This Article is From Mar 04, 2020

‘‘আলাদা হয়ে থাকাটা সহজ ছিল না’’: সুস্থ হয়ে ভারতের প্রথম করোনা আক্রান্ত

২০ বছর বয়সি উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়ার বক্তব্য, ‘‘এতদিন আলাদা হয়ে থাকাটা সহজ ছিল না। কাউন্সিলররা নিয়মিত আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।’’

‘‘আলাদা হয়ে থাকাটা সহজ ছিল না’’: সুস্থ হয়ে ভারতের প্রথম করোনা আক্রান্ত

দেশে এখনও পর্যন্ত করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ২৮। (প্রতীকী)

তিরুবনন্তপুরম:

ভারতের প্রথম করোনা (Coronavirus) আক্রান্ত তরুণী (India's First Coronavirus Patient) ৩৯ দিন‌ আইসোলেশনে থাকার পর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ২০ বছর বয়সি উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়ার বক্তব্য, ‘‘এতদিন আলাদা হয়ে থাকাটা সহজ ছিল না। কিন্তু কাউন্সেলররা নিয়মিত আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। আমার মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতেন।'' চিন‌ের উহান শহর থেকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা ৩,০০০ ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ৯০,০০০-এরও বেশি। ওই পড়ুয়া জানাচ্ছেন, ‘‘যে মুহূর্তে পরীক্ষায় পজিটিভ ধরা পড়ল (৩০ জানুয়ারি), আমি আমার সমস্ত বন্ধুদের ডাকলাম, যারা আমার সঙ্গে ভ্রমণ করেছিল। আমি তাদেরই স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে বললাম। স্বাস্থ্যকর্মীরা পরে তাদের ডেকে তাদের শারীরিক অবস্থার খোঁঝ নেয়।''

তিনি আরও বলেন, ‘‘চিকিৎসক ও কর্মীরা আমার কাছে এসে আমার কাছে বিস্তারিত জানতে চাইলেন। কোন উড়ানে এসেছি, আসন নম্বর কত, আর কারা ছিল আমার সঙ্গে সব।''

২০ বছরের ছাত্রী জানাচ্ছেন, ‘‘আমি চিনের যে ব্যক্তিরা সেরে উঠেছিল তাঁদের সম্পর্কে শুনেছিলাম। এবং আমি জানতাম আমি শারীরিক ভাবে ভাল আছি। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেকে শৈলজা আমার মাকে ডেকে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন।''

তাঁর বক্তব্য, ‘‘এত দীর্ঘ সময়ের জন্য আলাদা হয়ে থাকাটা সহজ ছিল না। এমনকী বাড়ি ফিরেও। কিন্তু কাউন্সিলররা আমার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিলেন। আমার সঙ্গে কথাও বলেছেন। আমার মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজরও রেখেছেন। এতে আমি অনেকটা উপকৃত হই।''

গত ১৩ জানুয়ারি চার সপ্তাহের জন্য বন্ধ হয় উহান বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু তখনও ওই ছাত্রী করোনার প্রকোপ সম্পর্কে আন্দাজ করতে পারেননি। তিনি বলছেন, ‘‘সব কিছুই স্বাভাবিক ছিল। ১৭ জানুয়ারি থেকে সকলে মাস্ক পরে রাস্তায় নামল। তারপর দ্রুত পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গেল।''

তিনি জানাচ্ছেন, ‘‘ছুটিটা কেবল চার সপ্তাহের থাকায় আমি ভেবেছিলাম জুনে ভারতে আসব। কেননা ক'দিন আগেই আমি দেশে লম্বা ছুটি কাটিয়ে গিয়েছিলাম।''

তিনি আরও জানিয়েছেন, ২৩ জানুয়ারি দেশে ফেরার টিকিট কেটেছিলেন তিনি। কিন্তু কেরল নয়, কানিং থেকে কলকাতা আসার কথা ছিল। যেহেতু উড়ান ততদিনে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। কিন্তু ২২ জানুয়ারি তাঁরা খবর পান বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হবে। তখন তাঁরা দ্রুত কানিংয়ের একটি উড়ান ধরার চেষ্টা করেন। শেষমেশ ট্রেনই ধরতে হয়। চিনে প্রতি পদে তাঁদের কীভাবে পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে সে কথা জানান তিনি।

২৩ জানুয়ারি ২০ জন পড়ুয়া কলকাতায় পৌঁছন। সেখান থেকে কেরলে যান ওই ছাত্রী। এরপর ভারতীয় দূতাবাসের তরফে তাঁদের স্থানীয় স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। ২৫ জানুয়ারি থেকে পরীক্ষা শুরু হয়। কিন্তু প্রথম দিকে কিছু ধরা পড়েনি। ২৭ জানুয়ারি গলায় চুলকানি শুরু হয়। সেটা ওঁদের জানাতেই দ্রুত তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রথমটায় তিনি কিছু জানতে পারেননি, পরে ৩০ জানুয়ারি তিনি খবর পান কেরলের ত্রিশূড়ের এক বাসিন্দা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরপরই চিকিৎসকরা তাঁর কাছে এসে তাঁকে জানান, তাঁর শরীরেই মিলেছে করোনা ভাইরাস।

২০ ফেব্রুয়ারি তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি আরও ১৪ দিন বাড়িতে ছিলেন।

ওই তরুণীর ক্লাসে ৬৫ জন পড়ুয়া ছিল। তাঁদের মধ্যে ৪৫ জনই ভারতীয়। তাঁরা সকলেই এখন অনলাইনে ক্লাস করছেন বলে বলে জানান তিনি।

.