না, আরসিইপি (RCEP) অর্থাৎ আঞ্চলিকভাবে বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব নিয়ে ১৬টি দেশের মধ্যে হওয়া বৃহত্তম বাণিজ্য চুক্তিতে ভারত কোনও "শেষ মুহুর্তের দাবি" রাখছে না, এনডিটিভিকে জানাল একটি সরকারি সূত্র। জানা গেছে যে, ভারত এবং সমস্ত অংশীদারদের স্বার্থে "পারস্পরিক লাভদায়ক আরসিইপি, যাতে সমস্ত পক্ষই যুক্তিসঙ্গতভাবে লাভ করে", সেই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) দৃঢ়ভাবে নিজের অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছেন। ওই সূত্রগুলি এনডিটিভিকে জানিয়েছে," প্রথম থেকেই এই বিষয়ে আমাদের অবস্থান ধারাবাহিক ও স্পষ্ট ছিল"। ওই সাক্ষাৎকারে, বর্তমানে আসিয়ান সম্মেলনে (ASEAN) যোগ দেওয়া প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন যে ভারত "সুস্পষ্ট ভাবে নিজেদের প্রস্তাব দিয়েছে" এবং বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও করছে। তিনি ব্যাংকক পোস্টকে বলেন, "আমরা আমাদের বাণিজ্যিক অংশীদারদের কাছ থেকে পরিষেবা নিয়ে অত্যন্ত বেশি উচ্চাকাঙ্ক্ষা দেখতে চাই"।
রিজিওনাল কমপ্রিহেনসিভ ইকনোমিক পার্টনারশিপ বা আরসিইপি-এর সদস্য সংখ্যা ১৬। আসিয়ান সদস্যভুক্ত দশটি ও ব্লকের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ছয় সদস্য যথা চিন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। আরসিইপি ব্লকটি বিশ্বব্যাপী মোট দেশজ উৎপাদনের এক তৃতীয়াংশ এবং বিশ্বের প্রায় জনসংখ্যার অর্ধেক অংশ।
২০১২ সালে আসিয়ান নেতাদের সঙ্গে ও ছয় অংশীদার দেশের আরসিইপি নিয়ে আলোচনা শুরু হয় নম পেনে একবিংশতম আসিয়ান সম্মেলনে। লক্ষ্য ছিল আসিয়ান দেশ ও তাদের অংশীদারদের মধ্যে আধুনিক, উচ্চমানের এবং পারস্পরিক লাভজনক একটি বাণিজ্য চুক্তি তৈরি করা।
নতুন করে আরসিইপি চুক্তিকে কার্যকর করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেয় চিন। আমেরিকার সঙ্গে চিনের বাণিজ্য-লড়াইয়ের ফলে গত পাঁচ বছরে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে।
‘‘ভারত ও থাইল্যান্ডের সম্পর্ক কেবল সরকারের সঙ্গে সরকারের নয়'', থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী: হাইলাইটস
এই চুক্তিকে সমর্থন করেছে চিনও, তবে ভারতে বিরোধী দল কংগ্রেস এবং বিজেপির পরামর্শদাতা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে বলেছে যে এর ফলে সস্তা চিনা পণ্যে বাজার ভরে যাবে।
এই প্রসঙ্গে সোমবার, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি টুইট করেছেন:
গত সপ্তাহে, ব্যাংকক পোস্ট জানায় যে একটি "প্রধান দেশ", যা ভারতও হতে পারে, এই চুক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং আগামী বছরের আগে এই চুক্তি চূড়ান্ত নাও হতে পারে।
এশিয়ান বাণিজ্য চুক্তি RCEP হবে বিশ্বের বৃহত্তম: ৫টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
অনেকেই বলছেন এই বাণিজ্য চুক্তিতে নিজের লাভের জন্যেই চিন জোর গলায় এর সমর্থন করছে। কেননা ভারতকে এই চুক্তির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার ফলে চিনের আধিপত্য আরও বেড়ে যাবে, বিশেষত এর ফলে অনেকটাই চাপে পড়বে আমেরিকা।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আসিয়ানের প্রতি "পুরোপুরি অঙ্গীকারবদ্ধ", ওয়াশিংটনের তরফে এই বার্তা দেওয়া হলেও, ওই শীর্ষ সম্মেলনে তুলনামূলকভাবে নিম্ন-স্তরের প্রতিনিধি পাঠানোর মার্কিন পদক্ষেপকে ইঙ্গিত হিসাবেই দেখছেন অনেকে। একে আর যাই হোক চিনের পাল্টা জবাব হিসাবে ভাবা যায় না, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।