সিবিআইয়ের একটি দল কংগ্রেস সাংসদ পি চিদাম্বরমের দক্ষিণ দিল্লির জোরবাগের বাড়ি তল্লাশি করে।
নয়াদিল্লি: প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করার কোনও সুযোগ পেলেন পি চিদাম্বরমের (P Chidambaram) আইনজীবী। অযোধ্যা মামলা শেষ হতেই এদিন এজলাস থেকে বেরিয়ে যান রঞ্জন গগৈ। আজ পিটিশন তালিকাভুক্ত করার সুযোগ নেই। অপেক্ষা সেই শুক্রবার পর্যন্ত। এদিনে প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করেছে ইডি। INX Media মামলাতে হাইকোর্টও চিদাম্বরমের গ্রেফতারি রদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। ফলে যেকোনও সময় গ্রেফতারির মুখোমুখি হতে পারেন দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। এদিন সুপ্রিম কোর্টে CBI বলে, “আর্থিক কেলেঙ্কারির ক্ষেত্রে এটি একটি অসামান্য দিক”। বিষয়টি প্রধানবিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবেদনে, সুপ্রিম কোর্টে, চিদাম্বরম আর্জি জানান, অন্তর্বর্তী জামিনের জন্য তাঁর আবেদনটির দ্রুত শুনানি করা হোক, পাশাপাশি তিনি বলেন, তাঁর করা আবেদনটি যুক্তিগ্রাহ্য কারণ এবং “বিচারব্যবস্থা থেকে পালিয়ে” যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই তাঁর।
গ্রেফতার হতে পারেন প্রাক্তনমন্ত্রী পি চিদম্বরম, সরগরম রাজনৈতিক মহল
মঙ্গলবারই দিল্লি হাইকোর্টে গ্রেফতারি (P Chidambaram arrest) এড়াতে পি চিদাম্বরমের করা আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। আদালতের বিচারপতি সুনীল গৌর বলেন, এই মামলার মূল ষড়যন্ত্রকারী হলেন পি চিদাম্বরমই, তাই তাঁর আগাম জামিনের আবেদন নাকচ করে দেওয়া হল । "মামলার প্রধান বিষয়গুলি প্রমাণ করে যে আবেদনকারী (চিদাম্বরম), এই মামলার মূল ষড়যন্ত্রকারী," বলেন বিচারপতি গৌর।
INX Media কে বিদেশী বিনিয়োগের সরকারি ছাড়পত্র দেওয়ার অভিযোগ চিদাম্বরমের বিরুদ্ধে
এটিকে কৌশলী অর্থ পাচারের একটি মামলা হিসাবে অভিহিত করে বিচারপতি সুনীল গৌর বলেন: "এটা যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে যে এই ধরণের বড় মাপের অর্থনৈতিক অপরাধ চূড়ান্তভাবে পরিকল্পনা করেই করা হয়েছে। এই মামলায় আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করা হলে সমাজের কাছে একটি ভুল বার্তা যাবে । "
আদালাতের এই আদেশের অল্প সময়ের মধ্যেই, তদন্ত সংস্থা সিবিআইয়ের ৬ জনের একটি দল দক্ষিণ দিল্লির জোড় বাগে মিঃ চিদাম্বরমের বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু সেখানে গিয়েও নাগাল মেলেনি চিদাম্বরমের। এর কয়েক ঘন্টা পরে, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেক্টেরও একটি দল সেখানে উপস্থিত হয়।
এরপরেই সিবিআইয়ের তরফ থেকে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর বাড়ির সামনে সিবিআই এই মর্মে নোটিস দেয় যে: "দেখা যাচ্ছে যে আপনি (চিদাম্বরম) নিম্নে উল্লিখিত মামলার ঘটনা এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত আছেন, যা আমি (সিবিআই) এখন ফৌজদারি কার্যবিধির ১২ নম্বর অধ্যায়ের অধীনে তদন্ত করছি, আপনাকে নোটিস দেওয়া হচ্ছে যে মামলার তদন্তের স্বার্থে এটি প্রাপ্তির দুই ঘণ্টার মধ্যে আমার (সিবিআই) সামনে উপস্থিত হতে হবে"।
"কোন্ আইনের অধীনে?":সিবিআইয়ের ২ ঘণ্টার নোটিসে প্রশ্ন চিদাম্বরমের আইনজীবীর
সকালে বিচারপতি রমনের এজলাসে চিদাম্বরমের মামলা ওঠে। তাঁর তরফে সিব্বাল জানান, আইন মেনে চলাফেরা করেন চিদাম্বরম। পালিয়ে যাওয়ার কোনও অভিপ্রায় নেই। তাই গ্রেফতারি এড়াতে আবেদন গ্রহণ করা হোক। কিন্তু মামলার শুনানির দিনক্ষণ নির্ধারণের জন্য কপিল সিব্বলদের প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠান তিনি। অযোধ্যা মামলা নিয়ে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ব্যস্ত থাকায় পিটিশন নথিভুক্ত করার সুযোগ পাননি কপিল সিব্বলরা। পরে তা হলেও ত্রটিপূর্ণ রয়ে যায়।
দ্বিতীয়বারের জন্য বিচারপতি এন ভি রমনের কাছে দ্বারস্থ হলে কপিল সিব্বলকে বিচারপতি জানান, তাঁদের আবেদনে ত্রুটি রয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে পিটিশন নথিভুক্ত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালান বর্ষীয়য়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি বলেন, ত্রুটি শুধরে নেওয়া হয়েছে। পিটিশন নথিভুক্ত করা হোক। এরপর রেজিস্ট্রির আধিকারিককে তলব করেন বিচারপতি রমন। লাঞ্চের আগেই ত্রুটি শুধরে নেওয়া হয়েছে। রেজিস্ট্রির তরফে জানানো হয়।
দ্রুত শুনানির আবেদন করেন সিব্বল। জবাবে বিচারপতি রমন বলেন, পিটিশন তালিকাভুক্ত করার ক্ষমতা তাঁর নেই। একমাত্র প্রধান বিচারপতিরই ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু অযোধ্যা মামলা নিয়ে শুনানিতে ব্যস্ত থাকেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের সাংবিধানিক বেঞ্চ। শুনানির শেষে বিকেল ৪ টের সময় প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানানোর জন্য ছুটে যান কপিল সিব্বলরা।
কিন্তু লাভ হয়নি। অযোধ্যা মামলার শুনানির পরই এজলাস ছেড়ে চলে যান রঞ্জন গগৈ। ফলে অপেক্ষা শুক্রবার পর্যন্ত।