Coronavirus Cases, India: করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে দেশে
হাইলাইটস
- করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে জোরদার লড়াই করছে গোটা ভারত
- লকডাউনের মেয়াদ ৩ মে-র পর আরও দু'সপ্তাহের জন্যে বাড়ানো হয়েছে
- দেশে এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে ভুগে মারা গেছেন ১,২১৮ জন
নয়া দিল্লি:
দেশে এখনও পর্যন্ত একদিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা (Coronavirus) আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক শনিবার সকালে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ওই মারণ রোগে (COVID-19 Cases India) আক্রান্ত হয়েছেন ২,২৯৩ জন। এর ফলে ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৩৭,৩৩৬ জন। অত্যন্ত সংক্রামক কোভিড-১৯ এর কবলে পড়ে মারা (Coronavirus Pandemic) গেছেন মোট ১,২১৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৭১ জন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে ২৫ মার্চ থেকে টানা লকডাউন জারি রয়েছে দেশে। ৩ মে সেই লকডাউনের মেয়াদ শেষের আগেই কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছে যে সেটি আরও দু'সপ্তাহ বাড়ানো হচ্ছে। তবে এই মহামারীকে রুখতে সবকিছু বন্ধ থাকার জেরে বিরাট অর্থনৈতিক ধাক্কার মুখে দেশ। সেই কারণেই লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়ানো হলেও কিছু কিছু কর্মক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধ মেনে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক "সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি আছে" এমন এলাকাগুলোকে "রেড জোন" হিসাবে চিহ্নিত করেছে। সেখানে লকডাউনের কড়া বিধিনিষেধ জারি থাকবে, কিন্তু যে জায়গাগুলোতে নতুন করে সংক্রমণ ছড়ায়নি অর্থাৎ "গ্রিন জোন", সেখানে লকডাউনের বিধিনিষেধ অনেক শিথিল করা হবে ৪ মে থেকে। "অরেঞ্জ জোন"-ও অনেকগুলো ক্ষেত্রেই ছাড় পাবে বলে জানিয়েছে সরকার।
Here are top 10 developments on coronavirus cases in India:
অর্থনৈতিকভাবে ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলি, যেমন - দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই এবং আমেদাবাদকে চিহ্নিত করা হয়েছে রেড জোন হিসাবে; ফলে ওই শহরগুলি পরবর্তী দুই সপ্তাহেও কঠোর লকডাউনের মধ্যেই থাকবে। পাশাপাশি দেশ জুড়ে বন্ধ থাকবে বিমান, রেল, মেট্রো এবং সড়ক পরিবহণ। এমনকী আন্তঃরাষ্ট্রীয় চলাচলও সারা দেশে নিষিদ্ধ থাকবে এই সময়। বন্ধ থাকবে দেশের সমস্ত স্কুল, কলেজ, হোটেল, রেস্তোঁরা; সিনেমা, মল, শপিং সেন্টার, জিম এবং স্পোর্টস কমপ্লেক্স। কোনও রকম কোনও সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় জমায়েত করা যাবে না।
অপরিহার্য নয় এমন সমস্ত কাজের জন্যে যেকোনও ব্যক্তির গতিবিধি প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের বাণিজ্যিক ও বেসরকারি অফিসগুলি ফের কাজ শুরু করতে পারে বটে, তবে তাদের কাজ চালাতে হবে ৩৩ শতাংশ কর্মী দিয়েই। প্রয়োজনে বাকি কর্মীরা বাড়ি থেকে কাজ করতে পারে।
এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যা শনিবার সকালে বেড়ে ২৬.৬৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, অর্থাৎ এখনও পর্যন্ত দেশে মোট সুস্থ হয়েছেন ৯,৯৫১ জন।
মহামারী আটকাতে দেশব্যাপী যে লকডাউন জারি রয়েছে তার জেরে বিভিন্ন রাজ্যে আটকে রয়েছেন বহু পরিযায়ী শ্রমিক, শিক্ষার্থী, তীর্থযাত্রী বা পর্যটক। এবার তাঁদের নিজেদের রাজ্যে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যে বিশেষ ট্রেন চালানোর ঘোষণা করেছে সরকার। ভারতীয় রেল জানিয়েছে, "এই বিশেষ ট্রেনগুলি শুধুমাত্র বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়ে থাকা মানুষজনদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্যেই চালানো হবে এবং যাত্রীদের স্ক্রিনিংয়ের পরে তাঁরা করোনা নেগেটিভ হলে তবেই তাঁদের ওই ট্রেনে করে ফেরানো হবে। ট্রেনগুলিতে শারীরিক দূরত্ব যাতে বজায় থাকে সেই কারণে যথাযথ ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে।
