শাদাব জানান, দিল্লি পুলিশ যতটা দোষী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং প্রশাসনও ঠিক ততখানিই দায়ী
হাইলাইটস
- "পড়ুয়াদের কাছে জবাবদিহির দায় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের,” বলেন আহত পড়ুয়া শাদাব
- কাঁধে আঘাত পেয়েছেন মাস কমিউনিকেশনের পড়ুয়া শাদাব ফারুক।
- দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র এই বন্দুকবাজের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে
নয়াদিল্লি: তিন দিন আগে সশস্ত্র কিশোরের গুলিতে আহত হওয়া জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jamia Millia Islamia University) ছাত্র বিস্ফোরক দাবি করেছেন পুরো ঘটনা পরম্পরা বিষয়ে। তার কথায়, এমন ঘটনাটি ঘটতে দেওয়ার জন্য দিল্লি পুলিশ যতটা দোষী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও ঠিক ততখানিই দায়ী। “তারা যদি আগের ঘটনাগুলিতে পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত তবে এ ঘটনা ঘটত না। তবে কেবল জামিয়া বা জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, বর্তমানে এই কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই এই যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে। পড়ুয়াদের কাছে জবাবদিহির দায় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের,” বলেন আহত পড়ুয়া শাদাব ফারুক (Shadab Farooq)।
“ইয়ে লো আজাদি (এই নে স্বাধীনতা)" বলতে বলতে দিল্লির জামিয়া নগরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদকারী পড়ুয়াদের উপর গুলি চালায় নাবালক এক বন্দুকবাজ। বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় কাঁধে আঘাত পেয়েছেন মাস কমিউনিকেশনের পড়ুয়া শাদাব ফারুক।
এইমস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাদাব ফারুক দাবি করেছেন, সেদিন বিকেলে বিক্ষোভে যোগ দিতে যাওয়ার সময় আক্রমণকারীকে প্রথমে একটি পিস্তল নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছিল। “আমি যখন দেখলাম আমার কয়েকজন বন্ধু সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে তখন আমি তাকে শান্ত করার জন্য সঙ্গে সঙ্গে তার দিকে ছুটে যাই। লোকজন পুলিশকে বারেবারে বলে বন্দুকবাজকে থামাতে। আমরা ক্রমাগত চিৎকার করি যে ছেলেটির হাতে পিস্তল রয়েছে কিন্তু পুলিশ শোনেনি। পরিবর্তে তারা ভিডিওটি রেকর্ডিং করতে থাকেন। আমি তাকে দু'বার বন্দুক নামাতে বলেছিলাম। তৃতীয়বার বলার পরে সে আমার বাঁ হাতে গুলি করে,” বলেন শাদাব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া শাদাব বলেন এমন গুলি চালানোর ঘটনা ‘উগ্র-জাতীয়তাবাদের ফল' তবে তিনি যা করেছেন তা মোটেও বীরত্ব দেখাতে নয়। শাদাব জানান, “আমার যা সঠিক মনে হয়েছে তাই করেছি এবং আপনারাও যা সঠিক তার পাশেই দাঁড়ানো উচিত। যদি প্রশাসন এখনও এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নেয় এবং শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয় তবে আগামীকাল ওখানে আরও একজন শাদাব দাঁড়িয়ে থাকবে আর পুলিশ পদক্ষেপ করার পরিবর্তে পকেটে হাত রেখে ভিডিও রেকর্ড করেবে।”
পুলিশ জানিয়েছে যে উত্তরপ্রদেশের জেওয়ারের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র হিসাবে চিহ্নিত ১৭ বছর বয়সী এই বন্দুকবাজের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। শনিবার শুরুর দিকে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ও ক্যাম্পাসে কোনও প্রকার প্রতিবাদমূলক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
গত ডিসেম্বর থেকেই এই দেশ নানা বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছে। কেন্দ্র সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করেছে যাতে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে অমুসলিম অভিবাসীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন এই আইন দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার পরিপন্থী এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির পাশাপাশি এই আইনটি প্রয়োগ করা হলে দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য মোটেও সুখবর হবেনা।