উপাচার্য নাজমা আখতারের সামনে তাদের দাবি জানায় পড়ুয়ারা।
নয়াদিল্লি: জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া (Jamia Milia Islamia) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে উপাচার্যের (Jamia Vice Chancellor) অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। তাদের দাবি, উপাচার্য নাজমা আখতার গত মাসের হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করুন। এদিন উপাচার্যকে দেখা যায় পড়ুয়াদের জনসমুদ্রের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকতে। প্রতিবাদী পড়ুয়াদের ‘‘এফআইআর, এফআইআর'' ধ্বনির উত্তরে তিনি সকলকে জানান, অভিযোগ দায়ের করার পদক্ষেপ করা হয়েছে। পাশাপাশি পড়ুয়াদের আরও দাবি, পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার। এই দাবিতেও উপাচার্য সম্মত হয়েছেন। তিনি পড়ুয়াদের জানান, পড়ুয়াদের একজন প্রতিনিধিকে ডিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরীক্ষার নতুন তারিখ ঠিক করতে।
পড়ুয়ারা তাদের নিরাপত্তার দাবিও করে। এর উত্তরে উপাচার্য জানান, সে ব্যাপারেও পদক্ষেপ করা হয়েছে। নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা দ্বিগুণ করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা আইএএনএস সূত্রে জানা যাচ্ছে, উপাচার্য পড়ুয়াদের বলেন, ‘‘আমরা আমাদের তরফে সম্ভাব্য সমস্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি। নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা দ্বিগুণ করা হয়েছে।''
চেঁচামেচি সত্ত্বেও উপাচার্যদের সঙ্গে পড়ুয়াদের কথোপকথন মোটের উপর শান্তিপূর্ণই ছিল। অনেকেই তাদের দাবি নিয়ে চিৎকার করতে থাকলেও কিছু পড়ুয়া শান্তিপূর্ণ ভাবে আলোচনা চালিয়ে যায়।
গত ১৫ ডিসেম্বর জামিয়া মিলিয়া চত্বরে পুলিশের সঙ্গে পড়ুয়াদের সংঘর্ষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকে মারধরের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। ওইদিন পড়ুয়ারা শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে। পরে পুলিশ এলে তাদের সঙ্গে পড়ুয়াদের সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে পড়ুয়া ও পুলিশ আধিকারিকদের মধ্যে ৬০ জন আহত হন। বহু গাড়ি, বেসরকারি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
দু'দিন পরে দিল্লি পুলিশ ১০ জনকে গ্রেফতার করে। তবে পুলিশ জানিয়েছিল, আটক ব্যক্তিরা কেউ পড়ুয়া নয়, তারা ‘সমাজবিরোধী'। পুলিশের অভিযোগ, সেদিনের হিংসা এই সমাজবিরোধীরাই ছড়িয়েছে।
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধেও। বহু ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে বিভিন্ন স্থানে রক্তের দাগ!
জামিয়া মিলিয়ার উপাচার্য জানিয়েছেন, এই সংঘর্ষে পুলিশের ভূমিকায় তিনি আহত। যেভাবে পড়ুয়াদের সঙ্গে আচরণ করেছে পুলিশ, তাতে তিনি ব্যথিত বলে জানান উপাচার্য।
(তথ্যসূত্র: পিটিআই ও আইএএনএস)