Independence Day: দেশ বিভাজনের সময় প্রচুর লোক প্রাণ হারিয়েছিল
নিউ দিল্লি: আজ 15 অগাস্ট, ভারতের স্বাধীনতা দিবস। সারা দেশ জুড়ে আনন্দের সাথে পালিত হচ্ছে স্বাধীনতা দিবস। কিন্তু 1947সালের 15 অগাস্ট-এর পরিবেশ এই রকম ছিল না, বহু যুগ বাদে ভারত স্বাধীনতা লাভ করতে সক্ষম হয়েছিল, একদিকে ছিল তার আনন্দ আর অপর দিকে ছিল রক্ত বন্যা, ছিল মানুষের হাহাকার। আর এই দুঃখ-দুর্দশার কারন ছিল দেশ বিভাজন।সেই সময় অগণিত মানুষ হারিয়েছে নিজেদের আত্মীয়-স্বজনকে, চোখের সামেন খুন করে দেওয়া হয়েছে তাদের পরিবারের প্রিয় লোকেদের। চারিদিক জুড়ে চলছিল খুন ও প্রতিহিংসার আগুন।বহু আকাঙ্খিত স্বাধীনতা যে এই রকম রূপ নিয়ে উপস্থিত হবে তা হয়তো কেউই আশা করতে পারেনি। দেশের বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশন, বাস স্টপে সেদিন দেখা গেছিল ঘর হীন মানুষদের বেদনা।
রাজধানী দিল্লি থেকে প্রায় 450 কিমি. দূরে অবস্থিত অমৃতসর রেলওয়ে স্টেশনের অবস্থা বোধহয় সেদিন সবচেয়ে দুঃখজনক ছিল। সেখানে ছিল শরণার্থীদের ভিড়, পাঞ্জাবের যে অংশ পাকিস্তানের অন্তর্গত সেখান থেকে আসছিল অগণিত মানুষ, আর তাদের পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল অন্য ঠিকানায়।স্বাধীনতার প্রথম দিনেই অমৃতসর রেলওয়ে স্টেশনের দৃশ্যটাই বদলে গেছিল। সেদিনের ঘটনা জানতে পারলে হয়তো আপনার ভেতর পর্যন্ত কেঁপে উঠবে।
10 ডাউন এক্সপ্রেস হয়ে গেছিল 'লাশ'-এর গাড়ি।
15 অগাস্ট 1947 (15 August), অমৃতসর স্টেশনে তিল ধরানোর জায়গা ছিল না। পাকিস্তান থেকে 10 ডাউন এক্সপ্রেস ঢোকার কথা ছিল, স্টেশন মাস্টার ছেনি সিংহ সেই ভিড় ঠেলে এগিয়ে গেছিলেন, কিন্তু কয়েক মুহূর্ত বাদে সেখানে কি ঘটতে চলেছে সেই বিষয়ে তাঁর কোনো আন্দাজ ছিল না। স্টেশনে উপস্থিত প্রতিটা মানুষের চোখ তখন খুঁজছিল আপন জনেদের। কিন্তু কি ঘটতে চলেছে, সেই বিষয়ে কাউরই কোনো রকম আন্দাজ ছিল না। ট্রেন আসতে দেখে স্টেশন মাস্টার লাল পতাকা দেখিয়ে থামার নির্দেশ দেন। ট্রেন দাঁড়ায়, কিন্তু চারজন সিপাহী ছাড়া কেউই ট্রেন থেকে নিচে নাম না, স্টেশন মাস্টার বুঝতে পারেন যে, নিশ্চই কিছু সমস্যা আছে। আসলে সেটা ছিল 'লাশ'-এর গাড়ি। বিখ্যাত ঐতিহাসিক ডোমেনিক লপিয়র সেটিকে 'ভূতের গাড়ি' বলে আখ্যা দিয়ে ছিলেন।
চারদিকে ছিল স্তূপাকার লাশ
নিজেকে সামলে নিয়ে স্টেশন মাস্টার ছেনি সিংহ এগিয়ে যান 10 ডাউন-এর কামরা গুলির দিকে।ট্রেন জুড়ে ছিল শুধু মৃত মানুষের স্তুপ। কাউর গলা কাটা ছিল, তো কাউর পেটের নাড়ি-ভুঁড়ি ছিল বাইরের দিকে। এই মৃতের স্তুপের মধ্যে ছেনি সিংহের কানে একটা চাপা কন্ঠ স্বর আসে, ''অমৃতসর এসে গেছে, এখানে সবাই হিন্দু আর শিখ, পুলিশ ও আছে, ভয়ের কিছু নেই।'' সেই মৃতের স্তুপ থেকে বেরিয়ে আসে একজন অর্ধমৃত ব্যক্তি। যে ভয়েই ''আধ মরা'' হয়ে গেছিল।