Lashkar E Taiba: ২৬/১১ মুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সইদকে পাকিস্তানে গ্রেফতার করা হয়
হাইলাইটস
- হাফিজ সইদকে ৬ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে পাকিস্তানে
- যদিও এরপরেও সন্ত্রাসবাদে দমনে পাকিস্তানের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ভারত
- পাকিস্তানের নিশ্চিন্ত আশ্রয়ে রয়েছে সন্ত্রাসবাদীরা, অভিযোগ ভারতের
নয়া দিল্লি: ২৬/১১-এর হামলার মূল চক্রী হাফিজ সইদকে (Hafiz Saeed) যতই পাকিস্তানের একটি আদালত ৬ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত (Hafiz Saeed Arrest) করুক না কেন, সন্ত্রাসবাদ দমনে ওই দেশের সদিচ্ছা সম্বন্ধে যথেষ্ট সন্দিহান ভারত। ইমরান খানের দেশকে (Pakistan) সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসবাদের বাড়বাড়ন্তকে রুখতে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে তাদের। সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে নিশ্চিত পদক্ষেপও করতে হবে। জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার (Lashkar E Taiba) প্রতিষ্ঠাতা এবং জামাত-উদ-দাওয়ার প্রধান হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে মু্ম্বইয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালিয়ে ১৬৬ জনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করার অভিযোগ রয়েছে। তাকে ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। একটি সরকারি সূত্র জানিয়েছে, "আমরা সংবাদমাধ্য়ম সূত্রে জানতে পেরেছি যে পাকিস্তানের আদালত সন্ত্রাসবাদীদের অর্থ জোগানোর অভিযোগে রাষ্ট্রসংঘের তরফে ঘোষিত ও আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী হাফিজ সইদকে দণ্ডিত করা হয়েছে। আসলে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করার জন্যে পাকিস্তানের উপর দীর্ঘ সময় ধরেই আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা বহাল ছিল, তারই অংশ হিসাবে ওই পদক্ষেপ করেছে তারা"।
"পাক-মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলো ভারতে হামলার সুযোগ খুঁজছে": আমেরিকা
ওই সূত্র আরও বলেছে, "তবে এটা খেয়াল করতে হবে যে, ফিনানশিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স বা এফএটিএফের পূর্ণাঙ্গ বৈঠকের ঠিক আগেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পাকিস্তানের তরফে। সুতরাং, ওই কারণেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। এখন এটা দেখতে হবে যে, পাকিস্তান তার নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চলগুলি থেকে অন্যান্য সমস্ত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন এবং তার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় কিনা। পাশাপাশি মুম্বই ও পাঠানকোট সহ আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদী হামলার অপরাধীদের দ্রুত বিচারের জন্য হাজির করবে কিনা পাকিস্তান সেদিকেও লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন"।
হাফিজের কারাদণ্ড সত্যিই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের কঠোর পদক্ষেপ নাকি নেহাতই লোক দেখানো ব্যবস্থা, ইতিমধ্যেই সেই নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি প্যারিসে ফিনানশিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের ৬ দিনের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন হতে চলেছে । এই আন্তর্জাতিক সংস্থা জঙ্গি কার্যকলাপে অর্থ জোগানোর বিরুদ্ধে দুনিয়া জুড়ে নজরদারি চালায় এবং প্রয়োজনে সন্ত্রাসবাদ দমনে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়।
FATF: সন্ত্রাস দমনে পদক্ষেপ না করায় ভুগতে হবে পাকিস্তানকে, হুঁশিয়ারি আমেরিকার
২০১৮-র জুন থেকে পাকিস্তান ওই সংস্থার ধূসর তালিকা বা গ্রে লিস্টে। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে আর্থিক সাহায্য বা মদত দেওয়ার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে এফএটিএফ। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে পাকিস্তানের ঋণ ও আর্থিক সাহায্য পাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হবে। এমনকী, ওই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পাকিস্তানের বাণিজ্যের পথও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সব মিলিয়ে, আর্থিক ভাবে একঘরে হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছে ওই দেশ। আগামী রবিবার এফএটিএফের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে পাকিস্তানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। তার আগে হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে আচমকা এই পদক্ষেপ কতটা লোক দেখানো আর কতটাই বা সদিচ্ছাপূর্ণ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই।
হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তবুও বহু বছর ধরে পাকিস্তানে অবাধে চলাফেরা করতে পারত সে, এই ঘটনায় ভারতের তরফে বারবার আপত্তি জানিয়ে পাকিস্তানকে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত গত বছরের জুলাইয়ে হাফিজ সইদকে গ্রেফতার করা হয়। সেই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করেন যে তাকে "১০ বছর ধরে সন্ধানের পরে" শেষ পর্যন্ত ধরা সম্ভব হয়েছে।