সোমবার ভোপালে মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস কার্যালয়ের সামনেই ওই দাবিতে পোস্টার পড়লেও, পরে সেটিকে সরিয়ে ফেলা হয়
হাইলাইটস
- ভোপালে মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস কার্যালয়ের সামনে পড়ে ওই পোস্টার
- গত সপ্তাহেই কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল গান্ধি
- কংগ্রেস সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া
নয়া দিল্লি: কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে রাহুল গান্ধির ইস্তফার পর এবার ওই পদে বসানো হোক জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে (Jyotiraditya Scindia), সোমবার ভোপালে মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস কার্যালয়ের সামনেই ওই দাবিতে পোস্টার (Jyotiraditya Scindia Poster) পড়ে, যদিও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেটি সরিয়ে ফেলা হয়।“শ্রদ্ধেয় রাহুল গান্ধির প্রতি আবেদন যে আমাদের দেশের গর্ব এবং অভিজ্ঞ কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি (Congress President) পদে বসানো হোক”,পোস্টারে লেখা হয় এই কথাগুলিই। এর আগে রবিবারই লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের শোচনীয় ফলের দায় কাঁধে নিয়ে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।
এমনকি এই পোস্টার দেখে এটাও বোঝা যাচ্ছিল যে জ্যোতিরাদিত্যকে কংগ্রেসের প্রধান পদে বসানোর ব্যাপারে একটি বড় অংশের সমর্থন আছে।
“যদি একজন নতুন কংগ্রেস সভাপতি নিয়োগ করা হয় তবে তাঁকে অবশ্যই বয়সে নবীন ও কাজে অভিজ্ঞ দুইই হতে হবে, যে দাবি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংও তুলেছেন। আমাদের নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া একজন তরুণ নেতা, যিনি যথেষ্ট অভিজ্ঞ এবং ফলপ্রসূ নেতাও। পাশাপাশি তিনি রাহুল ও সনিয়া গান্ধিরও ঘনিষ্ঠ, সুতরাং তিনি পরবর্তী কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে একটি ভাল পছন্দ হতে পারেন”,বলেন মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী প্রদুম্ন সিং তোমার।
গত সপ্তাহেই দেশের জনগণের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লিখে রাহুল গান্ধি (Rahul Gandhi) কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন।তিনি বলেন,দলের নেতাদের উপর পরবর্তী কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি, এর মধ্যে তিনি অংশ নেবেন না। তারপর থেকেই একের পর এক কংগ্রেস নেতা নিজেদের পদ থেকে ইস্তফা (Congress resignation) দেন।
রবিবার, সিন্ধিয়া ট্যুইটে জানান,“জনতার রায় মেনে ও হারের দায় স্বীকার করে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দিলাম আমি,রাহুল গান্ধির হাতে আমি আমার ইস্তফা পত্র তুলে দিয়েছি।আমাকে ওই গুরুদায়িত্ব দিয়ে ও দলের হয়ে কাজ করার সুযোগ দিয়ে রাহুল গান্ধি যেভাবে আমার প্রতি ভরসা রেখেছিলেন সেই জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাই আমি”।
যদিও জ্যোতিরাদিত্যের সমর্থনে পড়া ওই পোস্টারকে সকলে সমর্থন করছেন না।মধ্যপ্রদেশ মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের ঘনিষ্ঠ সজ্জন সিং বর্মা বলেন এই পোস্টার জ্যোতিরাদিত্যের অতি উৎসাহী সমর্থকদের কাণ্ড। বরং তিনি প্রিয়ঙ্কা গান্ধিকে কংগ্রেসের পরবর্তী সভাপতি করার জন্যে দাবি তোলেন।
আশ্চর্য্যজনকভাবে, সিন্ধিয়ার আস্থাভাজন বলে পরিচিত গোবিন্দ সিং রাজপুত এই পোস্টারের সমালোচনা করেন।
তবে একথা কারো অজানা নয় যে কমল নাথ ও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মধ্যে সবসময়ই একটি চাপা দ্বন্দ্ব কাজ করে।কিছুদিন আগে একটি ক্যাবিনেট বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের সঙ্গে কথা কাটাকাটিও হয় সিন্ধিয়ার।
লোকসভা নির্বাচনের আগে, উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধি ভদরাকে দেন রাহুল গান্ধি।কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই রাজ্য থেকে মাত্র ১টি আসনে জেতে কংগ্রেস।সেখানে উত্তরপ্রদেশের মোট ৮০টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৬২ টি আসনে জয়লাভ করে বিজেপি।কংগ্রেসের গড় বলে পরিচিত আমেঠিতে হেরে যান রাহুল গান্ধি, স্মৃতি ইরানির কাছে রাহুলেও এই হার কংগ্রেসের কাছে বিরাট অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গোটা দেশে সামগ্রিকভাবেও কংগ্রেসের অত্যন্ত খারাপ ফল হয়। মোট ৫৪৩ টি আসনের মধ্যে মাত্র ৫২টি আসন জেতে কংগ্রেস।আর এই ফলের পরেই গত ২৫ মে দলের হারের দায় নিজের কাঁধে নিয়ে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল গান্ধি।