লর্ডসে ঘুরপাক জামা মানে দাদাগিরি। ২২ গজ থেকে সরে ২২ ইঞ্চি-র ছোটপর্দায় তুখোড় সঞ্চালনাও তো একরকমের দাদাগিরি-ই! আর এরকম দাদাগিরি দেখাতে পারেন একজনই। তিনি ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক, বাংলার সাত থেকে সাতানব্বইয়ের ‘দাদা', কলকাতার ‘মহারাজ' সৌরভ গাঙ্গুলি (Sourav Ganguly)। টানা ১০ বছর ধরে সাতটি সিজন 'পুরো হিট' দাদার সঞ্চালনায়। ৩ অগাস্ট থেকে জি বাংলায় (Zee Bangla) প্রতিবারের মতোই শনি আর রবিবার রাত সাড়ে ন-টায় শুরু হয়েছে 'দাদাগিরি' (Dadagiri) সিজন আট। প্রতি সিজনেরই একটি বিশেষ লক্ষ্য বা ট্যাগলাইন থাকে। সৌরভ গাঙ্গুলির কথায়, এবারের 'দাদাগিরি' বদলে দেবে আগামী প্রতিটি দিন। তাই এবারের সিজনের ট্যাগলাইন 'দিন বদলের পালা'। মানুষ কীভাবে তার নিজের কাজ দিয়ে বদলে দিতে পারে নিজের এবং সবার জীবন, সেটাই দেখাবে এবারের 'দাদাগিরি'। এবং সেই কৃতিত্ব দাদা ভাগ করে নিলেন 'দাদাগিরি' টিম এবং শো-য়ের পরিচালক আরেক 'দাদা' শুভঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের (Shuvankar Chatterjee) সঙ্গে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, যিনি ক্যামেরার পেছনে, পর্দার নেপথ্যে থেকে প্রতি সফল শো পরিচালনা করে আরেক ধরনের 'দাদাগিরি' দেখান।
'পুরুষরা আরও পুরুষালি হালকা, ট্রেন্ডি গয়নায়': সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
আপাতত মাত্র দু-টি এপিসোড হয়েছে। তাতেই জমে গেছে শো। দাদার কথায়, টানা ছ-মাস ধরে চলবে এই শো। সেখানে কত রকমের মানুষকে দেখা যাবে। কত দূর থেকে মানুষ আসেন এই শো-এ অংশ নিয়ে নিজেদের নানা ইচ্ছেপূরণ করতে। এবারে দুটি নতুন বিভাগ থাকছে খেলায়। 'ক্যাপ্টেন স্কোয়্যাড' আর 'দুসরা'। মহারাজের জবানিতে, ক্রিকেটের মাঠে দুসরা খুব শক্ত হলেও দাদাগিরি-র মঞ্চে 'দুসরা' তুলনায় সহজ। 'গুগলি'র থেকে। অংশগ্রহণকারীদের কথা ভেবেই এই পরিবর্তন। তবে দাদার প্রথম পছন্দ 'গুগলি'।
একই সঙ্গে দাদা-র দাবি, 'শো-এর মধ্যে মজার উপকরণ প্রচুর। তার মধ্যে সেরা মজা, অংশগ্রহণকারীদের শো-এ অংশ নেওয়া। সাধারণত, কাছের-দূরের সমস্ত মানুষকে নিজেদের প্রতিভা দেখানোর এই সুযোগ সহজে কেউই হাতছাড়া করেন না। তার থেকেও মজার ব্যাপার, যাঁরা এই মঞ্চ একবার ছুঁয়ে যান তাঁরা এতটাই জনপ্রিয় হয়ে যান যে, গ্রামে বা পাড়ায় ফিরে রীতিমতো দাদাগিরি দেখান। এই সূত্রে মনে পড়ছে একজন শিক্ষকের কথা। গতবারের সিজনে এসেছিলেন খেলতে। একবার কলেজে পড়ানোর সময় তিনি একটি বিখ্যাত জায়গার অবস্থান ভুল বলেছিলেন। তাই নিয়ে তাঁকে ভীষণ খ্যাপাত কলেজের ছাত্ররা। তিনি দাদাগিরিতে এসে শো জিতে নাকি কলেজে গিয়ে ছাত্রদের ঠাট্টার ছলে হুমকি দিয়েছিলেন, আর একটাও কথা বলবি না। আমি কিন্তু দাদাগিরি-তে সব প্রশ্নের ঠিক উত্তর দিয়ে জিতে ফিরেছি।'
তবে দিন বদলের পাশাপাশি একটি মহারণ-এর সাক্ষী হতে চলেছে বাংলার ছোটপর্দা। দুই বাঙালির অলিখিত দ্বন্দ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছে একই তারিখ এবং একই সময় থেকে। জি বাংলার দাদাগিরি-র সময়েই স্টার জলসায় দেখানো হচ্ছে ডান্স জুনিয়ার। যার সঞ্চালনায় মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তী। যিনি মুম্বই গিয়ে একসময় তাঁর দাদাগিরি দেখিয়েছেন। বাঙালি দু-জনকেই খুব ভালোবাসে। কিন্তু, দুই চ্যানেলের এই টক্কর কি ভাগ করবে দর্শকদের? নাকি, একসঙ্গে বাংলার দুই গর্বকে ভালোবাসায় টানবে অদৃশ্য সীমারেখা? সেটা অবশ্য সময়-ই বলবে।