জিও ইন্সটিটিউটের যোগ্যতা নিয়ে টুইটারে বহু মানুষ প্রশ্ন করেন প্রকাশ জাভরেকরকে
নিউ দিল্লি: রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জিও ইন্সিটিটিউটকে নিয়ে বিতর্কের যেন শেষ নেই। তা শুরু হওয়ার আগেই গোটা দেশজুড়েই বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়ল। এখনও পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব কেবল কাগজকলমেই সীমাবদ্ধ। তা সত্ত্বেও এই প্রতিষ্ঠানটিকে সরকারের তরফ থেকে ‘ইনস্টিটিউট অব এমিনেন্স’-এর শিরোপা দিয়ে দেওয়াতেই এই বিতর্কের সূত্রপাত। গতকাল দুটো আইআইটি, ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এবং আরও দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই এই শিরোপা ওঠে জিও’র কপালে। ‘এমিনেন্স’ শিরোপা পেয়ে যাওয়ার পর সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে কাজ করার অবাধ স্বাধীনতাও পেয়ে গেল এই নতুন ইন্সটিটিউটটি।
- দিল্লি ও মুম্বাইয়ের আইআইটি, ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এবং জিও ইন্সটিটিউট ছাড়া এই তালিকায় রয়েছে বিআইটিএস পিলানি এবং মণিপাল অ্যাকাডেমিও।
- সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নতুন ইন্সটিটিউটের খবর ট্রেন্ড করার সময় সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল, এই পরিকল্পিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয়েছে ‘গ্রিনফিল্ড’ বিভাগে।
- মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের কাছে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত 11’টি প্রস্তাব জমা পড়েছিল। কিন্তু প্যানেলের বিশেষজ্ঞরা ভূমির লভ্যতা, উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন অভিজ্ঞ কোর টিম, তহবিল এবং স্পষ্ট পরিকল্পনা- এই চার ক্ষেত্রে বাকিদের তুলনায় জিও অনেক এগিয়ে থাকায় এই প্রতিষ্ঠানটিকেই বেছে নিয়েছেন।
- যদিও, আজ কেন্দ্রীয় শিক্ষাসচিব আর সুব্রহ্মনিয়ম বলেন, জিও ইন্স্টিটিউটকে এখনও নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে। “এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি আগামী তিন বছরের মধ্যে উন্নত মানের ক্যাম্পাস, ভালো কর্মদক্ষতা সহ অন্যান্য যোগ্যতাগুলি পূরণ করতে পারে, তবেই এটিকে ইন্সটিটিউট অব এমিনেন্স-এর শিরোপায় ভূষিত করা হবে। এখনও পর্যন্ত তারা তা করতে পারেনি। ওদের হাতে কেবল চিঠিটিই রয়েছে”, বলেন তিনি।
- উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই ইন্সটিটিউট অব এমিনেন্সের জন্য মোট 1000 কোটি টাকার সরকারি অনুদান দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
- উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বক্তব্য অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট প্যানেলটি 20’টি প্রতিষ্ঠানকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে থেকেই বেছে নেওয়া হয়েছে এই ইন্সটিটিউট অব এমিনেন্স প্রতিষ্ঠানগুলিকে।
- গ্রিনফিল্ড প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে তিনি বলেন, “এই প্রতিষ্ঠানগুলি এখনও নিজেদের যাত্রা শুরু না করলেও, অচিরেই বিশ্বের কাছে গোটা দেশের মুখ উজ্জ্বল করে তুলতে পারবে বলে আমাদের বিশ্বাস”।
- যদিও সরকারের এই সিদ্ধান্ত গোটা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবলভাবে সমালোচিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকরকে ট্যাগ করে অনকেই প্রশ্ন করেছেন এই প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতা নিয়ে। “জিও ইন্সটিটিউটের নিজস্ব ভবন আছে? ওয়েবসাইট আছে? ক’জন পড়ুয়া গ্র্যাজুয়েট হয়েছে এই প্রতিষ্ঠান থেকে?” টুইট করে প্রশ্ন করেন সুধীর যাদব। “যে প্রতিষ্ঠান এখনও শুরুই হয়নি, তাকে এমিনেন্ট ইন্সটিটিউট হিসাবে ঘোষণা করে 1000 কোটি টাকা অনুদান দিয়ে দেওয়া হল? এর থেকে অপ্রীতিকর ও নির্লজ্জ সিদ্ধান্ত আর কিছু হতেই পারে না”।
- গ্রিনফিল্ড বিতর্ক সম্বন্ধে বলতে গিলে ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ টুইট করেন, “যে সকল সরকারপন্থীরা মন্তব্য করেছেন যে, জিও ইন্সটিটিউটকে ‘গ্রিনফিল্ড’ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের আমি বলতে চাই, চেন্নাইয়ের বাইরে একটি গ্রিনফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনার দায়িত্বে আছেন রঘুরাম রাজন। যাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে আম্বানিদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সম্পর্ক ব্যাস্তানুপাতিক। তা, তাঁকে কেন দায়িত্ব দেওয়া গেল না?”
- “সরকারি কাগজপত্রের মূল্য ঠিক কতটা, তার সবথেকে বড়ো প্রমাণ হল এই জিও ইন্সটিটিউট”, বলেন শুভজিৎ নামের এক টুইটার ব্যবহারকারী।