Border Roads Organisation-এর তত্ত্বাবধানে তৈরি হল ভীম বেস এবং ফ্ল্যাগ হিল-ডোকালার মধ্যে নতুন রাস্তা
নয়া দিল্লি: সিকিমের কাছে বিতর্কিত ডোকলাম (Doklam) মালভূমির কিনারায় অবস্থিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর কৌশলগত ডোকালা ঘাঁটিতে যাওয়া এক ঝক্কি ও সময়সাপেক্ষ ছিল। কিন্তু যে কোনও আবহাওয়াতেই এই যাত্রা সহজ হয়েছে, এই পথ অতিক্রম করতে এখন আর ৪০ মিনিটের বেশি সময় লাগবে না। পাশাপাশি বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (Border Roads Organisation) জানিয়েছে, এই রাস্তায় সেনার (Indian Army) জন্যে ভারী মালপত্র বহন ক্ষমতা নিয়েও কোনও বিধিনিষেধ নেই। ২০১৭ সালে যখন ভারতীয় সেনাবাহিনী ডোকলামে চাইনিজ পিপলস লিবারেশন আর্মির সঙ্গে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়ে, সেই সময় এই রাস্তা দিয়ে সেনার ডোকালা ঘাঁটিতে পৌঁছতে সাত ঘণ্টা সময় লাগত। বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন অনুসারে, নতুন সজ্জিত ভীম বেস-ডোকালা সড়কটি "যুদ্ধের জন্যে সড়ক যোগাযোগ তালিকার শীর্ষে ছিল", কেননা এই রাস্তার মাধ্যমেই "প্রতিপক্ষের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দেশের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি" জোরদার করা হত।
পাশাপাশি ফ্ল্যাগ হিল-ডোকালা মধ্যে দ্বিতীয় আবহাওয়া সড়কটি ২০২০ সালের মধ্যে শেষ করা হবে। ফ্ল্যাগ হিল-মধুবালা-ডোকালা রুটের এই রাস্তাটি ৩৬০১ থেকে ৪২০০ মিটার অবধি খাড়া ভূখণ্ডের উপর দিয়ে যাবে। (১১,৮১১ ফুট থেকে ১৩,৭৭৯ ফুট)দীর্ঘ এই রাস্তাটি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত পোস্টকে সংযুক্ত করে। এই রাস্তাটির ১০ কিলোমিটার ইতিমধ্যেই নির্মিত হয়েছে এবং আগামী ২০ বছরের মধ্যে আরও ২০ কিমি রাস্তা নির্মাণ শেষ করা হবে বলে জানা গেছে।
মহাবলীপুরমে বৈঠক করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং শি জিনপিং : রিপোর্ট
২০১৭ সালের ১৮ জুন, প্রায় ২৭০ জন সশস্ত্র ভারতীয় সেনা জামেফেরি রিজ-লাইনের রাস্তা সম্প্রসারণ থেকে চিনা সড়ক নির্মাণ শ্রমিকদের আটকাতে ডোকলাম মালভূমিতে প্রবেশ করে। ওই রাস্তা চিন তৈরি করতে পারলে তা ন্যারো শিলিগুড়ি করিডোরের মাধ্যমে পাবলিক লিবারেশন আর্মির জন্যে একটি স্পষ্ট দৃষ্টিকোণ তৈরি করতে সক্ষম হতো, মাত্র ১৮ কিলোমিটার প্রশস্ত জমি ছিল সেখানে, যা কিনা ভারতের উত্তর-পূর্বে দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে যুক্ত।
ভারত ডোকলাম মালভূমিকে ভুটান ভূখণ্ডের একটি অবিসংবাদিত অংশ হিসাবে বিবেচনা করে, অন্যদিকে চিন এটিকে তার চুম্বি উপত্যকার সম্প্রসারণ হিসাবে বিবেচনা করে, পশ্চিমে সিকিম এবং পূর্বে ভুটানের মাঝখানে অবস্থিত জমিটিই বিতর্কিত ডোকলাম অঞ্চল বলে পরিচিত যা প্রায় ৮৯ বর্গকিলোমিটার জায়গায় ১০ কিমি এরও কম প্রশস্ত।
চিন-পাকিস্তান অবৈধ অর্থনৈতিক করিডোর প্রসঙ্গ তুলে চিনকে মোক্ষম জবাব ভারতের
চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর মধ্যকার উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় ২০১৭ সালের ২৮ অগাস্ট। এরপরেই বেজিং ও নয়াদিল্লি উভয়েই ঘোষণা করে যে তাদের সমস্ত সৈন্যকে এই বিতর্কিত স্থান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে উওহান শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে একটি বৈঠক হয়। এলইএকে নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ধারণা যাতে না আসে তা নিশ্চিত করতে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) বরাবর উভয় পক্ষের সৈন্যদের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের পর থেকে ডোকলাম মালভূমিতে কোনও নতুন চিনা সড়ক নির্মাণ করা হয়নি।
পুজোয় রাজনীতি নেই? দেখুন ভিডিও: