জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার কংগ্রেস ত্যাগকে স্বাগত জানালেন যশোধরা রাজে
হাইলাইটস
- জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার কংগ্রেস ত্যাগকে স্বাগত জানালেন তাঁর পিসি
- বলেছেন আসলে এটা হল, ' ঘর ওয়াপসি'
- "সবশেষে প্রত্যেকেরই আত্মসম্মান আছে ," বলেছেন তিনি
নয়াদিল্লি: প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার(Jyotiraditya Scindia) কংগ্রেস ত্যাগকে স্বাগত জানালেন তাঁর পিসি, মধ্যপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক যশোধরা রাজে(Yashodhara Raje Scindia)। জাতীয় স্বার্থে জ্যোতিরাদিত্যর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। আরও বলেছেন আসলে এটা হল, ' ঘর ওয়াপসি।'
তিনি জানিয়েছেন যে তাঁর মা রাজমাতা,' বিজয়া রাজে সিন্ধিয়ার,' জনসংঘ এবং বিজেপির প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। আরও বলেছেন যে তাঁর দলের জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া(Jyotiraditya Scindia) এবং তাঁর বাবা কংগ্রেসের ন বারের বিধায়ক মাধবরাও সিন্ধিয়ার- প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধা রয়েছে।
"আসলে ঘর ওয়াপসি। যেভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ তাকে স্বাগত জানিয়েছেন তাতে বোঝাই যাচ্ছে রাজমাতা বিজয় রাজে সিন্ধিয়ার প্রতি তাঁদের কতটা শ্রদ্ধা রয়েছে," জানিয়েছেন তিনি।
"সবশেষে প্রত্যেকেরই আত্মসম্মান আছে ।" বলেছেন তিনি। যেভাবে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে যথার্থ যোগদান থাকা সত্ত্বেও ২০১৮ সালে মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে মতানৈক্য শুরু হয় এবং মনে করা হচ্ছে তার জেরেই তিনি ইস্তফা দিয়েছেন,সেই প্রসঙ্গেই এ কথা বলেছেন তিনি।
"আপনাদের সবার মনে আছে মাধবরাও সিন্ধিয়া যখন গোয়ালিয়ার থেকে লড়েছিলেন, সেইসময় বিজেপি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রার্থী দেয়নি। তাঁদের প্রতি আমাদের একই সম্মান আছে। জাতীয় স্বার্থেই এই পদক্ষেপ।" যোগ করেছেন তিনি। "এটি আসলে বিশ্বস্ততা যা রাজনৈতিক কাঁটা তার অতিক্রম করে ।" বলেছেন তিনি।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, গান্ধি পরিবারের অন্যতম কাছের ছিলেন। শতাব্দীপ্রাচীন কংগ্রেস দলের তরুণ তুর্কিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। বেশ জনপ্রিয় নেতা ছিলেন তিনি। বাবা যখন বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান তখন বিদেশে পড়াশোনা করছিলেন জ্যোতিরাদিত্য।
মাত্র ৩০ বছর বয়সে ফিরে এসে রাজনীতিতে যোগদান করেছিলেন তিনি। এক বছর পরেই পারিবারিক গড় বলে পরিচিত গুনা লোকসভা উপনির্বাচনে জয়ী হন তিনি।
২০০৪ এ ওই আসনটি ধরে রাখেন তিনি। তার তিন বছর পরে ইউপিএ ১ - প্রধানমন্ত্রী ছিলেন যখন মনমোহন সিং, সেই সময় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী হন তিনি। এরপর পরপর তিনবার জিতে ২০০৯ সালে আবার সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। তারপরই শিল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রী হন জ্যোতিরাদিত্য।
২০১২ তে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী হন তিনি। টানা চারবার সংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। ২০১৯ এ বিজেপির কৃষ্ণ পাল সিং এর কাছে নিজের আসনটি হারাতে হয় তাঁকে।
আদতে মরাঠি সিন্ধিয়ারা, স্বাধীনতার আগে মধ্য ভারতের গোয়ালিয়র শাসন করতেন। যদিও রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তির কারণে পরে তাঁরা আলাদা হয়ে যান।
জ্যোতিরাদিত্যর ২ পিসি বসুন্ধরা রাজে এবং যশোধা রাজে দুজনেই রয়েছেন বিজেপিতে। বসুন্ধরার মা রাজমাতা বিজয় রাজে সিন্ধিয়া বিজেপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে একজন। বসুন্ধরা রাজে ছেলে দুষ্মন্ত, বিজেপির একজন আইনপ্রণেতা।
বাবার ৭৫ তম মৃত্যুবার্ষিকীর দিন এই নাটকীয় পরিস্থিতির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করার পরে কংগ্রেস ত্যাগ করেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। সূত্র মারফত খবর পাওয়া যাচ্ছে সন্ধে ৬ টায় বিজেপিতে যোগদান করবেন তিনি। এবং দলের পক্ষ থেকে তাঁকে রাজ্যসভার জন্য মনোনীত করা হবে।
৪ বারের সাংসদ জ্যোতিরাদিত্যর এই পদক্ষেপ ১৫ মাসের কমলনাথ সরকারকে সংকটে ফেলে দিয়েছে কারণ আমার সঙ্গে কংগ্রেসের আরও কুড়ি জন বিধায়ক ইস্তফা দিয়েছেন।
তাঁর দলত্যাগের পরেই দল বিরোধী কাজ করার অভিযোগে জ্যোতিরাদিত্যকে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
২৩০ আসন বিশিষ্ট মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় ১১৬ হল ম্যাজিক ফিগার। তার থেকে মাত্র চারজন বেশি বিধায়ক নিয়ে এই মুহূর্তে কমল নাথের কাছে রয়েছে ১২০ জন বিধায়কের সমর্থন। অন্যদিকে বিজেপির রয়েছে ১০৭ জন বিধায়ক। ইস্তফাপত্র যদি গৃহীত হয় বিধায়কদের সেক্ষেত্রে বিজেপির কাছে আরও সহজ হয়ে যাবে সরকার গঠনের দাবি জানানোর।