This Article is From Aug 21, 2019

দুই তরুণের স্বপ্ন ১১ বছরে আকাশ ছুঁয়েছে, জানুন ‘ওয়াও মোমো’র আশ্চর্য কাহিনি

২০০৮ সালে একটি রান্নাঘর ও দু’জন রাঁধুনিকে নিয়ে ব্যবসা শুরু। আজ ‘ওয়াও মোমো প্রাইভেট লিমিটেড’-এর ২৭১টি আউটলেট। এছাড়াও কেরলে রয়েছে তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি।

দুই তরুণের স্বপ্ন ১১ বছরে আকাশ ছুঁয়েছে, জানুন ‘ওয়াও মোমো’র আশ্চর্য কাহিনি

দুই তরুণ বন্ধু ভাবতেও পারেননি তাঁদের ব্যবসা এই উচ্চতায় পৌঁছবে এত দ্রুত।

এগারো বছর আগে দুই কলেজ পড়ুয়া সাগর দারিয়ানি ও বিনোদ হোমাগাই ৩০,০০০ টাকার মূলধনে এক ছোট্ট ব্যবসা শুরু করেন যাদবপুরে (Jadavpur)। ব্যবসাটা ছিল তিব্বতের জনপ্রিয় খাবার মোমোর (Momo)। সেই সময় কলকাতায় ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে মোমো। সেখান থেকে আজ তাঁদের ব্যবসা বাড়তে বাড়তে পৌঁছে গিয়েছে অনেক দূর। গোটা দেশের ১৩টি শহরে ২৭৪টি কিয়স্ক, ছোট ও মাঝারি আউটলেট ও বড় ইটিং জয়েন্ট। সংস্থায় কর্মরত ২,২০০ কর্মী। বর্তমান অর্থবর্ষের হিসেবে তাঁদের ব্যবসার টার্ন ওভার ২০০ কোটি! আপাতত সাগর ও বিনোদ পরিকল্পনা করছেন সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের সাহায্যে মোমো তৈরির। সংক্ষেপে এটাই ‘ওয়াও মোমো' (Wow Momo) সংস্থার বেড়ে ওঠার কাহিনি। যা সত্যিই হার মানায় রূপকথাকেও।

২০০৮ সালে একটি রান্নাঘর ও দু'জন রাঁধুনিকে নিয়ে ব্যবসা শুরু। আজ ‘ওয়াও মোমো প্রাইভেট লিমিটেড'-এর ২৭১টি আউটলেট। এছাড়াও কেরলে রয়েছে তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি।

হাওয়ায় উড়ন্ত অসংখ্য Mattresses! চমকে দেওয়া ভিডিও Viral

নিজেদের শুরুর দিনের কথা সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে শোনাতে গিয়ে বিনোদ বলছেন, ‘‘আমরা দু'জনেই ব্যবসায় একেবারে নবিশ ছিলাম। সবে মাত্র বিকম-এর ফাইনাল ইয়ারে পৱি তখন। সাগরের বাবার একটা দোকান ছি‌ল। রেজাল্ট বেরনোর আগে আমরা একটা ব্যবসা শুরু করলাম। এতে ঝুঁকি আছে জানতাম। ভেবেছিলাম যদি না চ‌লে, তাহলে চাকরিই করব।''

তিনি আরও জানাচ্ছেন, ‘‘আমি একজন নেপালি। আমরা বাড়িতেই মোমো তৈরি করতে পারি। তাই আমরা ভেবে দেখলাম এই খাবারের কথা, কেননা লক্ষ করেছিলাম কলকাতায় এর প্রচল‌ন বাড়ছে।''

টালিগঞ্জের গাছতলায় স্পেনসার্স রিটেইল হাইপার মার্কেটে তাঁদের প্রথম দোকান চালু হয়। যাদবপুরের বেস কিচেন থেকে মোমো সরবরাহ করা হত। ধীরে ধীরে ব্যবসা বাড়ে। দৈনিক আয় পৌঁছয় ২,০০০ টাকায়। বিনোদ স্টোর সাম‌লাতেন দু'জন পার্ট টাইম রাঁধুনিকে নিয়ে, অন্যদিকে সাগর লিফলেট বিলি করে, খদ্দেরদের সঙ্গে কথা বলে বিনামূল্যে নমুনা বিলি করে বেড়াতেন।

বিনোদ জানান, ‘‘আমরা প্রতি ১৫ দিন অন্তর আমরা একটা করে অফার দিতাম। তিনটে কিনলে একটা বিনামূল্যে। এতে বিক্রি ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় দুই রাঁধুনির মাইনের টাকা ওখান থেকেই উঠে আসে।''

ক্রমে এক থেকে দুই ও পরে সাউথ সিটি মলে আরও একটা দোকান। ধীরে ধীরে ব্র্যান্ড হয়ে ওঠে ‘ওয়াও মোমো'।

এরপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রতি মাসেই একটি করে দোকান খুলছে তারা। ২০১১ সালে প্রথমবার শহর থেকে বেরিয়ে সামনে তাকানো শুরু। বেঙ্গালুরুতে শুরু হয় দোকান।

বিনোদ জানাচ্ছেন, তিনি বা ‌সাগর কেউই ভাবতে পারেননি তাঁদের ব্যবসা এই কয়েক বছরে এই উচ্চতা ছোঁবে। তবে এই সাফল্য সহজ ছিল না। প্রতি মুহূর্তে লড়তে হয়েছে। পাশাপাশি ছিল নতুন জিনিস চেষ্টা করা। অনেক সময় কোনও কোনও জায়গায় ব্যবসাও মার খেয়েছে। কিন্তু সবথেকে বড় ধাক্কাটা এসেছিল ২০১১ সালে। পলিউশন লাইসেন্স না থাকায় যাদবপুরের ইউনিট বন্ধ করে দেয় পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড। কিন্তু হাল না ছেড়ে তিন মাস অন্যত্র সরে গিয়ে লাইসেন্স নিয়ে আবার যাদবপুরেই ফিরে আসা। বিনোদ জানাচ্ছেন, ‘‘কোনও কিছু সহজে না ছাড়া এবং পুরো দমে লড়াই করলে সাফল্য আসবেই।''

আপাতত ২০০ কোটি থেকে ১,০০০ কোটি টার্ন ওভারে পৌঁছনোই লক্ষ্য। আগামী পাঁচ বছরে সেই দিকেই তাকাতে চান বিনোদ ও সাগর। কথা চলছে বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির দুবাই ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে। ক্রমে বিদেশেও ব্যবসা ছড়িয়ে দিতে বদ্ধপরিকর তাঁরা।

পাশাপাশি চলছে প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো। স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের সাহায্যে উৎপাদন বাড়াতে চাইছেন তাঁরা। আগামী দু'বছরে সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে চান তাঁরা। কেননা বিদেশে শ্রমিকের বেতন অনেক বেশি। তাই সবটাই যন্ত্রের সাহায্যে করে ফেলাই সাশ্রয়ী।

মোমোকে নানা উপায়ে আরও নতুন নতুন স্বাদের সঙ্গে মিশিয়ে আকর্ষণীয় করে ফেলা হয়েছে। বিনোদ জানাচ্ছেন, ‘‘আমরা বার্গার মোমো বানাই। ডেজার্ট মোমো, চকোলেট মোমো এবং চিকেন ও চিজ মোমোও বানাই। এগুলি আপনি মুখে দিলে গলে যাবে।''



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)
.