হাইলাইটস
- জমে উঠেছে ৪৪ তম বইমেলা
- ৬০০টি বুক স্টল, ২০০টি লিটল ম্যাগাজিন স্টল
- পুরস্কৃত হন শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রচেত গুপ্ত, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা: বাংলা গান, বাংলা বই, বইমেলা জমাতে আর কী চাই? এতেও যদি সন্তুষ্ট না হয় হৃদয় তাহলে যেতেই পারেন বাংলাদেশ, আমেরিকা, আর্জেন্তিনার স্টলে। এভাবেই নানা ভাষা, নানা মত আর নানা পরিধানকে সঙ্গে নিয়ে বিবিধের মাঝে বইপোকাদের মিলনস্থল এক্কেবারে জ্যামজমাট 44th International Kolkata Book Fair-এর পঞ্চম দিনে। দেবী সরস্বতীর সৌজন্যে এবছর নির্দিষ্ট দিন অর্থাৎ ২৯ জানুয়ারির আগের দিন উদ্বোধন হয়েছে মেলার। রবিবাসরীয় বিকেলে তাই স্বাভাবিক ভাবে মানুষের ঢল সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কে। যেখানে বইয়ের ভিড়ে মিশে গিয়ে, নতুন-পুরনো বইয়ের গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে আট থেকে আশি মন খুলে উদযাপনে ব্যস্ত বই পাব্বণের। যা দেখে গিল্ডের পক্ষ থেকে সুধাংশুশেখর দে-এর খুশি মাখানো মন্তব্য, সারা বছরই বই কেনাবেচা চলে। কারণ, বাঙালির বই বিনে গতি নেই। কিন্তু এক প্রাঙ্গনে অজস্র ভাষার বইয়ের ছোঁয়া, গন্ধই যেন আলাদা। আশা, গত বছরের ভিড়কেও ছাপিয়ে যাবে এবছরের ভিড়। হাসি ফোটাবে প্রকাশকদের মুখে।
সেযুগে কিশোর ভারতী পড়ে বড় হননি এমন কিশোর হাতেগোণা। আজ সেই প্রকাশনা সংস্থা সম্মান জানাল কবি শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়, সাহিত্যিক প্রচেত গুপ্ত, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় সহ বেশি কিছু জনপ্রিয় কবি-সহিত্যিককে। উপস্থিত ছিলেন ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, অনীশ দেব, সমরেশ মজুমদারের মতো নামিদামি সাহিত্যিক। কথায় কথায় শ্রীজাত জানান, যে প্রকাশনার বই পড়তে পড়তে বড় হওয়া সেই প্রকাশনা যখন সম্মানিত করে তখন তার মজা এবং মেজাজ--দুটোই আলাদা।
প্রতি বছরের মতো এবছরেও প্যাভিলিয়ন ছিল বাংলাদেশের। এবছর বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের শতবর্ষ। তাঁকে সম্মান জানিয়ে এবছর তাঁর নামে প্যাভিলিয়ান খোলা হয়েছে। প্যাভিলিয়ানে বঙ্গবন্ধুর অসংখ্য ছবি, স্মৃতি, কর্মকাণ্ডের স্বাক্ষর। সেখানেও উপচে পড়া ভিড়।
আনন্দ পাবলিসার্স, দে'জ পাবলিসার্স, আজকাল-এর মতো নামি প্রকাশনা সংস্থার সামনে বইপ্রেমীদের ঢল চোখে পড়ার মতোই। পাশাপাশি রয়েছে অসংখ্য মাঝারি এবং ছোট বুক স্টলও। এবছরের মেলায় স্টলের সংখ্যা ৬০০টি। লিটল ম্যাগাজিন স্টল রয়েছে ২০০টি।
আগামী প্রজন্ম যাতে মুঠোফোন সরিয়ে ডুব দেয় বইয়ের পাতায় তার জন্য খোলা হয়েছে চিল্ড্রেন প্যাভেলিয়ান। হাঁদা-ভোঁদা, নন্টে-ফন্টে, বাচ্চু-বিচ্ছু বাঁটুল দি গ্রেট, মিকি মাউজ, ডোনাল্ড ডাক, অ্যালিস---সব্বাই হাজির সেখানে।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বালি দিয়ে গড়া হয়েছে বাংলার মনীষীদের মুখে। যাঁরা আমাদের শিক্ষায়-মমনে-স্মরণে-সংস্কৃতিতে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছেন।
বই যাঁর ভালোবাসা, বই যাঁর সঙ্গী, বই তাঁর বেয়োনেট, তিনি বই জঙ্গী--- একুশ শতকের প্রান্তে দাঁড়িয়ে আরও একবার তাই নতুন করে দুই মলাটের প্রেমে পড়ার এই আয়োজন। সেই আয়োজনে নবতম সংযোজন বুক লাভার্স ক্যাফে, বৃদ্ধাশ্রমে গিল্ডের বই দান।
একদিন এগিয়ে এল 44th International Kolkata Book Fair-এর উদ্বোধন
এবছর ৯টি তোরণ তৈরি হয়েছে ভালো ভাবে ঢোকা বেরোনোর জন্য। থিম গেট রাশিয়ার রাশিয়ার বিখ্যাত বলশয় থিয়েটারেের আদলে তৈরি। মেলায় দুটি হল নবনীতা দেবসেন আর গিরিশ কার্নাডের নামে। লিটল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়ন কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের নামে। রয়েছে শুভা দত্ত মিডিয়া কর্নার। অদ্রীশ বর্ধনের নামে রয়েছে মুক্তমঞ্চ। সাধারণের যাতায়াতের সুবিধার্থে রাজ্য সরকার অতিরিক্ত বাস পরিষেবা চালু রেখেছ প্রতিবছরের মতোই। থাকছে বিশেষ অটো ব্যবস্থা। গাড়ি পার্কিয়ের পাশাপাশি রয়েছে সাইকেল পার্কিং লট। মেলাকে পরিবেশ বান্ধব করতে এগিয়ে এসেছে নগর উন্নয়ন দফতর।