসতির বিচারে রাজ্যে নমুনা পরীক্ষার হার কম। অন্য রাজ্যের তুলনায় মিরত্যুর হার ১৩.২%। বাংলায় সংক্রমণে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি।" চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজ্যের মধ্যে কম নজরদারি, নমুনা পরীক্ষা ও সংক্রমণ চিহ্নিত করতে গলদ থাকায় এই পরিসংখ্যান উদ্বেগে ফেলেছে। লকডাউন বিধি বন্ধ প্রসঙ্গে সেই চিঠিতে বলা, "কলকাতা ও হাওড়ার কিছু এলাকায় লকডাউন বিধি ভঙ্গ করা হয়েছে। পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ আক্রান্ত হয়েছেন পুলিশ-সহ একাধিক করোনা যোদ্ধা।" সংক্রমণ প্রতিরোধে একাধিক সমস্যার মুখে স্বাস্থ্যকর্মীরা। কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রের সংখ্যাও তথৈবচ। এই বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
রাজ্যের মেডিকেল বুলেটিনে "বড়সড় গড়মিল" আছে, অভিযোগ কৈলাশ বিজয়বর্গীয়ের
এদিকে, গোটা দেশের মতো পশ্চিমবঙ্গেও ক্রমশই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। এবার তাই রাজ্যের (West Bengal) করোনা পরিস্থিতিকে আয়ত্তে আনতে অন্যতম বড় সরকারি হাসপাতাল কলকাতা মেডিকেল কলেজকে পুরোপুরি "কোভিড স্পেশালিস্ট" (COVID -19) হাসপাতাল হিসাবে চিহ্নিত করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ৭ মে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকে মেডিকেল কলেজ রাজ্যের পূর্ণসময়ের কোভিড হাসপাতাল হিসেবে কাজ শুরু করবে। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্যে বরাদ্দ ৬৮ তম হাসপাতাল হচ্ছে সেটি। এর আগে গোটা রাজ্যে ৬৭ টি হাসপাতালে চিকিৎসা হচ্ছিল করোনা ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত রোগীদের। রাজ্য সরকারের তরফে বুধবার জানানো হয়েছে যে, প্রাথমিকভাবে ৫০০ শয্যা (COVID- 19 ও SARI দুই ধরণের রোগীদের জন্য) নিয়েই বৃহস্পতিবার থেকে পুরোদমে কোভিড হাসপাতাল হিসাবে কাজ শুরু করতে চলেছে কলকাতা মেডিকেল কলেজ। পরবর্তী সময়ে করোনা পরিস্থিতির বিচার করে পর্যায়ক্রমে হাসপাতালের বেড আরও বাড়ানোর কথা বিবেচনা করা হতে পারে।
এতদিন পর্যন্ত রাজ্য করোনা রোগীদের জন্যে মোট ৮০৩৬ টি বেড বা শয্যা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু মেডিকেল কলেজ কোভিড হাসপাতাল হিসাবে কাজ শুরু করলে সেই শয্যা সংখ্যা একলাফে বেড়ে হবে ৮৫৩৬ টি। রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলি ছাড়াও বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালও সম্পূর্ণ রূপে কোভিড হাসপাতাল হিসাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব। রাজ্যে বর্তমানে ২৭১ টি ভেন্টিলেটর রয়েছে। স্বরাষ্ট্রসচিব তাঁর সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, রাজ্যের মোট ১৪৫৬ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে শুধুমাত্র ৩০ জন রোগীর ভেন্টিলেটর সহায়তার প্রয়োজন পড়েছে। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্যে আইসিইউ বেডের সংখ্যা ৮৬০ টি।