লাহোরের নওলখা বাজারে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক গুরুদ্বারকে (Gurdwara Shahidi Asthan Bhai Taru) মসজিদে রূপান্তর করার চেষ্টা চলছে, এই খবর পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ল কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রক। সোমবারই এবিষয়ে পাকিস্তান হাইকমিশনের (Pakistan High Commission) কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন,"পাকিস্তান হাইকমিশনে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। লাহোরে গুরুদ্বার শাহিদি আস্থানকে মসজিদ শাহিদ গঞ্জ দাবি করা হচ্ছে। কিছু মানুষ ওই ঐতিহাসিক গুরুদ্বারকে মসজিদে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করেছে৷ ঘটনার দিকে কড়া নজর রাখছে ভারত।" লাহোরের শহিদি আস্থান ভাই তারুজি গুরুদ্বারটি বাস্তবেই ঐতিহাসিক। ১৭৪৫ সালে ভাই তারু সিংয়ের চরম ত্যাগের কথা মাথায় রেখেই ওই গুরুদ্বারটি তৈরি হয়েছিল। অমৃতসরের বাসিন্দা ভাই তারু সিং মূলত কৃষিকাজ করতেন। সে সময় ভারতে মোগলরাজ। পঞ্জাব অঞ্চলে মোগল তহসিলদারের অত্যাচার বাড়ায় শিখদের একটি দল বিদ্রোহ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে সময় মোগলরা বহু শিখকে ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য করছিল বলেও অভিযোগ।
রাজ্যে বাড়ছে করোনা থেকে সুস্থতার সংখ্যা, গত ২৪ ঘণ্টায় রোগমুক্ত ২,১৬৬ জন
এরই প্রতিবাদে মোগলদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের দলে নাম লিখিয়েছিলেন তারু সিং। ধরাও পড়ে যান। প্রবল নির্যাতন সত্ত্বেও ধর্মান্তরিত হতে রাজি হননি তিনি। এমনকী, তাঁর চুলও কেটে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। যা শিখদের পবিত্র বস্তু বলে মনে করা হয়। ১৭৪৫ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। ভাই তারুজিকে মনে রেখেই লাহোরে তৈরি হয়েছিল শহিদি আস্থান ভাই তারুজি গুরুদ্বারটি। এখনও ভারত এবং পাকিস্তানের শিখ সম্প্রদায়ের কাছে ওই গুরুদ্বারটি অত্যন্ত পবিত্র।
"বাংলার প্রাপ্য টাকা মিটিয়ে দিন, করোনার সঙ্গে লড়তে অর্থের প্রয়োজন", মোদির কাছে আর্জি মুখ্যমন্ত্রীর
এই ঘটনায় পাকিস্তানের সংখ্যালঘু শিখ সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচারের আহ্বান জানানো হয়েছে। আকালি দলের মুখপাত্র মনজিন্দর সিং সিরসা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে "চরমপন্থীদের" বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে টুইট করেছেন।
তিনি লেখেন, "পাক উগ্রপন্থীরা এই শহিদি আস্থানকে পুরোপুরি নির্মূল করতে চায়। এই পদক্ষেপ মৌলিক মানবাধিকারের বিরোধী- কেউই কারো থেকে তাঁর নিজের ধর্ম পালন করার স্বাধীনতাকে কেড়ে নিতে পারে না@ইমরান খানপিটিআই। দয়া করে এই জাতীয় চরমপন্থী কার্যকলাপ বন্ধ করতে পদক্ষেপ নিন এবং শহিদি আস্থানকে রক্ষা করুন।"
ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, "পাকিস্তানকে ধর্মীয় অধিকার ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা সহ তাঁরা যাতে ভালোভাবে সেখানে থাকতে পারেন সেব্যাপারে তদারকি করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।"