India-China Face Off: পূর্ব লাদাখ এলাকায় ভারত ও চিনের সেনার মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ হারান ২০ জন ভারতীয় সেনা
হাইলাইটস
- গুরুতর পরিস্থিতিতে এবার গুলি চালাতে পারবে ভারতীয় সেনা
- ভারত-চিন সংঘর্ষের পর সেনার অস্ত্র আইনে আনা হল পরিবর্তন
- লাদাখের ওই সংঘর্ষে প্রাণ দিতে হয় ২০ জন ভারতীয় জওয়ানকে
নয়া দিল্লি: ভারত-চিন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের (India-China Face Off) থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার দুই দেশের সীমান্তে থাকা লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে (এলএসি) কর্তব্যরত ভারতীয় সেনাদের জন্যে এবার অস্ত্র আইনে পরিবর্তন আনা হল। এবার থেকে সীমান্তে ''অত্যন্ত অস্বাভাবিক'' পরিস্থিতিতে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার করতে পারবেন সেনা জওয়ানরা। এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বলেন যে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবার সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ১৯৯৬ এবং ২০০৫ সালে ভারত এবং চিনের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে (Rules Of Engagement) ছিল যে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ২ কিলোমিটারের মধ্যে কোনও বিস্ফোরক বা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা যাবে না এবং দু'দেশের কোনও সেনাই অন্যকে লক্ষ্য করে গুলি চালাবে না। তবে এবার সেনাদের বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে গুলি চালানোর অনুমতি দেওয়া হল। সোমবার লাদাখ (Ladakh) সীমান্তে চিনা সেনার হাতে প্রাণ হারান ২০ জন ভারতীয় সেনা। তারপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে।
মস্কো সফরের আগে চিন সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলেন রাজনাথ সিং
পরে জানা যায়, ভারতের তরফ থেকে আরও ৭৬ জন ভারতীয় সেনা আহত হন। সেনার তরফ থেকে অবশ্য এও জানানো হয় যে, ওই ৭৬ জনের কারুর আঘাতই তেমন গুরুতর নয় এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁরা কাজে যোগ দিতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
"গালওয়ানে সেনাদের বলিদান বৃথা যাবে না", বললেন বায়ুসেনা প্রধান
এদিকে সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে যে, ক্ষতি এড়াতে পারেনি চিনও। ওই সংঘর্ষে সেদেশে হতাহত কমপক্ষে ৪৩ জন জওয়ান। যদিও চিনের সেনা সূত্র থেকে এব্যাপারে কোনও নিশ্চিত বিবৃতি মেলেনি।
গোটা ঘটনার জন্যে চিন ভারতীয় সেনাদের অসহিষ্ণু আচরণকে কাঠগড়ায় তুললেও ভারতের তরফ থেকে এই সংঘর্ষের জন্যে চিনকেই দায়ী করা হয়েছে। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, "সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে যথেষ্ট দায়িত্বশীল আচরণই করে এসেছে ভারত ৷ ওই এলাকায় যে কার্যকলাপ করা হয়েছে, তার সবটাই ভারতীয় এলাকার মধ্যে করা হয়েছে ৷ চিনের থেকেও আমরা একইরকম ব্যবহারের আশা রাখি আমরা ৷ ভারত সীমান্তে শান্তি বজায় রাখা এবং যে কোনও সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে বিশ্বাসী ৷ তবে একই সঙ্গে ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা বজায় রাখার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে"।
চার দশক পর আবার কেন রক্তাক্ত হল লাদাখ উপত্যকা? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে বসে প্রাক্তন সেনাকর্মীরা বলছেন, লালফৌজের চোখে চোখ রেখে কথা, সহ্য করতে পারেনি চিন। তাই কিছুটা পালটা দিতে এই সংঘর্ষ বাঁধিয়েছে। ৬ জুনের সামরিক স্তরের বৈঠকের পর চিন সেনার অধিগৃহীত জমি থেকে ধীরে ধীরে সরে যাওয়ার কথা ছিল। সেই কাজ খতিয়ে দেখতে শহিদ কর্নেল বিএল সন্তোষ বাবুর নেতৃত্বে এলাকা পরিদর্শনে বেরোয় ভারতীয় বাহিনী। তাঁর সঙ্গে ছিল প্রায় ১০০ জন জওয়ান। এর পরেই তাঁরা ১৫,০০০ ফুট উচ্চতায় গালোয়ান উপত্যকা এলাকা গিয়ে দেখে সেখানে দিব্যি তাঁবুতে ঘাঁটি গেড়ে বসে লালফৌজ। তাঁদের বের করে সেই তাঁবু ভাঙতে শুরু করে ভারতীয় বাহিনী। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় কিছু তাঁবুতে। এতেই বিপদ বুঝে কাঠের তক্তা, লোহার রড, কাটা তার জড়ানো বাটাম-সহ আরও বাহিনী জড়ো হয় গালোয়ান এলাকায় । শুরু হয় দু'পক্ষের হাতাহাতি ও সংঘর্ষ।