গত শনিবার রাত্রি প্রায় ১.৫০ নাগাদ পার্ক স্ট্রিটের কাছে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
কলকাতা: Jaguar Mercedes clash by Arsalan Parvez: জাগুয়ারের সঙ্গে মার্সিডিজের ধাক্কায় দুই বাংলাদেশি নাগরিকের মারা যাওয়ার চার দিন পরে মামলায় একটি চমকপ্রদ মোড় দেখা গিয়েছে। কলকাতার বিখ্যাত বিরিয়ানি সংস্থার পরিবারের এই ঘটনায় জড়িয়ে পড়া এবং টানা তদন্তের পরে জানা যাচ্ছে, ধৃত আরসালান পারভেজ আসলে গাড়িটি চালাননি! জাগুয়ারের স্টিয়ারিং আরসালানের হাতে নয়, বরং তাঁর বড় ভাই রাঘিবের হাতে ছিল। কলকাতা পুলিশ বুধবার জাগুয়ার ও মার্সিডিজের সংঘর্ষে দুই বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা ও তিনজনকে আহত করার অভিযোগে আসল আসামী আরসালান পারভেজের বড় ভাই রাঘিব পারভেজকে গ্রেফতার করেছে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কেন পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন আরসালান!
১২ দিনের পুলিশ হেফাজতে বিরিয়ানি রেস্তোরাঁ মালিকের ছেলে
২১ বছর বয়সী ছোট ভাই আরসালান পারভেজ দাদাকে বাঁচাতে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ! আরসালান পুলিশকে জানিয়েছেন যে, তিনিই গাড়ি চালাচ্ছিলেন এবং পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণও করেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার কয়েক ঘন্টা পরেই রাঘিব পারভেজ (২৫) দুবাইয়ে পালিয়ে যান। বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে ও পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে এই ঘটনায় তাঁর জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা মুরলিধর শর্মা বলছেন, “টানা তদন্তের পরে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে যে আরসালানের বড় ভাই রাঘিব গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। বেনিয়াপুকুরের কাছে বুধবার দুপুরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার কলকাতায় ফিরে এসে একটি নার্সিংহোমে গেলে রাঘিবকে গ্রেফতার করা হয়।” দুই ভাই এবং তাদের কাকা যারা স্পষ্টতই ঘটনার পট পরিবর্তন করতে ও পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টায় জুড়েছিলেন, তিনজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কলকাতায় জাগুয়ার ও মার্সিডিজের সংঘর্ষ, নিহত দুই বাংলাদেশী
গত শনিবার রাত্রি প্রায় ১.৫০ নাগাদ পার্ক স্ট্রিটের কাছে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত শেকসপিয়র সরণি বা থিয়েটার রোড ধরে গাড়ি চালিয়ে আসছিলেন। একটি ক্রসিংয়ের কাছে এক মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় তাঁর গাড়ির। জাগুয়ার গাড়িটি প্রতি ঘন্টায় প্রায় ১১০ কিমি বেগে চালাচ্ছিলেন অভিযুক্ত। দুই বিলাসবহুল গাড়িই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং জাগুয়ারটি পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের ধাক্কা মারে।
সিসিটিভি ফুটেজে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে এবং পুলিশের কাছেও এই বিষয়টি স্পষ্ট যে, মার্সিডিজ গাড়িটি এই তীব্র সংঘর্ষে ধাক্কা মারার পর দুবার উলটে যায় এবং ট্রাফিক পুলিশের একটি কিয়স্কের সামনে গিয়ে পড়ে।
পুলিশ জানাচ্ছে, আত্মসমর্পণকারী আরসালান পারভেজের দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। মুরলিধর শর্মা বলেন, “যদি এয়ার ব্যাগটি খুলে যায় থাকে, তবে চালকের শরীর/মুখের উপর প্রভাব পড়ে যাকে আমরা সিলিকন বাইট বা এয়ার ব্যাগ স্ক্র্যাপ হিসাবে জানি। আরসালানের ডাক্তারি পরীক্ষাতে এমন কোনও চিহ্নই ধরা পড়েনি। মানে বোঝাই যাচ্ছে, গাড়িটি পারভেজ নয়, অন্য কেউ চালাচ্ছিলেন।”