স্টারলাইট প্ল্যান্ট থেকে 3 কিমি দূরের গ্রামের কুয়োতে দূষিত জলের হদিশ।
তুতিকোরিন:
তুতিকোরিনের স্টারলাইট প্ল্যান্ট থেকে 3 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রাম সিলভারপুরম। যে গ্রামের প্রত্যেকটি ঘরে অন্তত একজন করে ক্যানসারের রোগী রয়েছে।
31 বছর বয়সী রামলক্ষ্মীর স্বামী মুরুগান তিনতুতিকোরিনের স্টারলাইট প্ল্যান্ট থেকে 3 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রাম সিলভারপুরম। যে গ্রামের প্রত্যেকটি ঘরে অন্তত একজন করে ক্যানসারের রোগী রয়েছে। বছর আগে অন্ত্রের ক্যানসারে মারা যান। এখন তিনি নিজের জীবন নিয়ে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন দাঁতে দাঁত চেপে। তিনি প্রতি মাসে রোজগার করেন 2500 টাকা। দুটি সন্তান তাঁর তামিল সেলভম এবং তামিল সেলভি। রামলক্ষ্মীর ছেলে পুলিশ অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখে। তাঁর মেয়েটি অবশ্য এখনও ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্পূর্ণ পরিকল্পনাটি করে উঠতে পারেনি।
রামলক্ষ্মীর ঠিক পাশের বাড়িতেই থাকেন মীরা। সম্প্রতি তাঁর স্বামী সুবিয়াহ যকৃতের ক্যানসারে মারা যান। স্বামীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে পুরো নিঃস্ব হয়ে যায় মীরার পরিবার। তাঁর ছেলেকে স্কুল ছেড়ে কাজে যোগ দিতে হয়। সে এখন ট্রাকের ক্লিনার হিসাবে কাজ করে। নিজের একমাত্র কন্যাটিকে কোনওমতে স্কুলে পাঠায় মীরা।
ওই একই রাস্তায়, কয়েকটি বাড়ি পরে থাকে হেলেন হেপসিবাহ। তিনি ভুগছেন কিডনির ক্যানসারে। সম্প্রতি একটি অপারেশনের পর হেলেনের একটি কিডনি বাদ দেওয়া হয়। ছয় বছর আগে, হেলের বন্ধু এ রাজাসেলভি, ওই একই এলাকায় বাড়ি তাঁর, তাঁর মা ভেলামেলকে হারায় গর্ভাশয়ের ক্যানসারের ফলে।
2000 বাসিন্দার বসবাসকারী গ্রাম সিলভারপুরমে মোট ষাটটি বাড়ির মধ্যে প্রত্যেক বাড়িতেই ক্যানসার রোগী রয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা যার জন্য সরাসরি দায়ী করে স্টারলাইট প্ল্যান্টকে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের একটি গবেষণার জন্য স্টারলাইট প্ল্যান্ট সংলগ্ন এলাকার অন্তত 15টি স্থান থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করে।
তামিলনাড়ুর দূষন নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এনডিটিভিকে জানিয়েছে, জলের মধ্যে সীসার মতো নিউরোটক্সিনের পরিমাণ নিরাপদ সীমার থেকে 39 থেকে 55 গুণ বেশি।
বিভিন্ন রাসায়নিক এইভাবেই গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে মিশে মিশে সিলভারপুরমের ভূর্গভস্থ জলকে দূষিত করে দিয়েছে। মহম্মদ ইকবার নামের এক গ্রামবাসী এনডিটিভিকে জানিয়েছে, “আমরা আগে কুয়ো থেকে জল নিতাম। কিন্তু, এখন আর সেটা করতে পারি না। তার ফলে, পাইপের অনিয়মিত জল সরবরাহের উপর নির্ভর করতে হয়”।