জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিল বায়ুসেনা।
নিউ দিল্লি: মধ্যরাতে ভারতীয় বায়ু সেনার অতর্কিত হানায় ধুলোয় মিশে গিয়েছে বালাকোটে প্রায় ছয় একর জমির ওপর বিস্তৃত জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিদের ডেরা। শোনা যাচ্ছে ওই ডেরায় প্রায় ৬০০ মানুষ থাকার মত ব্যবস্থা ছিল।
পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের থেকে প্রায় ৮০ কিমি দূরে পাহাড়ের কোলে ঘন জঙ্গলে ঘেরা ছিল ওই জঙ্গিদের আস্তানা, সরকারি সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। সেখানে নাকি হল ঘর, ডরমেটারির পাশাপাশি সুইমিং পুল, প্রশিক্ষণ শিবির, জিম ইত্যাদিও ছিল।
বালাকোটে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ শিবির ছিল বলে জানা গিয়েছে।
প্রকাশিত ছবিতে লেখা রয়েছে ২০০৩-০৪ সালে ওই প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে উঠেছিল। অভিজ্ঞ আফগান যারা ইউএসএসআর-এর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল পাকিস্তানের যুব সম্প্রদায়ের প্রশিক্ষক হিসাবে তাদের নিযুক্ত করা হয়েছিল।
ছবিতে জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গিদের প্রধান হল ঘর দেখা যাচ্ছে, যেখানে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। সেখানে জইশ-এর পতাকা ও ব্যানারও দেখা যাচ্ছে।
বালাকোটের ওই আস্তানায় জইশ-ই-মহম্মদের পতাকা লাগানো ছিল।
"এই হলেই মুফতি আব্দুল রাউফ আসঘার ও অন্যান্য জঙ্গিরা ২০১৮ সালের পয়লা এপ্রিল মিলিট্যান্ট ক্যাডারের বার্ষিক প্যারেডে অংশগ্রহণ করেছিল", ছবির লেখা থেকে জানা গিয়েছে।
ছবিতে সিঁড়িতে ইউএসএ, ইউকে এবং ইজরায়েলের পতাকা আঁকা থাকতে দেখা যাচ্ছে।
সিঁড়িতে ইউএসএ, ইউকে এবং ইজরায়েলের পতাকা আঁকা বালাকোট ক্যাম্পের সিঁড়ি।
সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে ওই ক্যাম্পের দেখভালের দায়িত্ব ছিল পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স বা আইএসআই-এর ওপর। ওই আস্তানায় ২৫০-এর বেশি জঙ্গির প্রশিক্ষণ চলছিল।
আইএসআই দ্বারা সুরক্ষিত জইশ-ই-মহম্মদের বালাকোট ক্যাম্প।
ছবিতে একটা অস্ত্র মজুতের ঘর দেখা যাচ্ছে যেখানে ২০০-এর বেশি একে রাইফেল, অজস্র রাউন্ড গুলি, হ্যান্ড গ্রেনেড, বিস্ফোরক, ডিটনেটর সঞ্চিত ছিল।
বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের অস্ত্রের আড়ত।
ওই ক্যাম্পের মাথা ছিল মৌলানা ইউসুফ আজহার ওরফে ওস্তাদ ঘৌরি, যিনি সম্পর্কে জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের শ্যালক। আজ এয়ার স্ট্রাইকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আজ মুক্তি পাওয়া ছবিতে মৌলানা ইউসুফ আজহারের এসিউভি-র ছবি দেখা গিয়েছে।
মৌলানা ইউসুফ আজহারের এসিউভি।
ওই আস্তানায় জঙ্গিদের অস্ত্র, বিস্ফোরক, সুইসাইড বোম্বিং, রণ কৌশলের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। কুনহার নদীর ধারে অবস্থিত ওই ডেরায় জলে বিভিন্ন কৌশলও শেখানো হত।
মাসুদ আজহার এবং অন্যান্য নেতারা সেখানে ধর্ম সংক্রান্ত মতবাদের প্রশিক্ষণ দিতে সেখানে উপস্থিত হত।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জঙ্গি হানায় ৪০জন সেনা জওয়ানের মৃত্যুর বদলা নিতে আজ ভোর রাতে পাকিস্তানে জঙ্গিদের ডেরায় হামলা চালিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা।