করোনা ভাইরাসের (COVID- 19) কবল থেকে সদ্য বেরিয়ে এসেছেন তিনি, কেমন ছিল ওই মারণ (Coronavirus) রোগের সঙ্গে করা ভয়ানক জীবনযুদ্ধের দিনগুলো? সেই অভিজ্ঞতাই হিউম্যানস অফ বোম্বের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ভাগ করে নিলেন সুমিতি সিং নামের গুজরাট নিবাসী এক তরুণী। তখন সবে গুজরাটে থাবা বসাচ্ছে করোনা, সেই সময়ই তাঁর শরীরে (Coronavirus Patient) ধরা পড়ে করোনা পজিটিভ। "যখন চিকিৎসকরা বললেন যে আমি আমেদাবাদের (Ahmedabad) দ্বিতীয় করোনা আক্রান্ত, তখনই আমার যেন হৃদয় ভেঙে গেল", আতঙ্কের স্বরে বলেন ওই তরুণী। সুমিতি জানিয়েছেন, কিছুদিন আগেই ফিনল্যান্ডে বেড়াতে গেছিলেন তিনি। তারপর সেখান থেকে দেশে ফিরেই অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন। তাঁর করোনা টেস্ট হয় এবং তাতে ধরা পড়ে যে শরীরে বাসা বেঁধেছে ওই মারণ রোগ। সঙ্গে সঙ্গে তরুণীকে পরিবারের সকলের থেকে আলাদা করে রাখা হয়। হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের চেষ্টায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন চলনে-বলনে ঝকঝকে ওই মেয়ে।
লকডাউনে রাজ্যে অভুক্ত স্বাধীনতাসংগ্রামী প্রফুল্ল চাকীর পরিবার, অন্ন জোগালেন মুখ্যমন্ত্রী
তবে নিজের সাক্ষাৎকারে সুমিতি জানান, প্রথম থেকেই করোনা নিয়ে সজাগ ছিলেন তিনি। তাই জ্বর জ্বর ভাব হওয়াতেই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সটান পরীক্ষা করান তিনি। সুমিতির কথা অনুযায়ী, আগেভাগে সতর্ক না হলে হয়তো জীবনের পথে ফিরে আসার মতো যথেষ্ট সুযোগ আর তাঁর থাকতো না।
নিজের করোনা-অভিজ্ঞতা এভাবেই শেয়ার করেছেন আমেদাবাদের বাসিন্দা সুমিতি সিং:
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন জেনে প্রথমে মনে-মনে বেশ ভেঙেই পড়েছিলেন গুজরাটি তরুণীটি। তারপর নিজেই ভেবেছিলেন এই যুদ্ধে তাঁকে জিততেই হবে। শুধু তাই নয়, তাঁর শরীর থেকে যাতে ওই রোগের সংক্রমণ আর কারও শরীরে না ছড়িয়ে পড়ে সেই বিষয়ে প্রথম থেকেই সতর্ক ছিলেন তিনি। তবে হ্যাঁ, চিকিৎসকরাও তাঁকে সুস্থ করার জন্যে অনেক কসরৎ করেছেন। তাই তো তিনি তাঁর চিকিৎসক ও নার্সদের "সুপারহিরো" বলে তারিফ করতে ভোলেননি।
করোনা লকডাউনে শুনশান সৈকত, কুমিরদের পোয়াবারো, খোলামেলা রোদ পোহাচ্ছে তারা
"যখন আমার শরীরে ওই ভাইরাস জাঁকিয়ে বসেছিল তখন আমি কোনওকিছুরই গন্ধ বা স্বাদ পাচ্ছিলাম না! তবে চিকিৎসক এবং নার্সরা রীতিমতো সুপারহিরোর মতো আমার চিকিৎসা করেছিলেন। প্রতি দুই ঘণ্টা অন্তর তাঁরা আমার তদারকি করেন এবং আমার যত্ন নেন", বলেন সুনিতি সিং।
১১ দিন ধরে চলে ওই যুদ্ধ, তারপর তাঁর শরীর থেকে করোনার জীবাণুকে মেরে ফেলতে সক্ষম হন চিকিৎসকরা। সবরকম পরীক্ষার ফলাফলই যখন নেতিবাচক আসে তখন তাঁকে হাসপাতাল থেকে সুস্থ বলে ঘোষণা করা হয়। "সেদিন, আমি আনন্দে চিৎকার করছিলাম, আমার গোটা পরিবারও আমার সঙ্গে সেলিব্রেট করছিল, এ যেন নতুন জীবন পাওয়ার আনন্দ", বলেন ওই তরুণী।
এখনও পর্যন্ত গুজরাটে মোট করোনা আক্রান্ত ৬১৭ জন। এর মধ্যে শুধু আমেদাবাদেই রয়েছেন ৩৪৬ জন রোগী।