ইরফান খানের অকালপ্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলিউডও।
অভিনেতা ইরফান খানের (Irrfan Khan) অকালপ্রয়াণে (Irrfan Khan's Death) শোকস্তব্ধ গোটা চলচ্চিত্র জগৎ। শোকগ্রস্ত টলিউডও। মুম্বই ফিল্মি দুনিয়ার অন্যতম শক্তিশালী এই অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ একটুর জন্য না হওয়ার স্মৃতিচারণের মাধ্যমে অনেকেই স্মরণ করছেন প্রয়াত অভিনেতাকে। ৫৩ বছরের ইরফান মুম্বইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। শেষ সময়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্ত্রী সুতপা ও দুই পুত্র বাবিল ও অয়ন। বলিউড, হলিউড দাপিয়ে বেড়ানো ইরফান কিন্তু একটিই মাত্র বাংলা ছবি করেছিলেন। তার নাম ‘ডুব'। খ্যাতিমান পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত ১৯৮৯ সালে তাঁর ছবি ‘বাঘ বাহাদুর'-এ নিতে চেয়েছিলেন ইরফানকে। পরে ২০১৩ সালে ‘আনোয়ার কা আজব কিসসা'-তেও ইরফানের কথা ভাবেন তিনি। দু'জনের মধ্যে এই নিয়ে কথাবার্তা চললেও শেষ পর্যন্ত ইরফানের আর কাজ করা হয়নি ছবি দু'টিতে।
জীবনযুদ্ধ শেষ, ৫৩ বছর বয়সেই চলে গেলেন ইরফান খান
সেকথা জানাতে গিয়ে আফশোস ঝরে পড়ল বর্ষীয়ান পরিচালকের কণ্ঠস্বরে, ‘‘এটা নিয়ে আমার চিরকাল আফশোস থেকে যাবে যে আমি ওঁকে আমার একটিও ছবিতে নিতে পারিনি। ‘বাঘ বাহাদুর' ছবির জন্য মুম্বইয়ে তাঁর অডিশন নিয়েছিলাম। কিন্তু সেই রোলটা শেষ পর্যন্ত অন্য একজন করে। যখনই দেখা হত, আমরা এটা নিয়েই আলোচনা করেছি যে কবে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারব।'' বুদ্ধদেবের মতে সমসাময়িক ভারতীয় ছবির অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ইরফান খান। সব সময়ই অন্য ধরনের চরিত্রের জন্য মুখিয়ে থাকতেন তিনি।
ইরফানের প্রয়ানের দিনে তাঁর মনে পড়ছে দু'বছর আগে মুম্বইয়ে অভিনেতার বাড়িতে তাঁর সঙ্গে দেখা করার কথা। সেটাই ছিল তাঁর সঙ্গে ইরফানের শেষ সাক্ষাৎ।
চলে গেলেন ইরফান খান, একঝলকে অভিনেতার দীর্ঘ কেরিয়ার
ইরফান খানের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিলেন পরিচালক গৌতম ঘোষও। কিন্তু কমলকুমার মজুমদারের গল্প থেকে তিনি ছবি করার সময় আর্থিক সমস্যার কারণে ইরফানের পক্ষে সেই ছবিতে কাজ করা সম্ভব হয়নি।
গৌতম জানাচ্ছেন, ‘‘উনি একজন আন্তর্জাতিক মানের অভিনেতা। তিনি খুবই স্বতঃস্ফূর্ত অভিনেতা ছিলেন। ওঁর সেন্স অফ হিউমারও চমৎকার ছিল।''
ইরফানের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিলেন পরিচালক অপর্ণা সেনও। কিন্তু সেই সময়ই ইরফানের মস্তিষ্কে টিউমারের অপারেশন হওয়ায় কাজটা আর করা হয়ে ওঠেনি। তিনি বলেন, ‘লাঞ্চবক্স', ‘মকবুল'-এর মতো ছবিতে ইরফানের অভিনয় তিনি চিরকাল মনে রাখবেন।
‘‘উনি আমার ‘হেমলক সোসাইটি' পছন্দ করেছিলেন। কথা হয়েছিল একদিন একসঙ্গে কাজ করার।'' জানাচ্ছেন পরিচালক সৃজিৎ মুখোপাধ্যায়।
‘ডুব' ছবিতে ইরফানের সঙ্গে অভিনয় করার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে পার্নো মিত্র বলেন, ‘‘উনি ক্রিকেট খেলতে ভালবাসতেন। উনিই ব্যাট করতেন এবং আমাদের ফিল্ডিং করতে বলতেন। এমন একজন মানুষ ছিলেন, যাঁকে আমি শ্রদ্ধা করতাম। এমন অভিনেতা ছিলেন যাঁর কাজের দিকে তাকিয়ে থাকতমা এবং সহ-অভিনেতা হিসেবে ওঁর সঙ্গে কাজ করে আনন্দ পেয়েছিলাম।''