This Article is From Oct 06, 2018

Durga Pujo 2018- বাড়িতে চায়নি, তবু শিল্পকে ভালোবেসেই প্রতিমা গড়ে চলেছেন কুমোরটুলির চায়না পাল, মালা পালেরা

জনপ্রিয় প্রতিমা শিল্পী চায়না পাল, সম্প্রতি চিন পাড়ি দিয়েছিলেন। চিনের জাদুঘরে তাঁর সৃষ্ট দু’টি মূর্তি স্থান করে নিয়েছে। রয়েছেন শিল্পী মালা পাল। ছোট আকারের মূর্তি গড়ার জন্য বেশ জনপ্রিয় তিনি।

Durga Pujo 2018- বাড়িতে চায়নি, তবু শিল্পকে ভালোবেসেই প্রতিমা গড়ে চলেছেন কুমোরটুলির চায়না পাল, মালা পালেরা
কলকাতা:

কুমারটুলির সংকীর্ণ রাস্তা বরাবর হেঁটে যেতে যেতে আশ্চর্য এক শিল্প কারখানার মধ্যে দিয়ে যেন সফর চলছে মনে হয়। দুর্গাপুজোর আগে আগে কলকাতার প্রতিমা শিল্পের এই বিশাল কারখানায় এক কর্মযজ্ঞ চলছে সর্বক্ষণ। এদিক ওদিক তাকালেই দেখা মিলছে ব্যস্ত প্রতিমাশিল্পীদের। সাধারণ ভাবে পুরুষ শিল্পীর সংখ্যাই এখানে প্রচুর। মাটি দিয়ে প্রতিমা নির্মাণের কাজে উত্তরাধিকার সূত্রেই এই পেশা বেছে নিয়েছেন বাড়ির ছেলেরা। কিন্তু মহিলারা? সংখ্যাটা কম হলেও কুমোরটুলিতে মহিলা প্রতিমা নির্মাণ শিল্পীরাও কাজ করে চলেছেন অভাবনীয় নৈপুণ্যে।

জনপ্রিয় প্রতিমা শিল্পী চায়না পাল, সম্প্রতি চিন পাড়ি দিয়েছিলেন। চিনের জাদুঘরে তাঁর সৃষ্ট দু’টি মূর্তি স্থান করে নিয়েছে। রয়েছেন শিল্পী মালা পাল। ছোট আকারের মূর্তি গড়ার জন্য বেশ জনপ্রিয় তিনি।

"ছোটোবেলায় বাবার সঙ্গে তাঁর স্টুডিওতে যেতাম, তাঁর কাজ ভালো লাগত। কিন্তু এই কাজ করানোতে আমাকে কোনও উৎসাহ দেননি, মেয়ে বলেই। পরে যখন তিনি দেখলেন আমার দাদারা নিজের নিজের চাকরিতে ব্যস্ত, তিনিও অসুস্থ, তাঁর মনে হল আমি এই অভাবটা পূরণ করতে পারি। 14 বছর বয়সে তিনি মারা যাওয়ার পর বাবার কর্মশালার দায়িত্ব নিই আমি” বলেন চায়না। বর্তমানে আটজন সহযোগী শিল্পীকে নিয়ে বাগবাজারে নিজের স্টুডিওতে কাজ করেন তিনি।

কাজের গোড়ার দিকের সমস্যার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন: "খুবই সমস্যা হত। আমি জানতাম না কীভাবে গোটা প্রতিমা তৈরি হয়। কিন্তু এই কাজের প্রতি ভালোবাসা থেকেই আমি তাড়াতাড়ি শিখেও যাই।” এবং সত্যিই তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি চায়নাকে। একই সঙ্গে নিজের কাজ চালান, রান্না করেন আর নিজের 95 বছর বয়সী মা’কে দেখভালও করেন।

প্রতিমা তৈরির কাজে মহিলাদের অংশগ্রহণের পথ অনেক সহজ করে তুলেছেন চায়না। নিজের ‘অর্ধনারীশ্বর’ শিল্প সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, "আমি 2015 সালে ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের মানুষদের অনুরোধে এই প্রতিমা তৈরি করি। কিছু মানুষের ভালো লাগে নি, কিন্তু তাতে আমার কিছু এসে যায় না। আমার মনে হয় সকল মানুষের তাঁদের নিজের মতো করে ঈশ্বরকে পুজো করার অধিকার আছে। আমি আর কাউকে এরকম মূর্তি বানাতে আর শুনিনি।”

অন্যের কথায় কান দেন না শিল্পী মালা পালও। 1985 সাল থেকে কাজ করছেন তিনি। বাবার মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল 15। সে সময়েই এই পেশায় আসতে তাঁকে উৎসাহ দেন তাঁরই ভাই গোবিন্দ পাল।

মালা পাল বলেন, “আমি সব রকমের প্রতিমাই ছোট আকারে বানাতে পারি। বড় বড় চোখের সাবেকি প্রতিমা হোক বা আধুনিক নকশার ঠাকুর। ইউরোপের পাশাপাশি মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডা, শিকাগোর মতো আমেরিকার শহরে এই প্রতিমার কদর সবথেকে বেশি।

মালা আরও বলেন, "আমি স্বীকৃতি ও পুরস্কার দুই’ই পেয়েছি। কিন্তু রাজ্য সরকারের তরফে অন্য কোনো সহায়তা পাইনি। সরকারের অনুরোধ, আমি সরকারি আর্ট কলেজে কর্মশালা সংগঠিত করি, কিছু অতিরিক্ত টাকা আসে। এখানেও অনেক শিক্ষার্থী আসেন। কিন্তু এত ছোট পরিসরে সবাইকে জায়গাও দিতে পারি না। এখানে তাঁদের জন্য কোনও শৌচালয়ের ব্যবস্থা নেই।”

কাদামাটি দিয়ে ঠাকুর গড়া আর তাতে সুন্দর করে নকশা কাটা দক্ষ আঙুলের কাজ। কিন্তু বাঁশ আর কাঠ দিয়ে বিশাল মূর্তির মৌলিক কাঠামো তৈরি করতে অপরিমেয় শক্তি দরকার। মালার বাবা চাননি তাঁর মেয়ে এই পেশায় আসুক। মালা জানাচ্ছেন, প্রতিমা তৈরি কঠিন পরিশ্রমের কাজ। তবে এই শিল্পের প্রতি ভালোবাসা থাকলে আর শিল্পের প্রতি নিষ্ঠা থাকলে তবেই আরও মেয়ের এই কাজে এগিয়ে আসা উচিৎ।



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদিত করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে.)
.