This Article is From Oct 13, 2018

সুগম পার্ক: ছোট-বড় মিলেমিশে আবাসনই যেন বাড়ির পুজো

আসলে শুধু পুজো নয় আবাসনের পুজো মানে জীবনের পথে সকলকে নিয়ে এক সঙ্গে এগিয়ে চ‌লার শিক্ষাও দিচ্ছে সুগম পার্কের পুজো।

সুগম পার্ক: ছোট-বড় মিলেমিশে আবাসনই যেন বাড়ির পুজো

সুগম পার্কের মণ্ডপসজ্জা

কলকাতা:

পুজো বলতে একটা সময়ে বাঙালি বুঝত সকলের এক সাথে হওয়া। বছরে একবার পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজন যে যেখানেই থাকুক না কেন ওই সময়টুকু হয়ে উঠত যৌথ একান্নবর্তী পরিবার। কিন্তু সে দিন এখন অতীত। পরিবার ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে, বেশিরভাগ পুরনো পাড়াতেও আজকাল প্রতিবেশীরা কেমন যেন গা-ছাড়া। কিন্তু যৌথ পরিবারের স্বাদ এখন নতুন করে পাওয়া যাচ্ছে শহরের আবাসনগুলোয়। কোথাও ১০০ কোথাও বা ৩০০ কোথাও ৫০০ পরিবারের এক সঙ্গে বাস সেখানে। সারা বছরের পুজো পার্বণ অনুষ্ঠান ঘিরে অনবরত যোগাযোগ থেকে আবাসনগুলোই হয়ে উঠছে পাড়া তথা যৌথ পরিবারের বিকল্প। আর আবাসনের পুজোতেই এখন পাওয়া যায় যৌথ পারিবারিক পুজোর মেজাজও।

qda0blag

দক্ষিণ কলকাতার নরেন্দ্রপুর এলাকার প্রায় পনেরো বছরের পুরনো আবাসন সুগম পার্ক। প্রতি বছরের মতোই সেখানে এ বারও আবাসিকেরাই কাঁধে তুলে নিয়েছেন পুজোর দায়িত্ব। পুজোর ১৪তম বছরে পুরো মণ্ডপ সাজছে শিল্পী সুব্রত চৌধুরীর আঁকায়। তাঁর রং-তুলিতে ফুটে উঠছে দেবী দুর্গার নয় রূপ। গোটা মণ্ডপ জুড়েই থাকছে তাঁর আকা পটচিত্র। শিল্পী এ কাজের জন্য মূলত কাংড়া ফর্ম অফ আর্ট এবং ফোক আর্ট ফর্ম ব্যবহার করেছেন। বিভিন্ন পুরাণের গল্প রং তুলির ছোঁয়ায় প্রাণ পাবে চালচ্চিত্রে।

cdgslrv8

পুজোর দায়িত্বে থাকা দেবযানী গুহ বসু বলেন, ‘‘এ যেন এক বৃহত্তর পরিবার। অনেকগুলো পরিবার মিলে একসাথে এক হয়ে পুজোর আনন্দ ভাগ করে নেওয়া হয় এখানে।’’ উদ্যোক্তারা জানালেন, শুধু নিজেরাই নন বাইরের যে মানুষগুলো একেবারে একা তাদেরও নিজেদের পুজোয় অঙ্গীভূত করার প্রয়াস গ্রহণ করেছেন তাঁরা। বেশ কিছু বৃদ্ধাশ্রম, অনাথ আশ্রমে নতুন জামাকাপড় বিতরণ করা হয়েছে। আজ শনিবার এই পুজোর উদ্বোধন করবেন বিধানসভার স্পিকার মাননীয় বিমান ব্যানার্জী। আর আসবে প্রাঞ্জল নামে এক অনাথ আশ্রমের ছোট ছোট শিশুরা। তারা নিজেদের নাচে গানে ভরিয়ে দেবে সন্ধেটা।

f2bjvhog

উদ্যোক্তারা জানালেন, এ বারের পুজোয় তাদের স্পেশ্যালিটি কিডস কমরেড। আবাসনের বিভিন্ন পরিবারের স্কুলপড়ুয়াদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই দল। এদের পুজোর সব কাজে সরাসরি যুক্ত করা হচ্ছে। আলপনা দেওয়া থেকে ভোগ বিতরণে সক্রিয় উপস্থিতি তাদের। তবে তাদের সবথেকে বড় দায়িত্ব অন্য। আবাসনের বয়স্ক অশক্ত মানুষদের পুজোর ক’টা দিন দায়িত্ব নিয়ে ঘর থেকে মণ্ডপে নিয়ে আসা, তাদের প্রয়োজনের দিকে নজর রাখা এবং তাদের সময় মতো ফের ঘরে পৌঁছে দিয়ে আসার গুরুদায়িত্ব কিন্তু ছোটরাই পালন করবে।

আসলে শুধু পুজো নয় আবাসনের পুজো মানে জীবনের পথে সকলকে নিয়ে এক সঙ্গে এগিয়ে চ‌লার শিক্ষাও দিচ্ছে সুগম পার্কের পুজো।

.