‘সিন্ডিকেট রাজ’-এর বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন মোদী।
দুর্গাপুর: শুক্রবার পেশ করা হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট। যাকে ভোটের আগে ‘বিজেপির ইস্তেহার' বলে ইতিমধ্যেই দাবি করতে আরম্ভ করেছে বিরোধীরা। কৃষক, শ্রমিক, মধ্যবিত্তদের জন্য একেবারে ‘কল্পতরু' অবতারে অবতীর্ণ হয়েছে মোদী সরকার। ঢালাও জনমোহিনী প্রস্তাবের ভিড়েও কিছু তীক্ত প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে। তার মধ্যে একটি হল, দেশে কর্মসংস্থানের কী হবে? বেকারত্বের এই ভয়ঙ্কর দুর্দশা কি ঘুচতে পারে? আগামী এক দশকের কথা ভেবে এই বাজেট পেশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর ‘পাখির চোখ' এখন ২০৩০। বিরোধীরা এই ব্যাপারটি নিয়েও টিপ্পনী কাটতে ছাড়েনি। তাদের দাবি, আর এক মাসের পর এই সরকার নিজেই থাকবে না। অথচ, বাজেট পেশ করে দিয়েছে আগামী এক দশকের কথা ভেবে। এর থেকে হাস্যকর আর কিছু হয় না!
এমন একটি সময়ই রাজ্যে সভা করতে পা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বহু প্রতীক্ষিত সভাটি আজ শুরু হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগণার ঠাকুরনগর থেকে। সেখান থেকে তিনি সভা করতে যান দুর্গাপুরে। ঠাকুরনগরের মতই দুর্গাপুরের সভাও তিনি শুরু করলেন বাংলাভাষায়। প্রারম্ভিক সম্ভাষণ বাংলা দিয়ে করে তিনি সরাসরি হিন্দিতে চলে যান। প্রথমেই ঠাকুরনগরে তাঁর সভাকে কেন্দ্র করে ঘটা বিশৃঙ্খলতার জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন দুর্গাপুরের সভায় উপস্থিত জনতার কাছে। তারপরই শুরু হয় রাজ্যের শাসকদল তথা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগা। তিনি বলেন, “যেখানেই আমি যাচ্ছি, দেখতে পাচ্ছি হাজার হাজার মানুষ আমাকে অভিবাদন জানানোর জন্য প্রস্তুত। এর থেকে একটা জিনিসই মালুম হয় যে, বাংলার মানুষ এবার পরিবর্তন চাইছেন। তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, কীভাবে এতদিন ধরে তাঁদের ঠকিয়ে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা তাঁকে সিংহাসনচ্যুত করতে এবার বদ্ধপরিকর”।
‘সিন্ডিকেট রাজ'-এর বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন মোদী। বলেন, বাংলার মানুষ বুঝে গিয়েছেন, বাংলার উন্নয়ন করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মূল লক্ষ্য নয়। তিনি ও তাঁর দল কেবল সিন্ডিকেটের উন্নয়ন নিয়েই ব্যস্ত। সিন্ডিকেটের কোনও লাভ হবে না, এমন কোনও প্রকল্পের দিকে তৃণমূল তথা রাজ্য সরকার ফিরেও তাকায় না। অথচ, কেন্দ্রীয় সরকার কিন্তু আপনাদের কথাই কেবল ভাবে। গতকালের বাজেটের দিকেই তাকান। তাহলেই বুঝতে পারবেন, কীভাবে সরকার ভাবছে মধ্যবিত্ত, কৃষক ও শ্রমিকদের উন্নয়নের কথা। সেটা আয়করের দিক দিয়েই হোক বা কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নগদ দেওয়া নিয়েই হোক। আমাদের নীতি হল- ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ'। সেই নীতি মেনেই চলছি আমরা। এর পরেও চলব। আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখুন।
তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি'র মত প্রকল্প এ দেশে আর আগে কোনওদিন হয়েছে? বাংলার মানুষের জন্য উন্নয়নের জোয়ার আনার ব্যবস্থা করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই রাজ্যের রেলের জন্যও বরাদ্দ হয়েছে বহু কোটি টাকা অর্থ। আমি রাজ্যের প্রতিটি বিজেপি কর্মীকে বলছি আপনাদের পরিশ্রম ব্যর্থ হবে না। প্রদীপ নেভার আগে দপ করে জ্বলে ওঠে। লিখে রাখুন এই তৃণমূলের পরাজয় নিশ্চিত।