কলকাতা: ডুব দে মন রসের বলে। কারণ? আজকের দিন ভা-রী মিষ্টি। কেন? শিশু দিবস বলে। উঁহু, ভাবুন ভাবুন! সন-তারিখ মাসের হিসেব বলছে, ২০১৭-য় আজকের দিনে বাংলার রসগোল্লা (Rosogolla) জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশন (GI Status) বা GI স্টেটাস পেয়েছিল। সত্যিই, খেতে যতই তুলতুলে হোক, এই একরত্তি দুধসাদা রসে চোবানো ছানার বল নিয়ে বাংলা-ওড়িশার দড়ি টানাটানিতে আজই জিতেছিল বাংলার নবীন ময়রার রসগোল্লা। পরে ওড়িশা ফের জিআই স্টেটাসের জন্য আবেদন করলে চলতি বছরের ২৯ জুলাই এই বিশেষ সম্মান পায় ওড়িষার রসগোল্লা। কথিত আছে, জগন্নাথ দেবের ছাপান্ন ভোগের অন্যতম ভোগ নাকি এই রসগোল্লা। ওড়িশা যার নাম দিয়েছিল ক্ষীর মোহন। পরে পরিচিত হয় 'পহালা রসগোল্লা' নামে। পহালা গ্রামের নাম অনুসারে। ইহাই নাকি রসগোল্লা নাম নিয়ে পরে ছড়িয়ে পড়ে বাংলা হয়ে বিশ্বময়। তাকেই নাকি বাংলা জোর করে কেড়ে নিয়েছে 'আমার' বলে।
সত্যিই কী বিচিত্র এই মিষ্টি উপাখ্যান। বাংলার দাবি, ১৮৬৮ সালে কলকাতার বিখ্যাত নবীন চন্দ্র দাস নাকি স্পঞ্জের এই রসগোল্লার আবিষ্কর্তা। পরিচালক পাভেলের তৈরি নবীন চন্দ্র দাশের বায়োপিক বলছে, ভাবী স্ত্রী ক্ষিরোদমণি দেবীর অনুরোধে। ছানায় পাক দিয়ে তাকে রসে ফেলে তৈরি এই মিষ্টি তাই রসের গোল্লা বা বল, রসগোল্লা নামেই বিখ্যাত। বাগবাজারে নবীন চন্দ্র দাসের তৈরি এই রসগোল্লা পাওয়া যেত। পরে তারা বিখ্যাত হয় সারা কলকাতায়। তাঁর বাড়ি এখন 'রসগোল্লা ভবন' নামেই পরিচিত।
রবীন্দ্র সরোবরের দূষণে, পর্ষদের রিপোর্টে অসঙ্গতি বললেন পরিবেশবিদ
মিষ্টি দিনটিকে আরও মধুর করতে গত দু-বছর রাজ্যের সমস্ত মিষ্টি বিক্রেতারা এই দিনটিকে উদযাপন করছেন রসগোল্লা দিবস হিসেবে। নিউটাউনে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তৈরি মিষ্টি হাব-এ আজকের দিনে রকমারি রসগোল্লা তৈরি এবং বিক্রি হয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও টুইটে স্মরণ করেছে বাংলার এই জয়কে স্মরণ করে---
তবে রসগোল্লার জন্মদাতার দাবিদার অনেক। মিষ্টির ইতিহাসে হাইকোর্টের সামনের মিষ্টির দোকানের হারাধর ময়রা, বর্ধমানের গোপাল ময়রার নামও নাকি রসগোল্লার জনক হিসেবে উল্লেখিত আছে। তবে ক্যানড রসগোল্লার আবিষ্কার করে বাংলার অমূল্য মিষ্টি ভান্ডারের সেরা মিষ্টিকে বিশ্বজনীন করেছেন নবীন চন্দ্র দাসের ছেলে কৃষ্ণচন্দ্র দাশ। যিনি কে সি দাশ নামে দুনিয়া খ্যাত।