Rahul Gandhi: চিনের সঙ্গে ভারতের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির বিষয়ে স্পষ্ট চিত্র দিক সরকার, দাবি করলেন কংগ্রেস নেতা
হাইলাইটস
- ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি
- বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কারভাবে জানাক কেন্দ্র, দাবি করলেন ওই নেতা
- এদেশের পক্ষ থেকে ভারত-চিন সীমান্তে আরও বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে
নয়া দিল্লি: ভারত ও চিনের মধ্যে লাদাখ সহ সীমান্ত পরিস্থিতি (India-China Border Issue) নিয়ে ঠিক কী ধরণের উত্তেজনা ঘটছে সেবিষয়ে গোটা দেশকে স্পষ্ট করে জানাক কেন্দ্রীয় সরকার, শুক্রবার টুইট করে এমন প্রস্তাবই দিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি (Rahul Gandhi)। চলতি মাসের শুরুর দিকে লাদাখে (India-China Border) দুই দেশের সেনার মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা থেকে উত্তেজনা ছড়ায় । এরপরেই ভারত ও চিনের মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেই অনেকে মনে করছেন। চিনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান এই উত্তেজনার মধ্যেই ফের মোদি সরকারকে নিশানা করলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি। শুক্রবার তিনি "পরিষ্কার ভাবে ভারতের ক্ষেত্রে ঠিক কী ঘটছে তা বলার জন্য" কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। রাহুল গান্ধির মতে, কেন্দ্র এই ইস্যুতে নীরব থাকায় দেশের নানা স্তরে "ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা ও অনিশ্চয়তা" দেখা দিয়েছে। এমনিতেই ভারতে করোনা ভাইরাস মহামারী রূপে দেখা দিয়েছে, তার সঙ্গে লাগাতার লড়াই করেও দেশের ১.৬ লক্ষ মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। এরই মধ্যে ভারত-চিনের সীমান্ত সমস্যা নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে দেশবাসীর মধ্যে, মনে করছেন রাজীব-সনিয়া পুত্র।
ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত আমেরিকা: ডোনাল্ড ট্রাম্প
এর আগেই অবশ্য ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস লাদাখের পরিস্থিতিকে "গুরুতর জাতীয় উদ্বেগ" হিসাবে বর্ণনা করে, তার ঠিক দু'দিন পরে রাহুল গান্ধি এবার সরকারকে গোটা বিষয়টি নিয়ে স্পষ্টভাবে জানানোর আহ্বান জানালেন।
"চিনের সঙ্গে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের নীরবতা এই সঙ্কটের মধ্যে আরও ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা ও অনিশ্চয়তাকে জোরদার করছে। ভারত সরকারকে পরিস্থিতি পরিষ্কার করে জানাতে হবে এবং ভারতের ক্ষেত্রে ঠিক কী ঘটছে তা জানাতে হবে সরকারকে", শুক্রবার টুইট করেন রাহুল গান্ধি।
মঙ্গলবারও প্রায় এমন ধরণের অনুরোধ করেন রাহুল গান্ধি। ওই দিন সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে ওই কংগ্রেস নেতা বলেন যে, এই সংকটময় সময়ে কেন্দ্রের তরফ থেকে আরও "স্বচ্ছতার প্রয়োজন" আছে। তবে সেই সময় কংগ্রেস সাংসদ খুব বেশি কথা এই নিয়ে বলেননি। তখন তিনি বলেন, ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা নিয়ে কোনও মন্তব্য করার আগে বিষয়টি নিয়ে আগে ভালো করে জানতে চান তিনি।
ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা মেটাতে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাব খারিজ করল চিন
ভারত এবং চিনের মধ্যে প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা রয়েছে। ইদানিং সেই সীমান্ত এলাকাতেই দুই দেশের সেনার মধ্যে চাপানউতোর তৈরি হয়েছে। ৯ মে, একটি ভারতীয় টহলদারী দলের কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জন কর্মীর সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে চিনা সেনারা। ভারতের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, ভারত-চিন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা করে চিনের সেনাবাহিনী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে তখনই জানানো হয় যে মোটরচালিত নৌকাগুলির সাহায্যে পানগং হ্রদে ঘোরাফেরা করছে তাঁরা।
এদিকে উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে যে বেজিং লাদাখের কাছে তাদের বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ চালাচ্ছে। এমনকী বেশ কিছু চিত্রে এও দেখা গেছে যে, কয়েকটি যুদ্ধবিমানও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
India-China border: উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায়, কয়েকটি যুদ্ধবিমানও প্রস্তুত রেখেছে চিন
এদিকে ভারত-চিন সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। দিল্লির প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কার্যালয়ে ভারতীয় সেনার সিনিয়র কমান্ডারদের নিয়ে দু'দিনের বৈঠক করা হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এম এম নারাভানে। সেনা কমান্ডারদের ওই সম্মেলনে লাদাখে যেভাবে চিনা সেনা আগ্রাসন দেখিয়েছে তা নিয়েই মূলত আলোচনা হয় বলে খবর। সেইসঙ্গে ভারতের সীমান্ত-সুরক্ষা সম্পর্কিত নানা বিষয় নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চিনের সঙ্গে ভারতের পারস্পরিক অবস্থান সম্পর্কে আলোচনা করতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত।ভারতীয় সেনাবাহিনী লাদাখ সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বিভিন্ন স্থানে আরও বেশি করে সেনা মোতায়েন করার কথা ভাবা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ওই সীমান্ত এলাকায় চিন নতুন করে আরও ৫,০০০ সেনা মোতায়েন করেছে।