ছ’বছর আগে ৯৪ বছর বয়সে প্রয়াত বানে খানকেও নোটিশ পুলিশের।
ফিরোজাবাদ: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (CAA) প্রতিবাদে উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) ব্যাপক হিংসা (Violence In Uttar Pradesh) ছড়িয়েছিল দু'সপ্তাহ আগে। সেই ঘটনায় ২১ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন বহু সাধারণ নাগরিক ও পুলিশকর্মীরা। সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংসেরও অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি কিছু পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠোর পদক্ষেপ করার। উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমে ফিরোজাবাদে সংঘর্ষে চার জনের মৃত্যু হয় ২০ ডিসেম্বর। ৩৫টি মামলা রুজু হয়। ২৯ জনের নাম উঠে আসে তাতে। তার মধ্যে ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ফিরোজাবাদ পুলিশ। স্থানীয় পুলিশ অন্তত ২০০ জনকে নোটিশ পাঠিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তিদের প্রমাণ করতে হবে তাঁরা এলাকার শান্তিভঙ্গের জন্য কোনও পদক্ষেপ করেননি। প্রসঙ্গত, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এর আগে জানিয়েছিলেন, ‘‘আমরা বদলা নেব।''
যাঁদের নোটিশ পাঠানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বানে খান। তিনি ছ'বছর আগে ৯৪ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন! এতেই শেষ নয়। আরও দুই নবতিপর বৃদ্ধকেও নোটিশ পাঠিয়েছে পুলিশ— ৯৩ বছরের ফসাহত মীর খান ও ৯০ বছরের সুফি আনসার হুসেন। প্রথমজন অসুস্থ অবস্থায় শয্যাসায়ী। দ্বিতীয় জন নিউমোনিয়ায় ভুগছেন। সদ্য দিল্লির এক হাসপাতাল থেকে ফিরেছেন।
প্রসঙ্গত, ফসাহত মীর খান ফিরোজাবাদের একটি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা। সুফি আনসার হুসেন স্থানীয় মসজিদের কেয়ারটেকার ছিলেন ছয় দশক ধরে। দু'জনেই স্থায়ী শান্তি কমিটির সদস্য। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে যে কমিটি পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলে।
ওই দু'জনকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাজিরা দিতে বলা হয়। ১০ লক্ষ টাকার বন্ড দিয়ে জামিনের আবেদন করতে বলা হয় তাঁদের। // উত্তরপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, এটি ভ্রান্তিবশত হয়েছে। এই ভুল সংশোধন করে নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে ফিরোজাবাদের ম্যাজিস্ট্রেট কুঁয়ার পঙ্কজ সিংহ বলেন, তাঁদের উপরে শান্তি বজায় রাখার প্রভূত চাপ রয়েছে। বিভিন্ন থানা থেকে পাওয়া রিপোর্ট থেকে অন্তর্বর্তী তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি জানিয়ে দেন, ‘‘কোনও বয়স্ক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে না।''
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, ২০১৫ সালের আগে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে এদেশে আসা অমুসলিম শরণার্থীরা ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার আবেদন করতে পারবেন। সমালোচকদের দাবি, এই আইন বৈষম্যমূলক এবং সংবিধানে বর্ণিত দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির পরিপন্থী।