কোভিড-১৯ যোদ্ধাদের ধন্যবাদ জানাতে রবিবার দেশের হাসপাতালগুলির উপরে আকাশপথে ফুলের পাপড়ি বর্ষণ করবে সেনাবাহিনী। আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে জাহাজগুলিকেও। চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মী ও অন্যান্য করোনা-যোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাতেই এমন করা হবে বলে শুক্রবার সন্ধ্যায় জানান চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তিন সেনাপ্রধানও। দেশব্যাপী লকডাউন দু'সপ্তাহের জন্য বাড়ানো হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই ঘোষণা করার ঠিক আগেই এই ঘোষণাটি করেন বিপিন রাওয়াত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবারই জানান করোনা যোদ্ধাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে দেশের সশস্ত্র বাহিনী পাপড়ি ছড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে স্বাগত জানাচ্ছেন তিনি। একাধিক টুইটের মাধ্যমে তিনি বলেন যে, এই রকম সাহসী যোদ্ধাদের জন্য়েই ভারত কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে জোরদার লড়াই করতে পারছে। "তারা সত্যিই দর্শনীয়। ভারত ওই করোনা যোদ্ধাদের এবং তাঁদের পরিবারের লড়াইয়ের তারিফ করছে", বলেন তিনি।
এদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের এলাকার শ্রেণিবিন্যাস পরিচালনার মানদণ্ডে বড়সড় পরিবর্তন এনেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারা এখন বলেছে যে ২১ দিনের মধ্যে যদি কোনও এলাকায় নতুন করে কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত না হন তবে সেই জেলাকে "গ্রিন জোন" বা ভাইরাস-মুক্ত এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করা যাবে। এর আগের নিয়ম অনুযায়ী ছিল যে ২৮ দিনের মধ্যে কেউ করোনায় আক্রান্ত না হলে সেই এলাকাকে সংক্রমণমুক্ত এলাকা বলা যাবে।
ভারত জুড়ে করোনা ভাইরাসের হটস্পট বা "রেড জোন" এর সংখ্যা ক্রমশই কমছে। সরকার জানাচ্ছে যে গত ১৫ দিনের মধ্যে প্রায় ২৩ শতাংশ কমেছে দেশের অতি সংক্রমিত এলাকাগুলো। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৫ এপ্রিল যেখানে অতি সংক্রমিত এলাকাগুলোর সংখ্যা ছিল ১৭০ সেখানে ৩০ এপ্রিল তা কমে এসে দাঁড়িয়েছে ১৩০ এ। যদিও একেবারে সংক্রমণ নেই এমন এলাকা অর্থাৎ "গ্রিন জোন"-এর সংখ্যাও কমে গেছে। আগে যেখানে দেশে "গ্রিন জোন" ছিল ৩৫৬ টি, এখন সেটি কমে গিয়ে হয়েছে ৩১৯ টি। কিন্তু "রেড জোন" কমার ফলে এটাই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, দেশে এবার ধীরে ধীরে করোনা ভাইরাসের তীব্রতা হ্রাস পাচ্ছে।
শুক্রবার মহারাষ্ট্রে একদিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। নতুন করে সেরাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১,০০৮ জন। রাজ্যের মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১১,৫০০ পেরিয়ে গেছে, যার মধ্যে ৪৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গোটা বিশ্বে এখনও পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ লক্ষেরও বেশি মানুষ, তার মধ্যে প্রায় ২.৩ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন করোনার কারণে। কোভিড- ১৯ গত বছরের ডিসেম্বরে চিনের উহান শহর থেকে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে এবং গত পাঁচ মাসে ১৮০ টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ওই মারণ ভাইরাস।
Post a comment