আলোচনাই হল সংসদীয় গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র, বলেন কংগ্রেস নেতা Adhir Ranjan Chowdhury
নয়াদিল্লি: সোমবার শুরু হল সংসদের শীতকালীন অধিবেশন (Winter Session)। এই অধিবেশন শুরুর আগে, কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভায় (Lok Sabha) তাঁদের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury) বলেন যে, জনগণের বিষয়ে আলোচনার সময় বিতর্ক হতেই পারে, কিন্তু সংসদের অধিবেশন মসৃণভাবে পরিচালনা করা সরকারের দায়িত্ব। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় অধীর চৌধুরী বলেন, আলোচনাই সংসদীয় গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র। "বিরোধী দলগুলি তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে, উপযুক্ত পদ্ধতির মাধ্যমে যাতে তাঁরা তাঁদের মতামত জানাতে পারে তা দেখা এবং সংসদ মসৃণভাবে পরিচালনা করার বিষয়ে সরকার দায়বদ্ধ। এটি সংসদীয় গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র"। তিনি বলেন, "আমরা প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের কাছ থেকেও প্রত্যাশা রাখি যে তাঁরা যাতে সাধারণ মানুষের স্বার্থ সম্পর্কিত সমস্ত বিষয়কে অবশ্যই সংসদের অভ্যন্তরে আলোচনা করার জন্যে অনুমতি দেয়। সংসদ আলোচনার, বিতর্ক ও কথোপকথনের জন্যেই রয়েছে।"
তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এও অভিযোগ করেছেন যে, কেউ সরকারের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলেই তাঁকে "শহরের নকশাল" হিসাবে প্রমাণ করার চেষ্টায় উঠেপড়ে লাগে।
সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে "খোলামেলা উচ্চমানের বিতর্ক"-এর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এটি। নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল সহ প্রায় ৫০ টি বিল সংসদে উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এই বিলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হিন্দু, জৈন, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ এবং পার্সিদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আলোচনার জন্য উঠতে পারে হেলথ কেয়ার সার্ভিস পার্সোনেল এবং ক্লিনিকাল এস্টাব্লিশমেন্টস বিল, যার লক্ষ্য চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের হিংসা থেকে রক্ষা করা। অধিবেশনের প্রথম দিন সংসদে গ্রহণ করা হবে চিট ফান্ড(সংশোধন) বিল, ২০১৯ ও। যে বিলের লক্ষ্য হল চিট ফান্ডের বিষয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার এবং গ্রাহকদের সুরক্ষা এবং শিল্পকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ওই বিলটি স্ক্রুটিনির জন্য একটি স্থায়ী কমিটির কাছে রয়েছে এবং এটি সংসদে পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
শীতকালীন অধিবেশন শুরুর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লির সংসদ চত্বরে সাংবাদিকদের সামনে নিজের বক্তব্য পেশ করেন। তিনি বলেন, "আমরা সকল বিষয়ে আলোচনার জন্য উন্মুক্ত রাখছি অধিবেশন। ভালোভাবে আলোচনা হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। বিতর্ক ও আলাপ আলোচনাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেককেই সক্রিয় হতে হবে। আলোচনাকে সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে নিজেদের অবদান রাখতে হবে”।
“দ্বিতীয় কক্ষ, গৌণ নয়”, রাজ্যসভায় বাজপেয়ির মন্তব্য তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিনে তিনি প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গেই সাক্ষাৎ করেছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে সব রাজনৈতিক দল ও সাংসদের অবদানের কারণে যেভাবে সংসদের গত অধিবেশনটি "অভূতপূর্ব" ছিল, এই অধিবেশনটিও ফলপ্রসূ হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, "পূর্ববর্তী অধিবেশনে, যে অভূতপূর্ব সাফল্য পাওয়া গেছে, তা কেবলমাত্র ট্রেজারি বেঞ্চের কারণেই নয়, বরং সব দলের সাংসদরাই ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছেন, সেই কারণেই অধিবেশন সাফল্যমণ্ডিত হয়েছিল"।
তিনি সকলকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, "এটি ২০১৯ সালের শেষ সংসদ অধিবেশন। এই অধিবেশন আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি রাজ্যসভার আড়াইশতম সংসদ অধিবেশন। এই অধিবেশন চলাকালীনই, দেশ ২৬ জানুয়ারি সংবিধান দিবস বা প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করব, এই বছরেই আমাদের সংবিধানের ৭০ বছর পূর্ণ হবে"।