This Article is From Sep 20, 2019

‘‘শার্ট ছিঁড়েছে, চুল ধরে টেনেছে’’: যাদবপুরের নিগ্রহ প্রসঙ্গে বাবুল সুপ্রিয়

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যায়য়ে গেলে বাবুল সুপ্রিয়কে (Babul Supriyo) হেনস্তার অভিযোগ ওঠে পড়ুয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে। ঘটনায় তৈরি হয় রাজনৈতিক তরজা

‘‘শার্ট ছিঁড়েছে, চুল ধরে টেনেছে’’: যাদবপুরের নিগ্রহ প্রসঙ্গে বাবুল সুপ্রিয়

বেরোনোর সময় তাঁকে হেনস্তার অভিযোগ তোলেন বাবুল সুপ্রিয়.

কলকাতা:

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থীপরিষদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) গেলে, কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে (Babul Supriyo) হেনস্তার অভিযোগ ওঠে পড়ুয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয়মন্ত্রীকে বাইরে বের করে নিয়ে আসেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে ছুটে যান তিনি। ঘটনাকে কেন্দ্র তৈরি করে বঙ্গ রাজনীতিতে তৈরি হয় বিতর্ক। ঘটনাকে “রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং এবং আইনী পদ্ধতির আচরণে ওপর খুবই গুরুতর প্রতিফলন” বলে মন্তব্য করেন রাজ্যপাল। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বলে, “সরকারকে না জানিয়েই” বা রাজ্য প্রশাসনকে পরিস্থিতির মোকাবিলার সুযোগ না দিয়েই যাদবপুরে “তথাকথিত উদ্ধারকার্যে” গিয়েছিলেন রাজ্যপাল।

যাদবপুরে প্রবল বিক্ষোভের সামনে বাবুল সুপ্রিয়, উঠল ‘‘গো ব্যাক'' ধ্বনি

বাবুল সুপ্রিয়কে ক্যাম্পাসে, কালো পতাকা দেখানো এবং স্লোগান দেন সিপিআইএমের স্টুডেন্ট ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার সদস্যরা...বেরোনোর সময় তাঁকে হেনস্তা করারও অভিযোগ ওঠেছে। সংবাদসংস্থা পিটিআই তাঁকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, “আমি এখানে রাজনীতি করতে আসিনি। তবে যেভাবে আমায় হেনস্তা করা হয়েছে, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পড়ুয়ার আচরণে আমি মর্মাহত। তারা আমার চুল ধরে টানে এবং ধাক্কা দেয়”। তিনি আরও বলেন, পড়ুয়ারা তাঁকে “খোলাখুলিভাবে তাঁদের মাওবাদী” বলার জন্য প্ররোচনা দেয়। তাঁকে বেরোতে না দিয়ে গাড়ি আটকে দেয় বলেও অভিযোগ তুলেছেন বাবুল সুপ্রিয়।

রাজীব কুমারের সন্ধানে বাড়ি, পাঁচতারা হোটেলে তল্লাশি সিবিআইয়ের

একটি বিবৃতিতে রাজভবনের তরফে বলা হয়েছে, “ঘটনাকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন রাজ্যপাল, যেহেতু একজন কেন্দ্রীয়মন্ত্রীকে বেআইনিভাবে আটকে রাখা হয়েছে এবং এটি আইনশৃ্ঙ্খলা এবং আইনি সংস্থার আচরণের গুরুতর প্রতিফলন”। তাঁর “রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি”র কঠোর বিরোধিতা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “টিএমসিপি বা পুলিশ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। এটা পুরোপুরিভাবেই বিজেপি, এবং বামপন্থী ছাত্র সংগঠন বনাম বিজেপি নেতার ঘটনা”।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারকে না জানিয়েই সেখানে গিয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে অপেক্ষা করছিল পুলিশ, উপচার্যের থেকে কোনও যোগাযোগ না করা পর্যন্ত সেখানে যেতে পারেনি তারা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মাননীয় রাজ্যপাল সরকারকে না জানিয়েই সেখানে গিয়েছিলেন। তাঁর পথে, তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন...সমস্যাটি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের জন্য তাঁর থেকে সময় চেয়ে অনুরোধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে সরকারকে না জানিয়েই, বিজেপিকে সাহায্য করতে সেখানে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে যাওয়ার আগে, তিনি দুটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন, যেখানে বলা হয়েছে, আমি জানাচ্ছি, “এটি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর খুব গুরুতর প্রতিফলন”।

এখনই বীরভূম কয়লা ব্লক উদ্বোধন করবেন না, প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ সাংসদের

এর আগে অমিত শাহের সভার সময়, বিদ্যাসাগর কলেজের বাইরে সংঘর্ষের ঘটনাও তুলে ধরেব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এই ধরণের সন্ত্রাসের ঘটনা এবং সমস্যা তৈরি করার নিন্দা করার আমাদের কোনও ভাষা নেই”। সেবারও, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আইনশৃ্ঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার অভিযোগ উঠেছিল—অভিযোগ উড়িয়ে দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার।

বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে হেনস্তা এবং কালো পতাকা দেখানোর অভিযোগ ওঠে। ঘটনাস্থলে গিয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে বের করে নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।  সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, প্রতিবাদরত পড়ুয়ারা বাবুল সুপ্রিয়র গাড়ি আটকে রাখেন। অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। প্রাথমিকভাবে তাঁকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। “বাবুল সুপ্রিয় গোব্যাক” স্লোগান দিতে থাকেন সিপিএম এবং বামেদের ছাত্র সংগঠন স্টুডেন্ট ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া এবং আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সদস্যরা।

আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্ট ইউনিয়নের দেবরাজ দেবনাথও যোগ দেন প্রতিবাদে, তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হবে না “ফ্যাসিবাদী শক্তিদের”। বিকেল ৫টা নাগাদ বেরনোর সময় আবারও প্রতিবাদের মুখে পড়েন বাবুল সুপ্রিয়। পিটিআইয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস, তবে তাঁরা  মূল ফটক থেকে সরতে অস্বীকার করেন। “পদপিষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতির” সমালোচনা করে তিনি ট্যুইটে লেখেন, “তারা যা করার চেষ্টা করতে পারত, আমায় প্ররোচিত করতে পারেনি। বিরোধীদের ভূমিকা গণতন্ত্রকে জীবিত রাখা, শাসকদলের মতোই তাদের গুরুত্ব, এবং মতভেদও ধৈর্যের সঙ্গে শোনা প্রয়োজন”।

রাজ্যপাল বিষয়টিকে “খুবই গুরুতরভাবে” দেখছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর প্রেস সচিব।

রাজভবনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই ঘটনাকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন রাজ্যপাল, যেহেতু বিষয়টি একজন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বেআইনিভাবে আটকে রাখার ঘটনা, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং আইনিসংস্থার আচরণের গুরুতর প্রতিফলন”।

.