ভুক্তভোগীর পরিবার দাবি করেছে যে ফোনে মেয়েকে 'তিন তালাক' দেওয়া হয়েছিল।
শ্রাবস্তী, উত্তরপ্রদেশ: তিন তালাকের (triple talaq) অভিযোগ দায়ের করতে যাওয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যায় উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) শ্রাবস্তী জেলায় ২২ বছরের এক মহিলাকে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পুড়িয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠল। 'তিন তালাক' প্রথা ব্যবহার করে তাঁকে তালাক দেন কর্মসূত্রে দূরে থাকা তাঁর স্বামী, ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে যান ওই মহিলা । আশ্চর্যজনকভাবে, স্থানীয় পুলিশের তরফে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে তাঁর সঙ্গে সমঝোতা করা এবং তাঁদের মতপার্থক্য মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়। মুসলিম মহিলা (বিবাহের উপর অধিকারের সংরক্ষণ) আইন, ২০১৯ বিলটি ২৫ জুলাই লোকসভায় এবং তার পাঁচ দিন পরে রাজ্যসভায় পাস হয়েছিল। বিলের (triple talaq bill) শর্তাবলী অনুসারে, লিখিতভাবে বা বৈদ্যুতিন যোগাযোগের মাধ্যমে - 'তিন তালাক'-দেওয়া অবৈধ এবং এটি বাতিল যোগ্য। এইভাবে যাঁরা তিন তালাক দেবেন তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করা হবে এবং তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন তাঁরা।
ওষুধ কিনতে স্বামীর কাছে মাত্র ৩০ টাকা চাওয়ায় মহিলাকে তালাক দেওয়ার অভিযোগ
মৃত মহিলার বাবার অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে গত ৬ অগাস্ট মুম্বইয়ে কর্মরত তাঁর স্বামী নাফিজ ফোনে তিন তালাক (triple talaq) দেয়। তারপরেই সঈদা নামের ওই মহিলাটি থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে তাঁর অভিযোগ নেওয়ার পরিবর্তে পুলিশ তাঁকে বাড়িতে ফেরৎ পাঠায় এবং মুম্বই থেকে তাঁর স্বামীর ফেরৎ আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দেয়।
মৃত মহিলার বাবা রমজান আলী খান এনডিটিভিকে বলেন, "ওঁর স্বামী ওঁকে নিয়মিত মারধর করতেন, তবে আমি এর আগে কোনও প্রতিবাদ করিনি। তবে ওঁর স্বামী ওঁকে 'তালাক' দিয়েছিলেন। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে যাওয়া হলে তাঁরা আপোষের পরামর্শ দেন"।
ওই দম্পতিকে গত সপ্তাহে পুলিশ তলব করেছিল, তবে মহিলার স্বামী নাফিজের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে পুলিশ ওঁদের দুজনকে একসঙ্গে থাকতে বলেছিল।
তিন তালাকের বিরুদ্ধে মামলা করায় মুসলিম মহিলার নাক কাটল শ্বশুরবাড়ির লোকেরা
পরের দিন নাফিজ ও সঈদার মধ্যে তালাক নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের প্রসঙ্গে তুমুল বিতর্ক হয়। সেই সময়েই সঈদার গায়ে কেরোসিন ঢেলে তাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরে ফেলে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা, এমনটাই অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সঈদার নাবালিকা মেয়ে ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিল।
পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে এই ঘটনার তদন্ত চলছে এবং নাফিজ ও তাঁর বাবাকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি বাকি অভিযুক্তদেরও গ্রেফতার করা হবে।